জয়রাম রমেশ। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধরা শীর্ষ নেতৃত্বের সক্রিয়তা দাবি করেছিলেন। সংসদে দলের সক্রিয়তা বাড়াতে আজ সনিয়া গাঁধী ১০ জন কংগ্রেস নেতার কমিটি তৈরি করলেন। মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণের ঝাঁঝ বাড়াতে লোকসভায় দলনেতা অধীর চৌধুরীর সঙ্গে উপ-দলনেতা হিসেবে গৌরব গগৈকে নিয়োগ করা হচ্ছে। দুই তরুণ নেতা রভনীত বিট্টু ও মানিকম টেগোরকে সচেতকের দায়িত্ব দেওয়া হল। রাজ্যসভায় মুখ্য সচেতক নিয়োগ করা হল জয়রাম রমেশকে।
তাৎপর্য পূর্ণ ভাবে ১০ জনের কমিটিতে আহমেদ পটেল ও কে সি বেণুগোপালকে রাখা হয়েছে। বাকিরা হলেন লোকসভার অধীর, গৌরব, মুখ্য সচেতক কে সুরেশ, দুই নতুন সচেতক রভনীত ও মানিকম, রাজ্যসভার দলনেতা গুলাম নবি আজাদ, উপ-দলনেতা আনন্দ শর্মা ও নতুন মুখ্য সচেতক জয়রাম।
গৌরব এখন এআইসিসি-তে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে। তাঁকে উপ-নেতা করা হলে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বে অন্য কাউকে দেখা যাবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। মণীশ তিওয়ারি, শশী তারুর থাকতে লোকসভায় দলনেতা অধীর চৌধুরীর সহকারী হিসেবে গৌরবকে নিয়োগের পিছনে রাহুলেরই হাত দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রুশ টিকা নিয়ে প্রশ্ন বাড়ছে ভারতে
আরও পড়ুন: উর্দুর বেশি কদর মোদী জমানায়, দাবিতে প্রশ্ন
দলের ২৩ জন নেতা চিঠি লিখে শীর্ষ নেতৃত্বের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পরে সনিয়া সক্রিয় হয়ে উঠলেও, বিক্ষুব্ধ নেতারা এখনও নিজেদের চিঠিতে লেখা দাবিতে অনড়। ২৩ জনের অন্যতম গুলাম নবি আজাদ আজ ফের ওয়ার্কিং কমিটিতে নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। তাঁর দাবি— যে সমস্ত পদাধিকারী, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বা ব্লক সভাপতি এর বিরোধিতা করছেন, তাঁরা জানেন, নির্বাচন হলে কেউ টিকবেন না।
আজাদের যুক্তি, নির্বাচনে জিতে কেউ পদে এলে তাঁর সঙ্গে অন্তত দলের ৫১ শতাংশের সমর্থন থাকে। এখন যিনি সভাপতি হন, তাঁর সঙ্গে হয়তো এক শতাংশেরও সমর্থন থাকে না। আজাদ এ কথা বলে কাকে নিশানা করতে চাইছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ কংগ্রেস নেতারা চাইছেন, রাহুল গাঁধীই সভাপতির দায়িত্ব নিন। রাহুল অবশ্য নিজেই সভাপতি পদে নির্বাচন চেয়েছেন। আজাদ বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য কংগ্রেসকে সক্রিয় ও মজবুত করা। যাঁরা নিয়োগপত্র পেয়েছেন, তাঁরা তো বিরোধিতা করবেনই। কিন্তু নির্বাচিত হলে ওয়ার্কিং কমিটিতে নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্ত থাকতে পারবেন।’’
মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে আবার এই ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের বিরুদ্ধে দলের মধ্যেই ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের তরুণ নেতা, দলের ব্রাহ্মণ মুখ জিতিন প্রসাদ ওই চিঠিতে সই করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তির দাবি তুলেছেন উত্তরপ্রদেশের লখিমপুর-খেরি জেলা কংগ্রেস কমিটি। কংগ্রেসের যুক্তি, এতে সনিয়া গাঁধী বা উত্তরপ্রদেশের ভারপ্রাপ্ত প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার অনুমোদন নেই। কিন্তু তা বলে নিচুতলার নেতা-কর্মীদের মুখ বন্ধ করাও সম্ভব নয় বলে প্রদেশ সভাপতি অজয়কুমার লাল্লুর মত। চিঠিতে আর এক স্বাক্ষরকারী কপিল সিব্বল এই ঘটনার সমালোচনা করে বলেছেন, নিজেদের লোককে নিশানা করে শক্তিক্ষয়ের বদলে বিজেপির উপরে সার্জিকাল স্ট্রাইক চালাতে হবে। তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন আর এক ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতা মণীশ তিওয়ারি।