হাজির: রাজ্যপালের কাছে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী বি এস ইয়েদুরাপ্পা। বেঙ্গালুরুতে মঙ্গলবার। ছবি: পিটিআই
দিনভর নতুন নতুন মোড়। রাতেও যবনিকা পড়ল না কর্নাটকি নাটকে।
সকাল থেকে দুপুর— টানা এগিয়ে থেকে সরকার গড়ার আশায় তখন উচ্ছ্বসিত গেরুয়া শিবির। কিন্তু দুপুরের পর থেকে বদলে গেল ছবি। বিজেপি একক বৃহত্তম দল হলেও মাত্র ৮ আসনের জন্য তাদের হাতের গদি প্রায় ফস্কে গেল! আর কংগ্রেসে-জেডিএস জোট বাঁধার অঙ্কে কর্নাটকের ভাগ্য ঝুলে রইল ত্রিশঙ্কুতেই।
সকালে যে কংগ্রেস হার মেনে বসেছিল, দুপুরে তাকেই ঘুরিয়ে দাঁড় করিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী। তিনি এখন অনেক বেশি আক্রমণাত্মক, কৌশলীও। গত কালই তিনি অশোক গহলৌত, গুলাম নবি আজাদকে বেঙ্গালুরু পাঠিয়েছিলেন। আজ দুপুরে নিজের বাড়িতে সনিয়া-প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে কথা বলে বার্তা পাঠান গহলৌত-আজ়াদকে, দেবগৌড়ার সঙ্গে কথা বলতে হবে। সনিয়াও উদ্যোগী হলেন। দেবগৌড়ার ছেলে কুমারস্বামীকে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার প্রস্তাব দিল কংগ্রেস। মায়াবতীও জোটসঙ্গী দেবগৌড়াকে ওই প্রস্তাব মানতে বলেন। দু’পক্ষের জোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা এল। কুমারস্বামী এটাই চাইছিলেন। ‘কিং-মেকার’ নয়, নিজে ‘কিং’ হতে। তিনি ওই প্রস্তাব লুফে নিলেন। এখন কংগ্রেসের লক্ষ্য স্পিকার পদটি পাওয়া।
আরও পড়ুন:
ভাবাচ্ছেন মোদীর ঘনিষ্ঠ ভাজুভাই
বন্ধ হল বাজনা, উধাও লাড্ডুও
বিজেপি সকাল থেকে অতি-আত্মবিশ্বাসে ফুটছিল। কিন্তু নাটকের মোড় ঘুরে যেতেই তারা নড়ে বসল। ততক্ষণে কংগ্রেসের সমর্থনে জেডিএস কর্নাটকে সরকার গড়ার দাবিপত্র নিয়ে রাজ্যপাল ভাজুভাই ভালার কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। যে কংগ্রেসের জন্য এক সময় দেবগৌড়া প্রধানমন্ত্রী পদে এক বছরও পূর্ণ করতে পারেননি, সেই দলের রাহুল যে এমন কাণ্ড বাধাবেন, ভাবতেই পারেননি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহরা।
তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন অমিত। স্থির হয়, ইয়েদুরাপ্পাকে পাঠানো হবে রাজ্যপালের কাছে। কংগ্রেসের অভিযোগ, রাজ্যপাল তাদের প্রথমে সময়ই দেননি। কংগ্রেস বলছে, ইয়েদুরাপ্পার কাছে সংখ্যা নেই। তারা ফের ‘অপারেশন পদ্ম’ করবে। কংগ্রেস ও জেডিএসকে ভাঙার চেষ্টা করবে। আমরা পাল্টা বিজেপির ঘর ভাঙাতে পারি, এখন বলছে কংগ্রেস।
বল এখন রাজ্যপাল ভাজুভাইয়ের কোর্টে। সেই ভাজুভাই, যিনি এক সময় মোদীকে নিজের জেতা আসন ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার মধ্যে রাতে মোদী বলেন, কর্নাটকে বিজেপির ‘অপ্রত্যাশিত’, ‘অভূতপূর্ব’ জয় হয়েছে। বিজেপি কোনও ভাবে পিছু হটবে না। অমিত বলেন, কংগ্রেসের উৎফুল্ল হওয়ার কারণ নেই। কংগ্রেস বলছে, ‘‘এটি বকলমে রাজ্যপালকে বার্তা। আমাদের সরকার গড়ার জন্য না ডাকলে আদালতে যাব।’’