করতারপুর কূটনীতি!
আপাতত এই বাক্যবন্ধটির সগর্ব উল্লেখ হচ্ছে ইসলামাবাদে। পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি তো সেখানকার পার্লামেন্টে সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘সংঘর্ষ থেকে ভারতকে শান্তির পথে নিয়ে আসার প্রশ্নে পুরোপুরি সাফল্য পাওয়া গিয়েছে।’
সূত্রের খবর, মুম্বই হামলার দশম বর্ষপূর্তিতে সন্ত্রাস নিয়ে সার্বিক চিত্রনাট্যটিই অনেকটা বদলে দিতে চেয়েছে ইমরান খানের সরকার। পরিস্থিতি এমনই যে ভারতের পক্ষেও শিখ পুণ্যার্থীদের আবেগের তালে তাল মেলানো ছাড়া উপায় থাকছে না।
দশ বছর আগে ২৮ নভেম্বরেও মুম্বই জ্বলছিল পাকিস্তানের পাঠানো জঙ্গিদের নাশকতায়। আর চলতি বছরের ওই একই দিনে অর্থাৎ বুধবার ভারতের দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী থাকবেন ওই সন্ত্রাসের নাটের গুরু রাষ্ট্রের মাটিতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে! সে দেশের নেতৃত্বের হাত ধরে উদ্বোধন করবেন করতারপুর করিডরের!
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, ২৬/১১-কে কেন্দ্র করে ২০১৯ সালের ভোটের আগে গোটা দেশে জাতীয়বাদের জিগির তোলার একটি পরিকল্পনা ছিল বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের। সে চেষ্টা যে চলছে না তা-ও নয়। কিন্তু পাকিস্তানের করতারপুর কূটনীতিতে যে সেই চেষ্টা কিছুটা হলেও চাপা পড়ে গিয়েছে তা ঘরোয়া ভাবে স্বীকার করছে সরকার। বিদেশ মন্ত্রকের একাংশের দাবি, অনেক হিসেব করে করতারপুরকে নিয়ে শান্তির চিত্রনাট্য তৈরি করেছে পাকিস্তান। ২৬/১১ বার্ষিকীতে যে ভারত পাকিস্তানের জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে আক্রমণাত্মক হবে, তা আঁচ করেছিল পাকিস্তান। তাই নভেম্বর মাসে শান্তির ছবি তৈরি করতে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে ইমরান সরকার।
প্রাক্তন কূটনীতিক রণেন সেনের মতে, ‘‘আসলে একটি ধারণা বা পারসেপশন তৈরি করাটাই বড় কথা। মুম্বই হামলায় পাক ভূমিকার দিকটি গৌণ হয়ে এখন সর্বত্র জায়গা পাচ্ছে করতারপুরের ছবিটা।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘আস্থাবর্ধক পদক্ষেপে সাড়া না দিয়ে ভারতের উপায় নেই।’’