বেঙ্গালুরুর কয়েক জন চিকিৎসক ও পরীক্ষাগারের মধ্যে আঁতাঁতের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি আয়কর দফতরের। তাদের অভিযোগ, ওই পরীক্ষাগারগুলিতে রোগীদের পাঠানোর জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের নিয়মিত নগদ টাকা পাঠানো হতো।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুর কয়েক জন চিকিৎসকের বাড়ি-চেম্বারে ও কয়েকটি পরীক্ষাগারে তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। সেই তল্লাশিতে আটক নথি থেকেই এই চক্রের হদিস মিলেছে বলে জানিয়েছেন আয়কর আধিকারিকেরা। তাঁদের দাবি, এমআরআই-এর জন্য পাঠালে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের পরীক্ষার ফি-এর ৩৫ শতাংশ কমিশন হিসেবে দেওয়া হয়। সিটি স্ক্যান ও অন্য পরীক্ষার ক্ষেত্রে দেওয়া হয় ২০ শতাংশ। তদন্তকারীদের দাবি, পনেরো দিন অন্তর চিকিৎসকদের খাম ভর্তি কমিশন পাঠায় পরীক্ষাগারগুলি। অনেক ক্ষেত্রে আবার চিকিৎসকদের আগাম টাকাও পাঠানো হয়। চেকে টাকা দিলে তা চিকিৎসকদের পেশাদারি ফি হিসেবে পরীক্ষাগারের নথিতে দেখানো হয়। কিন্তু তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই চিকিৎসকেরা কখনওই সংশ্লিষ্ট পরীক্ষাগারগুলিতে যাননি। তদন্তকারীরা জানান, কয়েকটি পরীক্ষাগার ‘কমিশন এজেন্ট’ও নিয়োগ করেছিল। তারাই টাকা পৌঁছে দিত। খামের মধ্যে টাকা ছাড়াও থাকত একটি কাগজ। তাতে রোগীদের নাম, চিকিৎসকের নাম, পরীক্ষার জন্য নেওয়া টাকা এবং কমিশনের পরিমাণ উল্লেখ করা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে কমিশনের পরিমাণ কম মনে হলে চিকিৎসকেরা খাম ফিরিয়েও দিয়েছেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। একটি পরীক্ষাগারের ক্ষেত্রে কমিশন বাবদ ২০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বলে দাবি তাঁদের।
আয়কর দফতরের দাবি, পরীক্ষাগারগুলি প্রায় ১০০ কোটি টাকার হিসেব-বহির্ভূত আয়ের কথাও মেনে নিয়েছে। আইভিএফ পদ্ধতিতে কৃত্রিম প্রজননের কয়েকটি কেন্দ্র ও সেগুলির সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসকদের বাড়ি-চেম্বারে তল্লাশিতে প্রায় দেড় কোটি নগদ টাকা ও অলঙ্কার উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে বেশ কিছু বিদেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধানও।