ফাইল চিত্র
ভারতে সন্ত্রাস ছড়াতে ইন্ডিয়ান মুজাহিদিন, সিমি-র একাধিক বসে যাওয়া স্লিপার সেলকে ফের চাঙ্গা করতে চাইছে আইএস। আর এই কাজের সূত্রেই উত্তর বিহার এবং সীমাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় জঙ্গিরা নতুন করে সক্রিয় হচ্ছে বলে জানতে পেরেছে জাতীয় তদন্ত সংস্থা এনআইএ। রবিবারই দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ইয়াসমিন মুহম্মদ নামে এক তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাকে জেরা করে জঙ্গিদের এমন পরিকল্পনার আঁচ পেয়েছেন গোয়েন্দারা। তার পরেই আজ এনআইএ কর্তারা সীতামঢ়ীতে ইয়াসমিনের গ্রাম এবং পটনার কয়েকটি জায়গায় গিয়ে খোঁজখবর নেন।
গোয়েন্দাদের মতে, সিমি এবং ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের পুরনো মডিউলগুলিকে ফের সক্রিয় করার জন্যই আইএস রিক্রুটাররা ইয়াসমিনকে ব্যবহার করছিল। ইয়াসমিন আদতে সংগঠনের প্রাথমিক স্তরে নিয়োগের দায়িত্বে ছিল। এই কাজে সে যথেষ্ট সফল বলেও মনে করা হচ্ছে।
বিহারে জঙ্গিদের বাড়বাড়ন্তের বিষয়টি সামনে আসে ২০০৫ সালে। আইএমের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ফসিহ মুহম্মদ কর্নাটকে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়ে জঙ্গি সংগঠনে নাম লেখায়। পরে সৌদি আরবে সে গ্রেফতার হয়। ফসিহর গ্রামের বাড়ি, দ্বারভাঙার বাঢ়-সামেলা থেকে তার সহযোগী কাফিল আহমেদকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দারা। ২০০৯-এ দিল্লি থেকে ধরা পড়ে মধুবনির বাসোপট্টির বাসিন্দা তথা নেপালে লস্কর-ই-তইবার প্রধান মহম্মদ ওমর মদনি। তার আগেই অবশ্য মধুবনির আরও দুই বাসিন্দা কামাল আহমেদ এবং খালিদ আজিজ মুম্বই বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ধরা পড়ে। ২০১৪-য় সমস্তিপুর থেকে গ্রেফতার করা হয় আইএমের আর এক প্রতিষ্ঠাতা সদস্য তহসিন আখতার ওরফে মনুকে। তহসিন বেশ কিছু স্লিপার সেল তৈরি করেছিল। তার গ্রেফতার হওয়ার পরে সেই সব স্লিপার সেল অকেজো হয়ে যায়। সেই সেলগুলিকেই ফের চাঙ্গা করার জন্য ইয়াসমিন সীতামঢ়ীতে নিজের গ্রামে এসেছিল। ব্লক অফিসেও নিয়মিত যাতায়াত ছিল তার। ইয়াসমিন কাদের সঙ্গে দেখা করত, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। এর আগে বিজেপির মুখপাত্র তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শাহনওয়াজ হোসেনকে চিঠি লিখে খুন করার হুমকি দেয় আইএস। দিল্লিতে এফআইআর দায়ের করেন শাহনওয়াজ। তদন্তে দেখা গিয়েছে, সেই চিঠিটি বিহার থেকেই পোস্ট করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে ফের বিহারে জঙ্গি সংগঠন মাথাচাড়া দিচ্ছে বলেই মনে করছেন গোয়েন্দারা।