বদ্রীনাথের পোর্টাল খোলা হবে ২৭ এপ্রিল। ছবি পিটিআই।
চারদিকে ফাটল। আতঙ্কে ভিটেমাটি ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন বাসিন্দারা। জোশীমঠ ঘিরে আতঙ্কের মধ্যেই চারধাম যাত্রার প্রস্তুতি শুরু করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। কিন্তু ভূমি বসে যাওয়ার কারণে চারধাম যাত্রায় অংশ নেবেন কি না, এ নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন অনেক পুণ্যার্থীই। এ ব্যাপারে আশ্বস্ত করলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি। জোশীমঠের পরিস্থিতির কোনও প্রভাব পড়বে না চারধাম যাত্রায়— এমন আশ্বাসই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও বিশেষজ্ঞদের একাংশ সংশয় প্রকাশ করছেন।
বদ্রীনাথের প্রবেশদ্বার হল হিমালয়ের জনপদ জোশীমঠ। চলতি বছরের শুরু থেকে জোশীমঠে একের পর এক বাড়ি, হোটেলে ফাটল দেখা গিয়েছে। যার জেরে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন সেখানকার বাসিন্দারা। জোশীমঠের পাশাপাশি ফাটল দেখা গিয়েছে কর্ণপ্রয়াগেও। উত্তরাখণ্ডের অন্য দুই শহর মুসৌরি এবং নৈনিতালের বহু বাড়িতে ফাটল দেখা গিয়েছে বলে দাবি। ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির অন্যতম পছন্দের জায়গা উত্তরাখণ্ডের এই শহরগুলি। এই ফাটল বিপর্যয়ের কারণে বেড়াতে যাওয়া কতটা নিরাপদ হবে, এ নিয়ে চিন্তায় অনেকেই। এই আবহে চারধাম যাত্রার আগে পুণ্যার্থী এবং পর্যটকদের আশ্বস্ত করলেন সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী।
আগামী ২২ এপ্রিল থেকে শুরু হবে চারধাম যাত্রা। জোশীমঠের পরিস্থিতির কারণে চারধাম যাত্রা বিঘ্নিত হবে না বলে জানিয়েছেন ধামি। তিনি বলেছেন, ‘‘বদ্রীনাথ যাত্রা শুরু হতে প্রায় ১০০ দিন বাকি। সব রকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে। তীর্থযাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা হবে।’’ গত বছর চারধাম যাত্রায় বিপুল পরিমাণে তীর্থযাত্রীদের সমাগম ঘটেছিল। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটবে না বলেই আশাবাদী ধামি।
গঙ্গোত্রী ধাম এবং যমুনেত্রী ধামের পোর্টাল খোলা হবে আগামী ২২ এপ্রিল। বদ্রীনাথের পোর্টাল খোলা হবে ২৭ এপ্রিল। আগামী ২৫-২৬ এপ্রিল খোলা হতে পারে কেদারনাথ পোর্টাল।
জোশীমঠে বিপর্যয়ের কারণে চারধাম যাত্রায় কোনও সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে শ্রী বদ্রীনাথ-কেদারনাথ মন্দির কমিটিও। ওই কমিটির চেয়ারম্যান অজেন্দ্র অজয় বলেছেন, ‘‘বদ্রীনাথ যাত্রার সময় কোনও সমস্যা হবে না। বিশেষজ্ঞ কমিটির তথা মতোই আমরা প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সারব।’’
প্রশাসনের তরফে আশ্বাস পাওয়া হলেও জোশীমঠ ঘিরে আতঙ্ক কাটছে না। সেখানকার বাসিন্দাদের আশঙ্কা, আগামী দিনে ওই শহরে আরও ফাটল দেখা যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের দাবি, পর্যাপ্ত পরিকল্পনা ছাড়াই বিশাল নির্মাণ প্রকল্প, জনসংখ্যা বৃদ্ধি, পর্যটকদের চাপ এবং যানবাহনের চাপে এই বিপর্যয় ঘটেছে। ফলে এই পরিস্থিতিতে চারধাম যাত্রার সময় পুণ্যার্থীর আগমন হলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে সংশয় দেখা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে এ বার আশ্বস্ত করল উত্তরাখণ্ড সরকার।