(বাঁ দিকে) শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। কঙ্গনা রানাউত (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডেকে পরোক্ষে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে মন্তব্য করেছিলেন জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ। পাল্টা সাংসদ-অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত তাঁকে বললেন, ‘‘রাজনীতিবিদদের তা হলে আপনি কী করতে বলেন? তাঁরা কি ফুচকা বিক্রি করবেন?’’ শঙ্করাচার্যের ওই মন্তব্যের পাল্টা তাঁকে ‘ধর্মের শিক্ষা’ও দিয়েছেন কঙ্গনা। বলেছেন, ‘‘ধর্মেই মান্যতা দেওয়া হয়েছে বিশ্বাসঘাতকতাকে। ধর্মে বলা আছে, বিশ্বাসঘাতকতাই অত্যাচারের জবাব দেওয়ার শেষ আশ্রয়।’’
সাংসদ হওয়ার আগে থেকেই দেশের নানা বিতর্ক নিয়ে নিজের মতামত ব্যক্ত করে আসছেন অভিনেত্রী কঙ্গনা। সাংসদ হওয়ার পরে সেই প্রবণতা আরও বেড়েছে। বাংলার চোপড়া থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্রের রাজনীতি— সব কিছু নিয়েই ইদানীং মন্তব্য করেন অভিনেত্রী-সাংসদ। এ বার তিনি যুদ্ধে নেমেছেন দেশের বিশিষ্ট ধর্মগুরু হিসাবে বন্দিত চার শঙ্করাচার্যের এক জনের বিরুদ্ধে।
দেশের চার প্রান্তের চার পীঠস্থান বা মঠের চার জন শঙ্করাচার্য রয়েছেন। এই চার পীঠকে ভারতীয় পুরাণের চার বেদের পীঠস্থান হিসাবে মানা হয়। এর মধ্যে অথর্ব বেদের পীঠস্থান হল উত্তর ভারতের বদ্রী জ্যোতির্মঠ। অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সেই জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য। সম্প্রতি তিনি মুম্বইয়ে এসেছিলেন মুকেশ অম্বানীর কনিষ্ঠ পুত্র অনন্ত অম্বানীর বিয়ের আমন্ত্রণ রক্ষা করতে। পরে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা শিবসেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) প্রধান উদ্ধব ঠাকরের অনুরোধে তাঁর বাড়িতেও যান। সেখানেই শঙ্করাচার্যকে বলতে শোনা যায়, উদ্ধব ‘বড় ধরনের বিশ্বাসঘাতকতার শিকার’। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘যাঁরা বিশ্বাসঘাতকতা করেন, হিন্দুধর্ম তাঁদের মেনে নেয় না। যিনি বিশ্বাসঘাতকতা করেন, তিনি হিন্দু হতে পারেন না। মহারাষ্ট্রের মানুষ তাঁকে (উদ্ধবকে) আবার মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েই এই বিশ্বাসঘাতকতার জবাব দেবেন।’’ নাম না করলেও ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলতে যে শঙ্করাচার্য শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে-আসা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডেকেই বুঝিয়েছেন, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও। বৃহস্পতিবার তারই জবাব দিলেন কঙ্গনা।
শঙ্করাচার্যের উদ্দেশে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে একটি পোস্ট করে কঙ্গনা লিখেছেন, ‘‘রাজনীতিতে এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত স্বাভাবিক। আকছার ভাঙাগড়া চলতে থাকে রাজনৈতিক দলে। ১৯০৭ সালে কংগ্রেসও ভেঙেছিল। তার পরে আবার ১৯৭১ সালেও ভেঙেছিল কংগ্রেস। রাজনীতিবিদেরা যদি রাজনীতি না করেন, তা হলে করবেনটা কী! তাঁরা কি ফুচকা বিক্রি করবেন? তা ছাড়া ধর্মেই বলা আছে, রাজা যখন অত্যাচারী হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার শুরু করে, তখন বিশ্বাসঘাতকতাই একমাত্র আশ্রয়।’’