Pahalgam Terror Attack

নিরপরাধ কাশ্মীরিরা যেন হেনস্থার শিকার না-হন! জঙ্গিদমন অভিযান নিয়ে এক সুর ওমর এবং মেহবুবার

পহেলগাঁও কাণ্ডের পর গোটা উপত্যকা জুড়ে জঙ্গিদমন অভিযান শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কোনও নিরপরাধ কাশ্মীরি যাতে হেনস্থার শিকার না-হন, সেই অনুরোধ করলেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর। একই অনুরোধ পিডিপি নেত্রী মেহবুবারও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১৮:৫৮
Share:
(বাঁ দিকে) ওমর আবদুল্লাহ এবং মেহবুবা মুফতি (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) ওমর আবদুল্লাহ এবং মেহবুবা মুফতি (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলার পর উপত্যকা জুড়ে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে উপত্যকার সাধারণ মানুষের জন্য মুখ খুললেন জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। উভয়ের বক্তব্যের নির্যাস একই— নিরপরাধ কাশ্মীরিরা যেন হেনস্থার শিকার না-হন, সে বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছেন জম্মু ও কাশ্মীরের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ এবং প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি।

Advertisement

সমাজমাধ্যমে প্রথম পোস্টটি করেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা পিডিপি নেত্রী মেহবুবা। কেন্দ্রকে সতর্কতার সঙ্গে পদক্ষেপের অনুরোধ করেন তিনি। একই সঙ্গে জঙ্গি এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে ফারাক বোঝার ক্ষেত্রে যত্নশীল হওয়া দরকার বলেও মত মেহবুবার। নিরপরাধ মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে দিকে নজর রাখার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানান পিডিপি নেত্রী। মেহবুবার ওই পোস্টের প্রায় তিন ঘণ্টা পরে প্রায় একই ধরনের বার্তা দিয়ে একটি পোস্ট করেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর। তিনিও সমাজমাধ্যমে লেখেন, “দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক। তাদের প্রতি কোনও দয়া দেখানো চলবে না। কিন্তু নিরীহ মানুষের যেন ক্ষতি না হয়।”

ঘটনাচক্রে, গত মঙ্গলবার পহেলগাঁও কাণ্ডের পর থেকে উপত্যকার বিভিন্ন প্রান্তে ধরপাকড় শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর। গত কয়েক দিনে কাশ্মীর উপত্যকার বিভিন্ন জায়গায় ন’জন জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যৌথ অভিযানে। জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়া ওই তরুণদের পরিবারের সদস্যেরা থাকতেন বাড়িগুলিতে। পহেলগাঁওয়ে হত্যাকাণ্ডের পর থেকে জঙ্গি আদিল হোসেন ঠোকারের খোঁজ চালাচ্ছে যৌথ বাহিনী। ভাঙা পড়েছে তাঁর বাড়িও। আদিলের মা শেহজ়াদা বানো ওই ভাঙা বাড়ির কোণে বসে ছেলের কৃতকর্মের জন্য আফশোস করতে করতে বলছিলেন, ‘‘এ বার বাড়ির বাকিদের বাঁচতে দে। আত্মসমর্পণ কর।’’ এমন আরও বেশ কিছু বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। ধরপাকড় এবং বাড়ি ভাঙার মতো ঘটনাগুলির কথাও উল্লেখ করেছেন পিডিপি নেত্রী। তিনি লিখেছেন, “হাজার হাজার মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং জঙ্গিদের বাড়ির সঙ্গে সাধারণ কাশ্মীরিদের বাড়িও ভেঙে ফেলা হয়েছে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে।”

Advertisement

বস্তুত, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর থেকে জঙ্গিহানার প্রতিবাদে সরব হয়েছে কাশ্মীরিদের একাংশ। পহেলগাঁওয়ে মোমবাতি মিছিল করতে দেখা গিয়েছে সাধারণ কাশ্মীরিদের। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে, নিরীহদের হত্যার বিরুদ্ধে সেই মিছিল থেকে উঠছে স্লোগান। কাশ্মীরিরা বলছেন, ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’, ‘আমরা ভারতীয়’। জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে এবং নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পহেলগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা বুধবার দিনভর দোকানপাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সম্পূর্ণ ‘শাট ডাউনের’ ডাক দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় মসজিদগুলি থেকে। প্রায় সকলেই সেই ডাকে সাড়া দিয়েছিলেন। অনেকের মতে, গত ৩৫ বছরে কাশ্মীরে এই চিত্র দেখা যায়নি। জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ সন্ত্রাসবাদ এবং নিরীহ মানুষকে হত্যার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সরব হয়েছে। তাঁরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement