কর্নাটকে বিধানসভা নির্বাচন আসন্ন। বেঙ্গালুরুতে রোড-শো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। শনিবার। পিটিআই
কর্নাটকের প্রচারসভায় কংগ্রেসের দেওয়া অস্ত্রেই কংগ্রেসকে বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁকে বিষাক্ত সাপের সঙ্গে তুলনা করে মল্লিকার্জুন খড়্গের মন্তব্যের পর মোদী আজ কুকথার একটি তালিকা হাজির করে কংগ্রেসকেই পাল্টা নিশানা করেছেন। কর্নাটকের ভোটের আর দশদিন বাকি। ফলে আজ একাধিক প্রচারসভা এবং বর্ণময় পথযাত্রার মাধ্যমে ভোটের হাওয়া তুলে দিয়েছেন মোদী। পাশাপাশি, দলিত, জনজাতি তাস খেলতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
ঘটনাচক্রে আগামিকাল মোদীর ‘মন কি বাত’-এর একশোতম সম্প্রচার হতে চলেছে। সেটিকে ভোটের বাজারে মেগা ইভেন্ট-এ পরিণত করছে বিজেপি। আর এর আগের দিনই কর্নাটকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কংগ্রেস তাঁকে ‘৯১ বার’ গালি দিয়েছে। মোদীর কটাক্ষ, কংগ্রেস যদি কুকথার অভিধান তৈরিতে মন না দিয়ে সুশাসনের কথা ভাবত কিংবা দলের কর্মীদের মনোবল বাড়াতে নজর দিত, তাহলে আজ তাদের এমন খারাপ অবস্থা হত না। প্রধানমন্ত্রীর কথায়, কংগ্রেস অন্যদের গালি দিয়ে সময় নষ্ট করুক। তবে তিনি চব্বিশ ঘণ্টা মানুষের সেবা করে যাবেন। মানুষের আশীর্বাদে সব গালি ধুলো হয়ে যাবে।
মোদী আজ বলেন, “যাঁরা গরিব এবং দেশের জন্য কাজ করেন, তাঁদের অপমান করাটা কংগ্রেসের ঐতিহ্যের মধ্যে পড়ে। আমিই একমাত্র ব্যক্তি নই যে দেশের এ ভাবে আক্রান্ত হচ্ছি। আপনাদের মনে থাকবে তাদের ‘চৌকিদার চোর’ স্লোগান। পরে বলেছিল, মোদী চোর। তারপর বলেছিল, অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণি চোরে ভরে গিয়েছে। এখন প্রচারের শুরুতে তারাই বলছে, লিঙ্গায়েত ভাই ও বোনেরা চোর। এতই সাহস এদের। কংগ্রেসিদের কান খুলে শুনতে বলছি। যখনই কাউকে গালি দিচ্ছ, অপমান করছো, মনে রাখবে এমন শাস্তি পাবে যে সোজা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না। এবার ভোটের মাধ্যমে তোমাদের গালিগালাজের জবাব দেওয়া হবে।”
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, কংগ্রেসের কুকথার হাত থেকে রেহাই পাননি বি আর আম্বেডকর ও সাভারকর। বিদর জেলার হুমনাহবাদের সভায় মোদীর অভিযোগ, আম্বেডকরকে রাক্ষস, রাষ্ট্রদ্রোহী বলতে ছাড়েনি কর্নাটকের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘কংগ্রেস যতই গালি দেবে, কর্নাটকে ততই পদ্ম ফুটবে।’’ আর ‘হাত’ শিবিরের এমন আচরণের যোগ্য জবাব রাজ্যের মানুষ দেবেন বলেও দাবি করেন মোদী।
কর্নাটকের এবারের বিধানসভা নির্বাচনে লিঙ্গায়েত ভোট গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় বিজেপি। সেই ভোট নিশ্চিত করতেও চেষ্টার খামতি রাখেননি মোদী। লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়কে কংগ্রেস রাজনৈতিক স্বার্থে অপব্যবহার করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন। দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে এসেছে দুর্নীতির প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, যখনই কেন্দ্রের সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে কড়া হচ্ছে, তখনই বাধা দিচ্ছে কংগ্রেস। যাঁরা দেশের মানুষের কথা বলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে, তাঁদের কংগ্রেস ঘৃণা করে বলে দাবি প্রধানমন্ত্রীর। কৃষি ঋণ মকুব নিয়ে কংগ্রেসের প্রতিশ্রুতিরও নিন্দা করেছেন মোদী। আজ প্রচারে ডবল ইঞ্জিন সরকারের হয়েও সওয়াল করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মতে, ডবল ইঞ্জিন প্রতিষ্ঠিত হলেই উন্নয়ন সম্ভব। সভায় প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও হাজির ছিলেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। ২২৪ আসন বিশিষ্ট কর্নাটক বিধানসভায় নির্বাচন আগামী ১০ মে। ভোটগণনা ১৩ মে।