প্রতীকী চিত্র
খুনে অভিযুক্ত মধ্যপ্রদেশের এক বিধায়কের প্রভাবশালী স্বামী। তবে তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করলে ‘অপ্রত্যাশিত কিছু’ ঘটতে পারে এই ভয়ে বিচার প্রক্রিয়া থেকেই সরে দাঁড়ালেন এক বিচারক।
মধ্যপ্রদেশের দামোহ জেলার অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আর পি সোনকর। মধ্যপ্রদেশের বিএসপি বিধায়ক রম্বাই ঠাকুরের স্বামী গোবিন্দ সিংহ ঠাকুরের নামে একটি খুনের মামলা উঠেছিল তাঁর এজলাসে। সোনকরের আশঙ্কা, গোবিন্দকে দোষী সাব্যস্ত করলেই পাল্টা প্রতিশোধ নেওয়া হতে পারে তাঁর উপর। তাঁর অভিযোগ, এই মামলায় পুলিশ এবং অভিযুক্ত একে অপরের সঙ্গে মিলিত। অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করলে তারা একত্রে বিচারকের ভাবমূ্র্তি নষ্ট করতে পারে। সম্ভাব্য জটিলতা থেকে নিষ্কৃতি পেতে তাই তিনিদায়রা বিচারপতিকে অনুরোধ করেছেন, মামলার শুনানি অন্য কোনও আদালতে করা হোক।কারণ এই মামলা তাঁর বিচারাধীন থাকলে যে কোনও সময়ে তাঁর সঙ্গে ‘অপ্রত্যাশিত কিছু’ ঘটতে পারে।
মঙ্গলবার এই মামলায় পুলিশের বয়ান নথিভুক্ত করছিলেন সোনকর। তিনি জানতে চান, গোবিন্দ সিংহের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়নি? জবাবে আদালতকে পুলিশ যা জানিয়েছে, তা শুনে সোনকরের মন্তব্য, ‘‘অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য যে পদ্ধতি ও সাবধানতা অবলম্বন করার দরকার ছিল, তা পুলিশ করেনি। এতে স্পষ্ট, অভিযুক্ত ও পুলিশ মিলিত।’’ তাই বিচারকভয় পাচ্ছেন, অভিযুক্তকে দোষী বলে রায় দিলে তার সঙ্গে ‘খারাপ কিছু’ হতে পারে। যদিও পুলিশ-অভিযু্ক্তের মিলিত থাকার অভিযোগ নিয়ে জেলার পুলিশ সুপার হেমন্ত চৌহান কোনও মন্তব্য করেননি।
২ বছর আগে এক কংগ্রেস নেতা দেবেন্দ্র চৌরাসিয়ার হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত মধ্যপ্রদেশের বিধায়ক রম্বাইয়ের স্বামী গোবিন্দ।২০১৯ সালের ১৫ মার্চ ঘটনাটি ঘটে। দামোহ জেলার পুলিশ এর আগে গোবিন্দের গ্রেফতারির জন্য ২৫ হাজার টাকার পুরষ্কার ঘোষণা করেছিল। কিন্তু সেই ঘোষণা পরে তারা প্রত্যাহার করে নেয়। নিজে বিধায়ক না হলেও গোবিন্দের রাজনৈতিক যোগাযোগ উপর মহলে। গোবিন্দের বিরুদ্ধে আর এক কংগ্রেস নেতা রাজেন্দ্র পাঠককে হত্যার অভিযোগও রয়েছে। ১৯৯৮ সালের ওই মামলাটি এখনও চলছে। তবে গোবিন্দকে জামিনে মুক্তি দিয়ে দেয় মধ্যপ্রদেশের হাই কোর্ট।
মৃত কংগ্রেস নেতার দেবেন্দ্রর পুত্রের অভিযোগ, প্রমাণ হাতে থাকা সত্ত্বেও মধ্যপ্রদেশের পূর্ববর্তী কংগ্রেস সরকার গোবিন্দের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তার কারণ, ক্ষমতায় থাকার জন্য তৎকালীন কমলনাথের সরকারের বিএসপির সমর্থন দরকার ছিল। সেক্ষেত্রে বর্তমানে মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতাসীন বিজেপি কি খুনীকে ধরতে পদক্ষেপ করবে? রাজ্যের বিএসপি বিধায়ক রম্বাই অবশ্য বিধানসভায় বার বার বলেছেন, তাঁর স্বামী এবং নিকটাত্মীয়দের মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।