প্রধান বিচারপতি শরদ বোবদে এবং বিচারপতি আর ভানুমতী
অবসর সময়ে হাতে উঠে আসে ক্যামেরা। ‘ফোকাস’ কখনও প্রকৃতি, কখনও বা আদরের নাতি অরিহন্ত। পাশে ঘুরঘুর করে দুই পোষা কুকুর সাশা ও বাদশা। কৃষ্ণ মেনন মার্গের বাড়ির উঠোনে ছোট্ট বাঁধানো পুকুরে মাছ ছাড়া রয়েছে। মাছেদের খাওয়ানোর সময় তাঁর মুখের অনাবিল হাসি দেখলে কে বলবে, তিনিই দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি শরদ বোবদে।
সোমবার সকালে রাষ্ট্রপতি ভবনে শপথ নিতে চলেছেন দেশের নতুন প্রধান বিচারপতি। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে আরও একটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটতে চলেছে। প্রায় ১৩ বছর পরে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ প্রবীণতম বিচারপতির কলেজিয়ামে আসতে চলেছেন কোনও মহিলা বিচারপতি। বিচারপতি আর ভানুমতী কলেজিয়ামের নতুন সদস্য হচ্ছেন। তিনি দিল্লির নির্ভয়া গণধর্ষণের মামলায় অপরাধীদের ফাঁসির আদেশ দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের বেঞ্চের অন্যতম সদস্য ছিলেন। পাঁচ বিচারপতির এই কলেজিয়ামই সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিচারপতি নিয়োগের সুপারিশ করে। কলেজিয়ামের শেষ মহিলা সদস্য ছিলেন বিচারপতি রুমা পাল। তিনি ২০০৬-এ অবসর নিয়েছেন।
সুপ্রিম কোর্ট এবং হাইকোর্টেও মহিলা বিচারপতির সংখ্যা পুরুষদের অনুপাতে খুবই কম। সুপ্রিম কোর্টেই এখন মাত্র তিন জন মহিলা বিচারপতি রয়েছেন। কলেজিয়ামে মহিলা বিচারপতি আসায় পরিস্থিতি বদলায় কি না, তা দেখতে চাইছে আইনজীবী মহল। তাঁদের ক্ষোভ, কলেজিয়ামের সিদ্ধান্ত গ্রহণে যথেষ্ট স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। কলেজিয়ামে কী আলোচনা হচ্ছে, তা কখনও প্রকাশ্যে আসে না। নতুন প্রধান বিচারপতি শরদ বোবদে অবশ্য এ বিষয়ে রক্ষণশীল মনোভাব নিয়েই চলার পক্ষে। কলেজিয়ামের আলোচনা প্রকাশ্যে আনা নিয়ে সম্প্রতি তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘মানুষের জানার আগ্রহ মেটাতে গিয়ে কারও সুনাম জলাঞ্জলি দেওয়া যায় না।’’
আরও পড়ুন: শবরী-জটের মাঝেই ভক্ত ভিড় মসজিদে
৪৭তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে প্রায় ১৮ মাস সুপ্রিম কোর্টের শীর্ষ পদে থাকবেন তিনি। সাম্প্রতিক অতীতে অযোধ্যা থেকে আধার, তিন তালাক থেকে ব্যক্তি পরিসরকে মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দেওয়ার মতো প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ মামলার বেঞ্চে ছিলেন তিনি। প্রধান বিচারপতি হিসেবে রঞ্জন গগৈয়ের ঘটনাবহুল মেয়াদের পরে বোবদে জমানায় নরেন্দ্র মোদী সরকারের সঙ্গে বিচার বিভাগের রসায়ন কোন দিকে
গড়ায়, সে দিকে সব শিবিরেরই চোখ থাকবে। আরএসএসের সদর দফতর যে শহরে, সেই নাগপুরেই জন্ম প্রধান বিচারপতি বোবদের। ঠাকুর্দা শ্রীনিবাস বোবদে আইনজীবী ছিলেন। বাবা অরবিন্দ ছিলেন মহারাষ্ট্রের অ্যাডভোকেট জেনারেল। নাগপুরের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে বম্বে হাইকোর্টের
নাগপুর বেঞ্চেই ওকালতি শুরু করেছিলেন তিনি।