Mohan Bhagwat

Mohan Bhagwat: সঙ্ঘ পরিবারের কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন? ভাগবতের ‘ভিন্ন সুর’ নিয়ে প্রশ্ন

কংগ্রেস মুখপাত্র বলেন, ‘‘ভাগবতের বার্তা তাঁর দলীয় কর্মী ও হিন্দুত্ববাদীদের জন্য। কারণ, তাঁরা ওই বিষয়গুলি ধারাবাহিক ভাবে খুঁচিয়ে তুলছেন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০২২ ০৭:২৫
Share:

মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।

জ্ঞানবাপী মসজিদ, শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি, কুতুব মিনার বা তাজমহলের প্রকৃত ইতিহাস জানতে চেয়ে হিন্দুত্ববাদীদের একাংশ যখন সরব, তখন সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবতকে গতকাল নাগপুরে বলতে শোনা যায়, প্রতিটি মসজিদে শিবলিঙ্গ খোঁজার কী প্রয়োজন! অযথা বিতর্ক বাড়িয়ে লাভ কী! তাঁর ওই ভিন্ন মতকে স্বাগত জানান কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। কিন্তু সত্যিই কি ভিন্ন সুর ভাগবতের গলায় না কি এই বক্তব্য বিতর্ক এড়াতে সঙ্ঘ পরিবারের কৌশলগত অবস্থান পরিবর্তন? প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা।

Advertisement

অযোধ্যায় রাম মন্দির নিমার্ণের সঙ্গেই শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমিতে তৈরি ইদগা সরিয়ে সেখানে পুজো করার অধিকার নিয়ে অতীতে বহু বার সরব হতে দেখা গিয়েছে বিজেপি নেতাদের। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ইঙ্গিত দিয়েছেন, রাম মন্দিরের নির্মাণ শেষ হলেই নজর দিতে হবে কাশী-মথুরায়। মথুরা-বৃন্দাবন, বিন্ধ্যবাসিনী ধাম, নৈমিশ ধাম নিয়ে সকলকে আসরে নামার ডাক দিয়েছেন তিনি। অথচ তখন ভিন্ন সুর শোনা গিয়েছিল বিজেপি সভাপতি জে পি নড্ডার গলায়। তিনি বলেন, দল কেবল রাম মন্দির নির্মাণের পক্ষে ১৯৮৯ সালে পালামপুরে দলের অধিবেশনে প্রস্তাব নিয়েছিল। তাঁর দাবি, ‘‘বিজেপি আর কোথাও কোনও মন্দিরের দাবিতে প্রস্তাব নেয়নি। দল সাংস্কৃতিক বিকাশের কথা বলেছে। তবে এই বিতর্ক সংবিধান মেনে, আদালতে ফয়সালা হবে। আদালত ও সংবিধান এ বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবে, বিজেপি তা রূপায়ণ করবে।”

বিরোধীদের মতে, কৌশলী নড্ডা বোঝাতে চেয়েছেন, বিজেপি আনুষ্ঠানিক ভাবে রাম মন্দির ছাড়া কোনও মন্দির নির্মাণের পক্ষে প্রস্তাব নেয়নি। কিন্তু অন্য বিতর্কিত স্থলগুলি নিয়ে যদি কেউ আদালতে গিয়ে বিতর্ক খুঁচিয়ে তোলেন, তা হলে বিজেপির কিছু করার নেই। কারণ, তাতে আখেরে হিন্দুত্বের জিগির তুলে মেরুকরণ হবে। বিজেপির দিকে সরাসরি আঙুলও উঠবে না। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘সেই কারণে শীর্ষ বিজেপি নেতৃত্ব বলছেন, কেউ পুজো করার অধিকার দাবি করে আদালতে গেলে তো তাঁদের তো আটকানো যায় না! ফলে ঘুরিয়ে আদালত দেখিয়ে মন্দির নির্মাণের রাস্তা খোলা রাখছে বিজেপি। কেবল নিজেরা সামনে থাকছে না।’’

Advertisement

সঙ্ঘ প্রধান মোহন ভাগবত কৌশলে গতকাল সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন বলেই দাবি বিরোধীদের। বিরোধী শিবিরের মতে, ভাগবত বোঝাতে চেয়েছেন, কোনও ধর্মীয় স্থল নিয়ে কারও বিশ্বাস থাকতেই পারে। সেই ব্যক্তি যদি আদালতে যান এবং আদালত কোনও সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে তা সকলের মানা উচিত বলেই মত ভাগবতের। যার অর্থ, সঙ্ঘ পরিবার বিজেপির ধাঁচেই কোনও বিতর্কিত স্থানে মন্দির নির্মাণের প্রশ্নে প্রকাশ্য হস্তক্ষেপ করবে না। কিন্তু কেউ সেই দাবি তুললে তা রোখার দায়ও তাঁদের নেই। কারণ, উভয় শিবিরই মনে করে, তাতে যে বিতর্ক সৃষ্টি হবে, তাতে চাপা পড়ে যাবে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি।

কংগ্রেস মুখপাত্র বিবেক তঙ্খা বলেন, ‘‘মোহন ভাগবত ওই বার্তা তাঁর দলীয় কর্মী ও হিন্দুত্ববাদীদের জন্য দিয়েছেন। কারণ, তাঁরাই ওই বিষয়গুলি ধারাবাহিক ভাবে খুঁচিয়ে তুলছেন। আমজনতা সব জানে ও বোঝে। ভাগবত বরং কট্টর হিন্দুত্ববাদীদের বোঝান, এ ধরনের পদক্ষেপ আদৌ দেশের একতার জন্য ভাল নয়। মন্দির-মসজিদের পরিবর্তে বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধির সমস্যার সমাধান, নারী-ওবিসি সমাজের উত্থান অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement