টাকার থলি বনাম রিসর্টের আমন্ত্রণ 

কর্নাটকে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হতেই  তলে তলে বিধায়ক কেনাবেচার খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৮ ০৩:৩৩
Share:

মুখোমুখি: সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন কুমারস্বামী। ছবি: পিটিআই।

এর ঘরে উঁকি, তার ঘরে হানা— কুড়িয়ে বাড়িয়ে যদি জোগাড় করা যায় অন্তত এক জন বিধায়কও। কুর্সি দখলের লড়াইয়ে অনেকটা এগিয়ে যাওয়া যাবে।

Advertisement

কর্নাটকে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা হতেই তলে তলে বিধায়ক কেনাবেচার খেলা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ।

কাপ ও ঠোঁটের দূরত্ব ঘোচাতে গত কালই মাঠে নেমে পড়ে অমিত শাহের দলবল। লক্ষ্য, সরকার গঠন। গোয়া-মণিপুরের অভিজ্ঞতা নিংড়ে নিয়ে পাতা হচ্ছে কংগ্রেস ও জেডিএস-এর বিধায়ক ধরার ফাঁদ। জেডিএস নেতা কুমারস্বামীর দাবি, বিজেপি টাকার থলি তাঁদের বিধায়কদের পিছনে ছুটছে। বিধায়ক-পিছু দাম উঠেছে নাকি একশো কোটিতে।

Advertisement

বিপদ আঁচ করে কংগ্রেস এখন বিধায়কদের রিসর্টে ঢুকিয়ে পাহারা বসাতে পারলে বাঁচে। সূত্রের খবর, আজ দলীয় বৈঠকের পরেই কংগ্রেস বিধায়কদের সদলবলে নিয়ে যাওয়ার কথা ইগলটন রিসর্টে। যার মালিক আবার সদ্য কংগ্রেসের টিকিটে জিতে আসা বিধায়ক ডি কে শিবকুমার। ইতিমধ্যেই রিসর্টে বিধায়কদের জন্য একশোটি কামরা আলাদা করে খালি রাখা হয়েছে।

বিতর্কিত সেই টুইট

কিন্তু সমস্যা অন্যত্র। ওই বিধায়কের বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকি দেওয়ার বিস্তর অভিযোগ রয়েছে। বিজেপির প্রধান নিশানা তাই তিনিই। কংগ্রেসের ভয়, আয়কর দফতরের জুজুতে দল ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারেন শিবকুমার। তা হলে অন্তত জনা দশেক বিধায়ক তাঁর সঙ্গে দল ছাড়তে পারেন বলে আশঙ্কা। বিজেপির চোরাগোপ্তা আক্রমণ থেকে ঘর বাঁচাতে তৈরি জেডিএসও। কর্নাটকের অন্য আর একটি রিসর্টে ক’দিনের জন্য ঠাঁই নিতে চলেছেন কুমারস্বামীর বিধায়কেরা।

গোটা দক্ষিণ ভারতেই ক্ষমতা দখলের লড়াইতে রিসর্ট-রাজনীতি নতুন নয়। এর পথিকৃৎ ছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এন টি রাম রাও। ১৯৮৪ সালে আস্থা ভোটের আগে নিজের বিধায়কদের নিয়ে রিসর্টে গা-ঢাকা দিয়েছিলেন তিনি। সম্প্রতি তামিলনাড়ুতে জয়ললিতার মৃত্যুর পর পলানীস্বামীর বাড়া ভাতে ছাই দিতেও দলের ১৬ বিধায়ককে পুদুচেরির রিসর্টে লুকিয়ে রেখেছিলেন টিটিভি দিনকরণ। আর গত বছর গুজরাতে কংগ্রেসের অহমেদ পটেলের জয় নিশ্চিত করতে কর্নাটকেরই রিসোর্টাভাসে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল কংগ্রেস বিধায়কদের।

মওকা বুঝে ব্যবসা বাড়াতে কালই মাঠে নেমে পড়ে কেরল পর্যটন। তারা রীতিমতো টুইট করে বলে, ‘‘কর্নাটকের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের শেষে আমরা সমস্ত বিধায়ককে অবসর বিনোদনের জন্য ঈশ্বরের আপন দেশে (কেরল) নিরাপদ ও সুন্দর রিসর্টে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।’’ পরে মুছে দেওয়া হলেও ওইটুকু সময়ের মধ্যেই টুইটটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম সেরা বিজ্ঞাপন হিসেবে অ্যাখ্যা পেয়ে যায় নেটিজেনদের কাছে।

রিসর্টে থাকার আমন্ত্রণ গিয়েছে উত্তরভারতের একমাত্র কংগ্রেস শাসিত রাজ্য, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরেন্দ্রর কাছ থেকেও। আজ সরকার গড়া নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতার সঙ্গেও এক দফা কথা হয় কুমারস্বামীর। সূত্রের খবর, বিজেপির হাত এড়াতে প্রয়োজনে পশ্চিমবঙ্গে এসে থাকার জন্যও পরামর্শ দেওয়া হয় জেডিএস বিধায়কদের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement