সিদ্দিকি কাপ্পান। —ফাইল চিত্র।
অবশেষে প্রায় সাড়ে ৫ মাস পর শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তী জামিন পেলেন যোগী সরকারের পুলিশের হাতে ধৃত কেরলের সাংবাদিক কাপ্পান সিদ্দিকি। অসুস্থ মায়ের সঙ্গে দেখা করার জন্য সোমবার কাপ্পানের ৫ দিনের জামিন মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। তবে সেই সঙ্গে কিছু শর্তও আরোপ করা হয়েছে তাঁর উপর। গত বছর ৫ অক্টোবর উত্তরপ্রদেশের হাথরসের ঘটনায় দলিত পরিবারের খবর সংগ্রহ করতে যাওয়ার পথে মথুরার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন মালয়ালম পত্রিকার ওই সাংবাদিক।
কেরলের মল্লপুরমের বাসিন্দা কাপ্পান। দীর্ঘ দিন ধরেই অসুস্থ তাঁর নবতিপর মা। তাঁর সঙ্গে কাপ্পান যাতে দেখা করতে পারেন সেই জন্যই জামিন দিয়েছে শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবডের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। তবে কিছু শর্তও দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, কাপ্পান সংবাদমাধ্যমে কিছু বলতে পারবেন না। নেটমাধ্যমেও মন্তব্য করতে পারবেন না। মায়ের স্বাস্থ্যের প্রশ্নে আত্মীয় পরিজন এবং চিকিৎসক ছাড়া তিনি আরও কারও সঙ্গে কথা বলতে পারবেন না। উত্তরপ্রদেশ পুলিশকে তাঁর কেরল সফর এবং ফিরে আসা নিশ্চিত করতে হবে বলেও নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী জামিনের পঞ্চম দিন শেষ হলে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের হাতে নিজেকে সমর্পণ করার জন্য কাপ্পানকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
গত মাসে কাপ্পানকে মায়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে যোগাযোগের অনুমতি দেয় আদালত। কিন্তু সূত্রের খবর, তাঁর মা হাসপাতালে অচৈতন্য অবস্থায় থাকায় যোগাযোগ করে ওঠা সম্ভব হয়নি। সে সময় কাপ্পানের আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতকে বলেন, ‘‘আবেদন খারিজ হলে কিছু মনে করব না। কিন্তু আমাদের কথা শুনুন। কাপ্পানের মা অচৈতন্য। তাই আমরা আবেদন করেছি। তাঁর মৃত্যুর আগে এক বার অন্তত তাঁকে তাঁর মায়ের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হোক।’’ এর পরই ভিডিয়ো কনফারেন্সের অনুমতি দেওয়া হয় কাপ্পানকে। যদিও তাতে শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ হয়নি।
সোমবার অবশ্য কাপ্পানের জামিন আটকানোর চেষ্টা করেছিল সরকার। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেন। কিন্তু বিচারপতি জানিয়ে দেন, ‘‘তাঁর মায়ের মৃত্যু হতে পারে এমন আশঙ্কা করেই মানবিক কারণে জামিন দিচ্ছি।’’
যোগী সরকারের অভিযোগ পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া (পিএফআই)-র সক্রিয় সদস্য এবং দফতর সচিব কাপ্পান। তিনি সাংবাদিকতার নাম করে হাথরসে গিয়ে উত্তেজনা উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলেও অভিযোগ উত্তরপ্রদেশ সরকারের। কাপ্পানের সাংবাদিক পরিচয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সরকার। তার জেরে ইউএপিএ-তে মামলাও দায়ের হয়েছে কেরলের ওই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে।