ছবি: প্রতীকী।
নাবালিকা স্ত্রীর সঙ্গে স্বামীর যৌন সম্পর্ক কি ধর্ষণ? তাকে কি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যায়? বিষয়গুলি বিবেচনা করে দেখবে সুপ্রিম কোর্ট।
যদিও ভারতীয় আইনে নাবালিকা বিবাহ অপরাধ বলেই গণ্য করা হয়। এমনকী, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েকে বিয়ে করাটা আইনত দণ্ডনীয়। তা সত্ত্বেও সমাজের বিভিন্ন স্তরে এমন ঘটনা হামেশাই ঘটছে। সে ক্ষেত্রে নাবালিকা স্ত্রীর স্বার্থরক্ষায় বিষয়টি পর্যালোচনা করতে চায় শীর্ষ আদালত। বুধবার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার আবেদনের শুনানিতে শীর্ষ আদালতের বিচারপতি মদন বি লোকুর এবং বিচারপতি দীপক গুপ্তের বেঞ্চ জানিয়েছে, বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি আইনসভা। এ নিয়ে বিচারব্যবস্থা আদৌ কোনও পদক্ষেপ করতে কি না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।
আরও পড়ুন
সুকনা থেকে বাহিনী গেল সীমান্তে, সিকিমে গ্রাম খালি করা শুরু
সাম্প্রতিক কালে নাবালিকা বিবাহের সংখ্যা কমে এলেও দেশে এখনও ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এই শুনানিতে ওই বয়সের মেয়েদের স্বার্থরক্ষাই আদালতের বিবেচনাধীন। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা বলেছেন, “নাবালিকা বিবাহ সমাজের ক্ষেত্রে ভাল নয় ঠিকই। তা সত্ত্বেও আমরা ভুলে যেতে পারি না যে এ ধরনের অসংখ্য বিয়ে হচ্ছে। সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমেই তা বদলাতে হবে। তবে এ নিয়ে আইনের বিভিন্ন ধারাতেই সামঞ্জস্য নেই। এ বিষয়টি অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে বিচারব্যবস্থা হস্তক্ষেপ করতে পারে কি?”
আরও পড়ুন
‘মনুয়া তো নন প্লেয়িং ক্যাপ্টেন’
নাবালিকা স্ত্রীর স্বার্থরক্ষায় বিষয়টি পর্যালোচনা করতে চায় শীর্ষ আদালত। ছবি: সংগৃহীত।
শীর্ষ আদালতে একটি জনস্বার্থ মামলার আবেদনে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা জানিয়েছে, পকসো (শিশুদের উপর যৌন নির্যাতন বিরোধী) আইনে নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক আইনের ভাষায় ধর্ষণ বলেই গণ্য হয়। তবে বিয়ের পর সেই নাবালিকার সঙ্গে যৌন সম্পর্কই বা কেন ধর্ষণ বলে বিবেচিত হবে না! ২০১৩-তে আইন সংশোধন করে সরকার জানিয়েছিল, “১৫ বয়সের কম বয়সী নয় এমন স্ত্রীর সঙ্গে স্বামী যৌন সম্পর্ক স্থাপন করলে তা ধর্ষণ হিসেবে গণ্য হবে না।” আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী গৌরব অগ্রবালের আর্জি, স্বামীর সঙ্গে স্বেচ্ছায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনের বয়স হিসেবে ১৮ বছরকেই ধরা হোক। অগ্রবাল বলেন, “পকসো আইনে ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়েকে নাবালিকা ধরা হলেও বিয়ের পর আইনের অন্য ধারায় তা বিবেচিত হয় না। এটা সম্পূর্ণ বৈষম্যমূলক। কারণ সত্যিটা হল, বিয়ে হোক বা না হোক ১৫ বছরের কম বয়সী মেয়ে এক জন নাবালিকা। এবং সংসদের উচিত প্রত্যেক নাবালিকার স্বার্থরক্ষা করা।”
আরও পড়ুন
এমএ করেও ঘর মোছার চাকরি, আত্মঘাতী যুবক
আদালত জানিয়েছে, বিষয়টি পর্যালোচনা করার প্রয়োজন রয়েছে। এবং ১৫-১৮ বছরের মেয়েদের বিয়ের পর স্বাস্থ্যে প্রতিকূল প্রভাব নিয়ে আবেদনকারীকে সবিস্তার রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে আদালত। সংসদ এই বিষয়টি নিয়ে কিছু ভেবেছে কি না, কেন্দ্রকে তিন সপ্তাহের মধ্যে তা জানাতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট।