কাসগঞ্জকে ঘিরে পাকিস্তান-বিতর্ক

আজ মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে নৈরাজ্যের কোনও স্থান নেই। প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিতে তাঁর সরকার দৃঢপ্রতিজ্ঞ। হিংসায় যাঁরা প্ররোচনা জুগিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

লখনউ

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:৫৯
Share:

গুজব আর হিংসার পাশাপাশি কাসগঞ্জ ঘিরে এখন মাথা চাড়া দিচ্ছে যড়যন্ত্রের অভিযোগ আর পাকিস্তান নিয়ে বিবৃতির তরজা।

Advertisement

রাজ্যপাল রাম নাইক কাসগঞ্জের ঘটনাকে ‘কলঙ্ক’ আখ্যা দেওয়ার পরে আজ মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। জানিয়েছেন, তাঁর রাজ্যে নৈরাজ্যের কোনও স্থান নেই। প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিতে তাঁর সরকার দৃঢপ্রতিজ্ঞ। হিংসায় যাঁরা প্ররোচনা জুগিয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপেরও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কাসগঞ্জের এসপিকে ইতিমধ্যেই মেরঠে বদলি করা হয়েছে। হচ্ছে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত। গোটা ঘটনার রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে কেন্দ্র।

তবে প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনে ফেলেছে বলে দাবি করলেও হিংসা থামেনি। গত কাল রাতেও ইন্দিরা মার্কেট এলাকায় একটি দোকান লুঠপাট করে পুড়িয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। আলিগড়ের আইজিপি সঞ্জীব গুপ্তের কথায়, উন্মত্ত জনতার হামলার বদলে দুষ্কৃতীরা এখন চোরাগোপ্তা আক্রমণ করছে ‘গেরিলা কায়দায়’। অশান্তির আঁচ ছড়াচ্ছে মুখে-মুখে, সোশ্যাল নেটওয়ার্কেও।

Advertisement

প্রজাতন্ত্র দিবসে কাসগঞ্জে তেরঙ্গা নিয়ে মোটরবাইক মিছিল করেছিল এবিভিপি। সে দিনের হাঙ্গামার দু’দিন পরে বরেলীর জেলাশাসক রাঘবেন্দ্রবিক্রম সিংহ গত রবিবার এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন, ‘‘মুসলিম মহল্লাগুলিতে গিয়ে তেরঙ্গা নিয়ে মিছিল করা ও পাকিস্তান মুর্দাবাদ স্লোগান দেওয়ার একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখা যাচ্ছে আজকাল। প্রশ্ন হল, এরা কি পাকিস্তানি? বরেলীতেও এমনটা হয়েছিল।’’ অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ১৯৯৪ সালে কর্নাটকেও এমনটা করেছিল বিজিপি শিবির।

এর পরই পাল্টা আসরে নেমে পড়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গিরিরাজ সিংহ, বিতর্কত মন্তব্য করার জন্য খ্যাত বিনয় কাটিয়ারের মতো নেতারা। জেলাশাসক রাঘবেন্দ্রবিক্রমের পোস্টের সমালোচনা করে গিরিরাজের বক্তব্য, ‘‘কাসগঞ্জে নিহতের নাম চন্দন গুপ্ত না হয়ে যদি মহম্মদ ইসমাইল হত, তা হলেই সংবাদমাধ্যম বিষয়টি অন্য ভাবে দেখাত। এই মনোভাব আমাদের বদলাতে হবে।’’ মন্ত্রীর ওই মন্তব্যের পরে রাঘবেন্দ্রবিক্রম তাঁর ফেসবুক পোস্টটি মুছে দেন। গিরিরাজের দাবি, ‘‘ষড়যন্ত্র রয়েছে কাসগঞ্জের ঘটনার পিছনে। কেন বলব না পাকিস্তান মুর্দাবাদ? ওরা আমাদের সেনাদের মারছে। ও-পার থেকে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে।’’ কাটিয়ারের অভিযোগ, ‘‘পাকিস্তানের সমর্থকরাই এই হিংসার মূলে। ওরাই মেরেছে চন্দন গুপ্তকে।’’

এই চাপানউতোরের মধ্যে ছড়াচ্ছে গুজবও। অশান্তির সময়ে কাশগঞ্জ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে এক গ্রামে ছিলেন সাংবাদিক রাহুল উপাধ্যায়। কাল তিনি জানতে পারেন, লোকে বলছে, তিনি খুন হয়েছেন। রাহুল এর পর থানায় গিয়ে প্রমাণ করে এসেছেন, তিনি মরেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement