এমআইটি-ই লক্ষ্য চিরাগ ফালোরের।
রুপোলি পর্দার সংলাপ সত্যি হয়ে গেল বাস্তবে! প্রচলিত ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েই সুপারহিট বলিউডি ছবির নায়ক বলে উঠেছিলেন, ‘‘কাবিল বনো, কামিয়াবি ঝাক মারকে পিছে হি আয়েগি’’ ( অর্থাৎ, সক্ষম হয়ে ওঠ, সফলতা তোমার পিছনে তাড়া করবে)। ছায়াছবির সেই দৃশ্যেরই কয়েক ঝলক বাস্তবে ঘটে গেল পুণেয়, গত কাল জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজামিনেশন-অ্যাডভ্যান্সড-এর ফল ঘোষণার পর।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর দেশ জুড়ে ঘটে যাওয়া ওই পরীক্ষায় দেড় লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থীর মধ্যে প্রথম হয়েছিলেন পুণের চিরাগ ফালোর। মোট ৩৯৬ নম্বরের মধ্যে ৩৫২ পেয়েছিলেন তিনি। ইন্ডিয়ান ইন্সস্টিটিউটস অব টেকনলজি (আইআইটি)-র যে কোনও প্রতিষ্ঠানেই চিরাগের জন্য দরজা খোলা ছিল। কিন্তু তিনি আইআইটি-তে ভর্তি হচ্ছেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তাঁর লক্ষ্য আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস ইন্সস্টিটিউট অব টেকনলজি (এমআইটি)-তে পড়াশোনা করা। চিরাগ জানিয়েছেন, গত মার্চ মাসেই তিনি এমআইটি-তে ভর্তি হয়েছেন। সেই সঙ্গে আরও যোগ করেছেন, ‘‘আমি ইতিমধ্যেই এমআইটি-র অনলাইন ক্লাস করছি। ওখানেই পড়ব বলে ঠিক করেছি।’’
কিন্তু চিরাগের এই ঘোষণা আলোড়ন ফেলে দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাঁকে লক্ষ করে টুইটারে বন্যার জলের স্রোতের মতো একের পর এক ‘পরামর্শ’ ধেয়ে এসেছে। কেউ এই পদক্ষেপকে ইতিবাচক বলে ব্যাখ্যা করেছেন। অনেকে ‘মেধা পাচার’-এর তত্ত্বও তুলে ধরেছেন। কেউ আবার মন্তব্যের সঙ্গে বিদ্রূপ মিশিয়ে দেশের নয়া শিক্ষানীতির প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন।
আরও পড়ুন: মণীশ খুনে এফআইআর টিটাগড়-ব্যারাকপুর পুরসভার বিদায়ী পুরপ্রধানদের বিরুদ্ধে
দেবাশিস পাল নামে এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘‘ভাল। মনে হচ্ছে ও নয়া শিক্ষানীতি সম্পর্কে জানে। খুব তাড়াতাড়িই বেদ, যোগ ইত্যাদির মতো বিষয় আইআইটি-তে পড়ানো হবে।’’
অনুপ আগরওয়াল নামে আর এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘‘ও জানে জেএনইউ-র মতো আইআইটি থেকেও এক দিন নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া আসবে।’’
নবীন সিংহ রাজপুত নামে এক ব্যক্তি আবার লিখেছেন, ‘‘দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা দেখে নিক, প্রতিভা এ বার থেকে আমেরিকায় কর দেবে এবং ওই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
আরও পড়ুন: হাথরস কাণ্ডে আদালতের নজরদারিতে তদন্তের দাবি, মামলা শুনবে সুপ্রিম কোর্ট
হিমাংশু শ্রীবাস্তব নামে এক ব্যক্তি দাবি করেছেন, ‘‘চিন্তার কোনও কারণ নেই। ওর সাহায্য ছাড়াই আমরা আমাদের দেশকে মহান গড়ে তুলব।’’
শুধু জেইই-অ্যাডভ্যান্সড-ই নয়, জয়েন্ট এন্ট্রান্স মেন পরীক্ষাতেও দেশের মধ্যে দ্বাদশ র্যাঙ্ক করেছিলেন চিরাগ। তাঁর ইচ্ছা জ্যোতির্পদার্থবিদ হওয়ায়। টুইটারে সমালোচনার ঝড়ে তাঁর উৎসাহের শিখা একটুও কেঁপে যায়নি। বরং লক্ষ্যে অটল থেকেই চিরাগ জানাচ্ছেন, এমআইটি-তে পড়তে আগামী বছরের জানুয়ারিতেই তিনি আমেরিকা পাড়ি দিচ্ছেন।