জগদীপ ধনখড়কে। ফাইল চিত্র।
রাজ্যপাল হিসাবে পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজনৈতিক হিংসা’ প্রসঙ্গে প্রায়শই সরব হতে দেখা যেত জগদীপ ধনখড়কে। এ বার উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠা দিবসে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক হিংসা নিয়ে সরব হলেন তিনি। মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে উল্লেখ করে ধনখড় বলেন, ‘‘সে সময়ে রিপোর্টের প্রথম লাইনটি ছিল, আইনের শাসনের পরিবর্তে শাসকের আইন জারি থাকা সে রাজ্যের মানবাধিকারের প্রশ্নে অভিশাপ।’’ পাল্টা যুক্তিতে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে একটি রাজ্যের নির্বাচিত সরকারের বিরুদ্ধে এ কথা বলে নিজের পদের অমর্যাদা করছেন ধনখড়।
রাজ্যপাল হিসাবে বার বার রাজ্য সরকারের সঙ্গে বিবাদে জড়াতে দেখা যেত রাজ্যপাল ধনখড়কে। বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রকে রিপোর্ট পাঠানোর পাশাপাশি প্রকাশ্যে রাজ্যের সমালোচনা করতে দেখা গিয়েছে ধনখড়কে। মাঝে তৃণমূল উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটদানে বিরত থাকায় সেই সংঘাতে সাময়িক বিরতি নেমে এসেছে বলে মনে করা হচ্ছিল। কিন্তু আজ মানবাধিকার কমিশনের অনুষ্ঠানে আচমকাই পশ্চিমবঙ্গের ‘রাজনৈতিক হিংসা’ নিয়ে সমালোচনায় সরব হয়ে দুই শিবিরের প্রাক্তন তিক্ততা উস্কে দিলেন ধনখড়। তিনি রাজ্যপাল থাকাকালীন আদালতের নির্দেশে বিধানসভা ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসার শিকার হওয়া পরিবারদের সঙ্গে কথা বলে রিপোর্ট জমা দেয় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। আজ সেই রিপোর্টের উল্লেখ করে ধনখড় বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে খুব অল্প সময়ের মধ্যে জমা দেওয়া ওই রিপোর্টটি আমি পড়েছি। রিপোর্টের প্রথম লাইনটি আজও কানে বাজে। যাতে বলা ছিল, কোনও রাজ্যে যদি আইনের শাসনের পরিবর্তে শাসকের আইন চলে, তা হলে সেই রাজ্যের মানবাধিকারের ক্ষেত্রে তা অভিশাপ। আমি নিশ্চিত, ওই বক্তব্য কেবল একটি রাজ্যের জন্য নয়। সকলের জন্য।’’ তৃণমূলের রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে থাকাকালীন তিনি বিজেপির কর্মী হিসাবে সক্রিয় ছিলেন। সেই অভ্যাস তিনি ছাড়তে পারেননি। মানবাধিকার কমিশনের কর্তারা সকলেই বিজেপির নিযুক্ত। তাঁরা কী রিপোর্ট দিলেন, তাতে কী আসে যায়!’’
মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্নে সকলকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান করেন উপরাষ্ট্রপতি। ধনখড় বলেন, ‘‘রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা, বংশপরিচয়, জাতি বা ধর্মের নিরিখে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিকে রক্ষা করা যায় না। মানবাধিকার রক্ষার প্রশ্ন উঠলে নিরপেক্ষ না থেকে আমাদের উচিত (শোষিতের) পক্ষ নেওয়া। কারণ, নিরপেক্ষতা ও নীরবতা আসলে অত্যাচারীকেই সাহায্য করে। এই ধরনের ক্ষেত্রে আমাদের সক্রিয় হয়ে হস্তক্ষেপ করা উচিত।’’ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ মিশ্র সমাজে মহিলাদের সমাধিকারের লক্ষ্যে অভিন্ন দেওয়ানিবিধি চালু করার পক্ষে সওয়াল করেন তিনি।