চায়ের দোকান আছে। চায়ের কাপে তুফানও আছে। কিন্তু সে আড্ডায় ধোঁয়া নেই! সিগারেটের দোকান আছে। কিন্তু খুচরো বিক্রি নেই এবং ক্রেতাদের সুবিধার্থে রাখা ‘আগুন’ নেই।
ঝাড়খণ্ডের হাজারিবাগকে ‘নো-স্মোকিং’ শহর করতে মরিয়া জেলা প্রশাসন। দোকানে খুচরো সিগারেট চাইলে মিলবে না। সিগারেট কিনতে হলে পুরো প্যাকেট কিনতে হবে। প্রকাশ্যে ধূমপান করলে দু’শো টাকা জরিমানা। হাজারিবাগের জেলাশাসক রবিশঙ্কর শুক্লর কথায়, ‘‘নজরদারি চলছে। কোনও দোকানদার খুচরো সিগারেট বিক্রি করে ধরা পড়লেই মোটা ফাইন। দোকানে ‘বিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ’ না থাকলেও ফাইন।’’ জেলাশাসকের চ্যালেঞ্জ, হাজারিবাগে প্রকাশ্যে কেউ সিগারেট খাচ্ছে, এ দৃশ্য খুঁজে পাওয়া যাবে না।
জেলাশাসকের দাবির সঙ্গে বাস্তবের মিল কতটা? হাজারিবাগ শহরকে এফোঁড় ওফোঁড় করেও রাস্তায়, চায়ের দোকানে, বাস স্ট্যান্ডে, কলেজের সামনে বা অন্য কোনও জায়গায় কোনও প্রকাশ্যে কোনও ধূমপায়ীচোখে পড়ে না। বাসস্ট্যান্ডের সামনে খুচরো সিগারেট কিনতে যেতেই দোকানদার অমিত কুমারের সাফ জবাব ‘‘খুচরো বিক্রি বন্ধ। প্যাকেট কিনুন।’’ অমিতবাবু জানালেন, জেলাশাসকের অফিস থেকে আচমকা নজরদারি চালানো হচ্ছে। ফলে তাঁরা বেশ ভয়েই আছেন। খুচরো সিগারেট বিক্রি করতে গিয়ে কিছুদিন আগে ধরা পড়েছিলেন অমিত। মোটা টাকা জরিমানা দিতে হয়েছে। আর যিনি খুচরো সিগারেটটি কিনে মৌজ করে সেটি ধরিয়েছিলেন তাঁর ফাইন হয়েছে ২০০টাকা।
এই স্বাস্থ্যকর প্রয়াসকে স্বাগত জানিয়েছেন শহরের বাসিন্দারা। খুচরো সিগারেট বিক্রি বন্ধ হওয়ায় সামগ্রিক ভাবে শহরের মানুষদের সিগারেট খাওয়ার প্রবণতা কিছুটা কমেছে বলে জেলাশাসকের দাবি। হাজারিবাগের সেন্ট কলম্বাস কলেজের এক ছাত্র বলেন, ‘‘বাড়িতে সিগারেট খাই না। কলেজে, চায়ের দোকানে গিয়ে বন্ধুদের সঙ্গে এক-আধটা সিগারেট খেতাম। এখন খুচরো মিলছে না। সুতরাং সেটাও বন্ধ। ভালই হয়েছে!’’ শহরের কিছু ‘নো-স্মোকিং’ অফিস আছে। সেই অফিসের কর্মীরা অফিসের বাইরে এসে সিগারেট খেতেন। অফিসগুলিকে বলা হয়েছে, প্রয়োজন হলে অফিসের মধ্যে ‘স্মোকিং জোন’ তৈরি করুন। বাইরে, রাস্তায় দাঁড়িয়ে সিগারেট খাওয়া যাবে না।