Kailash-Manasarovar Yatra 2025

চিনের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি! পহেলগাঁও আবহে কৈলাস মানস সরোবর যাত্রার সূচি ঘোষণা বিদেশ মন্ত্রকের

কৈলাস ও মানস সরোবর যাওয়ার দু’টি পথ খোলা থাকবে। সিকিমের নাথু লা এবং উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাসের মাধ্যমে ভারত থেকে তিব্বতে প্রবেশ করতেন ভারতীয় পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ১৬:৪৬
Share:
Kailash Manasarovar Yatra is set to take place during June to August 2025

ভারতীয় পর্যটক এবং পুণ্যার্থীদের জন্য ফের চালু হচ্ছে কৈলাস ও মানস সরোবর যাত্রা। —ফাইল চিত্র।

পাঁচ বছর পরে আবার কৈলাস ও মানস সরোবর যেতে পারবেন ভারতীয়েরা! আগেই তা ঘোষণা করেছিল বিদেশ মন্ত্রক। এ বার জানিয়ে দেওয়া হল, কবে থেকে কবে পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারবেন পুণ্যার্থীরা। বিদেশ মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী জুন থেকে অগস্ট পর্যন্ত ভারতীয়েরা কৈলাস ও মানস সরোবর যেতে পারবেন! অনলাইনে আবেদন করার সুযোগ থাকছে। আবেদনকারীদের তথ্য যাচাইয়ের পরই মিলবে ছাড়পত্র।

Advertisement

কৈলাস ও মানস সরোবর যাওয়ার দু’টি পথ খোলা থাকবে। সিকিমের নাথু লা এবং উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাসের মাধ্যমে ভারত থেকে তিব্বতে প্রবেশ করতেন ভারতীয় পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, নাথু লা পাস দিয়ে পর্যটকদের ১০টি দলকে অনুমতি দেওয়া হবে। প্রতি দলে থাকবেন ৫০ জন করে। আর লিপুলেখ পাসের মধ্যে দিয়ে যেতে পারবে এমনই পাঁচটি দল। সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়েই আবেদন করতে পারবেন ভারতীয় পর্যটক এবং পুণ্যার্থীরা।

উল্লেখ্য, প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কৈলাস ও মানস সরোবরে যাওয়ার অনুমতি পেতেন ভারতীয় পর্যটকেরা। সাধারণ ভাবে প্রতি বছর জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে চিন অধিকৃত তিব্বতের মানস সরোবর এবং কৈলাসে যাত্রা করতেন ভারতীয় পর্যটক ও পুণ্যার্থীরা। কিন্তু ২০২০ সালে কোভিড অতিমারির কারণে যাত্রা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ঘটনাচক্রে, সে বছরেরই ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ফৌজের আগ্রাসন প্রতিরোধ করতে গিয়ে নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় সেনা। সেই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকে তিব্বতের দুই তীর্থক্ষেত্রের ‘দরজা’ ভারতীয়দের জন্য বন্ধ ছিল।

Advertisement

গত ডিসেম্বরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলএসি) ‘টহলদারির সীমানা’ নির্ধারণ এবং মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছোনোর (ডিসএনগেজমেন্ট) বিষয়ে সমঝোতায় এসেছিল নয়াদিল্লি এবং বেজিং। তার পরেই নতুন করে কৈলাস-মানসযাত্রা শুরুর বিষয়টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আলোচ্য হয়ে ওঠে। চলতি বছরের জানুয়ারিতে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক কূটনীতির ৭৫তম বর্ষে বেজিঙে ভারতীয় বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রী এবং চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইর বৈঠকে এ বিষয়ে ঐকমত্য হয়। এ বার সেই যাত্রারই সূচি ঘোষিত হল।

প্রসঙ্গত, গালওয়ান-কাণ্ডের পর থেকেই ভারত এবং চিনের সম্পর্ক ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। তবে বিগত কয়েক দিনে সেই চিত্র অনেকটাই বদলেছে। বেজিংকে বার বার নয়াদিল্লির দিকে ‘বন্ধুত্বে’র হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ভারতও ইতিবাচক প্রত্যুত্তর দিয়েছে। সেই আবহেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতি আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধের পথ চওড়া হয়েছে। সেই যুদ্ধে প্রতিবেশী ভারতকে পাশে থাকার আবেদন করে চিন। যদিও ‘বন্ধু’ আমেরিকার পক্ষ ছাড়ার ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও ইঙ্গিত দেয়নি নয়াদিল্লি। তবে চিনের সঙ্গেও সম্পর্ক ভাল করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সাউথ ব্লক। তারই মধ্যে কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনার পরই ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। ভারত ইতিমধ্যেই বেশ কিছু পদক্ষেপও করেছে। পাল্টা হুঙ্কার দিয়ে রেখেছে ইসলামাবাদও। এমন পরিস্থিতিতে তিব্বতের কৈলাস ও মানস সরোবরের দরজা ভারতীয়দের জন্য খুলে যাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মতে করছেন অনেকেই। কারণ, কূটনৈতিক মহলের একাংশের মতে, পাকিস্তানের সঙ্গে চিনের সম্পর্ক ভাল। ভারতের সঙ্গে যদি কখনও যুদ্ধ শুরু হয়, তবে বেজিং ইসলামাবাদের পক্ষ নিতে পারে। সামরিক সাহায্যও মিলতে পারে। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বেজিং কতটা সাহায্য করবে, সেটাই প্রশ্ন! পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় নিন্দা করেছে বেজিং।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement