G20 Summit 2023

জি২০ বৈঠকে সেই রাশিয়া প্রশ্নেই ফের অধরা যৌথ বিবৃতি

কূটনৈতিক শিবির অবশ্য এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, গত বছর নভেম্বরে বালির জি২০ শীর্ষ বৈঠকের সময়েও ঘোষণাপত্র নিয়ে কার্যত দু’টি মেরুতে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল সদস্য রাষ্ট্রগুলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ০৮:১৮
Share:

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। ফাইল চিত্র

প্রবল গ্রীষ্মের মধ্যে বিদেশের অতিথিদের বারাণসীর সূর্যোদয় দেখিয়ে মুগ্ধ করা হল ঠিকই। প্রাচীন মণীষার কেন্দ্র হিসেবে কাশীকে তুলেও ধরলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রীদের গত তিন দিনের জি২০ বৈঠকে শেষ পর্যন্ত দুধ নয়, ঘোলেই তৃষ্ণা নিবারণ করতে হল বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে। কোনও যৌথ বিবৃতিতে পৌঁছনো সম্ভব হল না আমেরিকা-রাশিয়ার সংঘাতের জেরে।

Advertisement

সূত্রের খবর, এই সংঘাতে প্রকাশ্যেই মস্কোর পাশে দাঁড়িয়েছে বেজিং। ফলে আমেরিকা চাইলেও তাদের শর্ত অনুযায়ী বারাণসী বৈঠকের যৌথ বিবৃতি প্রস্তুত করা গেল না। সভাপতির আসন থেকে একটি কাজ-চালানো বিবৃতি দিয়ে বৈঠকের পরিসমাপ্তি ঘোষণা করলেন জয়শঙ্কর।

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এর আগে বেঙ্গালুরু এবং দিল্লিতে জি২০-র প্রতিরক্ষামন্ত্রী এবং বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকের পরিণাম একই হয়েছিল। সেখানেও ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়া ও পশ্চিমের অবস্থানগত মতান্তরে কোনও যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করা যায়নি। আগামী সেপ্টেম্বরে ভারতের আয়োজনে জি২০-র শীর্ষ বৈঠকে কী ভাবে ঐক্যে পৌঁছনো সম্ভব হবে, তা নিয়ে খুবই চিন্তায় নয়াদিল্লি। মোদী সরকারের বাড়তি চিন্তার কারণ— প্রথমত, এ বছর ভারতের সভাপতিত্বেই এই বৈঠক হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই জি২০ নিয়ে গোড়া থেকেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এবং জেলায় যে ভাবে কেন্দ্রের প্রচারের বহর দেখা গিয়েছে, তা শেষ পর্যন্ত যৌথ বিবৃতির অভাবে জলে না চলে যায়, এই দুশ্চিন্তা রয়েছেইসাউথ ব্লকের।

Advertisement

মূলত দু’টি বিষয় বারাণসীর বৈঠকের যৌথ বিবৃতিতে রাখার জন্য চাপ দিচ্ছিল আমেরিকা এবং জি২০-ভুক্ত ইউরোপের দেশগুলি। প্রথমত, ইউক্রেনের উপরে একতরফা ভাবে রাশিয়ার আগ্রাসনের চরম নিন্দা। দ্বিতীয়ত, গত বছর মোদীর করা মন্তব্য (‘এই সময় যুদ্ধের নয়’)। কূটনৈতিক সূত্রের মতে, এই দু’টি বিষয়েই তীব্র আপত্তি তুলেছে মস্কো এবং বেজিং। শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায় বিবৃতি।

কূটনৈতিক শিবির অবশ্য এটাও মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, গত বছর নভেম্বরে বালির জি২০ শীর্ষ বৈঠকের সময়েও ঘোষণাপত্র নিয়ে কার্যত দু’টি মেরুতে বিভক্ত হয়ে গিয়েছিল সদস্য রাষ্ট্রগুলি। চিন, সৌদি আরব, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়ার মতো কিছু দেশ দাবি জানিয়েছিল, রাশিয়া প্রশ্নে যেন বিবৃতিতে কঠোর অবস্থান না নেওয়া হয়। অন্য দিকে রাশিয়ার তীব্র নিন্দা করার জন্য চাপ ছিল পশ্চিম ব্লকের। ভারতের পক্ষ থেকে চিন, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিলের সুরে সুর মিলিয়ে জানানো হয়েছিল, সংঘাতের কথা উল্লেখ থাকলেও তা নিয়ে যেন অতিরিক্ত ভর্ৎসনা করা না হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement