গ্রাফিক: তিয়াসা দাস
রাম জন্মভূমি মামলার রায়ে বাবরি মসজিদ ধ্বংসকে ‘স্বীকৃতি’ দেওয়া হয়েছে বলে রিভিউ পিটিশনে জানাল জমিয়ত উলেমা ই হিন্দ। তারা জানিয়েছে, এই রায়ে ১৯৩৯, ১৯৪৯ ও ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদের উপরে হামলাকারীরা পুরস্কৃত হয়েছে।
আজ এই আর্জি পেশ করেন জমিয়ত প্রধান এম সিদ্দিকের আইনজীবী মৌলানা সৈয়দ আসাদ রশিদি। শীর্ষ আদালতে পেশ করা রিভিউ পিটিশনে প্রথমেই বলা হয়েছে, ‘‘এই মামলা যে স্পর্শকাতর তা আবেদনকারী জানেন। তিনিও মনে করেন এই বিবাদ যে শেষ হওয়া প্রয়োজন। তবে সুবিচার ছাড়া শান্তি ফিরতে পারে না।’’অযোধ্যা রায়ের সব অংশকে রিভিউ পিটিশনে চ্যালেঞ্জ করেনি জমিয়ত।
যে বিষয়গুলি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে সেগুলির মধ্যে অন্যতম: ১) অযোধ্যায় বিতর্কিত ভূমিতে মন্দির তৈরির অনুমতি দেওয়া বাবরি মসজিদ ভাঙাকে স্বীকৃতি দেওয়ার সামিল। ২). ১৯৩৯, ১৯৪৯ ও ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদে যে সব ঘটনা ঘটেছিল সেগুলির নিন্দা করেছে সুপ্রিম কোর্টই। কিন্তু এই রায়ে ওই ঘটনাগুলির জন্য দায়ী ব্যক্তিরা পুরস্কৃত হয়েছে। ৩) বেআইনি কাজ করে কেউ সুবিধে পাবেন না, এই নীতি ওই রায়ে পুরোপুরি খারিজ হয়েছে। ৪) রাম জন্মভূমির পুজো করার সময়ে হিন্দুরা তৎকালীন বাবরি মসজিদের কেন্দ্রীয় গম্বুজের দিকে তাকাতেন বলে জানিয়েছিল হিন্দু পক্ষ। সেই দাবিকেই অধিকারের দাবি হিসেবে ধরে নেওয়া হয়েছে। ৫) হিন্দু পক্ষের ধ্বংসাত্মক কাজ ও অনুপ্রবেশকে অধিকারের দাবি প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে স্বীকৃতি দিয়ে ভুল করেছে কোর্ট। ৬) মুসলিম পক্ষের নথিপত্রের চেয়ে হিন্দু পক্ষের মৌখিক বক্তব্যকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: এসপিজি তুলে নিতেই বিপত্তি, প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর বাড়িতে ঢুকে পড়ল সন্দেহজনক গাড়ি!
আজ দিল্লিতে এক সভায় রাম জন্মভূমি মামলার রায়ের কয়েকটি দিক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়। অশোকবাবুর মতে, রাম জন্মভূমি রায়ে এক বার বলা হয়েছে ১৯৪৯ সালে মসজিদ অপবিত্র করার পরে মুসলিমেরা মসজিদের অধিকার হারিয়েছিলেন। আবার বলা হচ্ছে, তাঁরা কখনওই মসজিদের অধিকার ছাড়েননি। আবার যে জমির উপরে অধিকার পাওয়ার চেষ্টার জন্য করসেবক ও রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে মামলা চলছে সেই জমির অধিকারই হিন্দু পক্ষকে দেওয়া হল। ওই জমির উপরে হিন্দুদের অধিকার প্রতিষ্ঠার পক্ষে উপযুক্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ কোথায়? তাঁর বক্তব্য, ‘‘বিচারপতিদের মতকে সম্মান করি। কিন্তু এই রায়ের যুক্তি আমি মানতে পারলাম না।’’