ছয় রাজ্যে রাজ্যপালের নিয়োগ কি মোদীর অঙ্কে

রাষ্ট্রপতি ভবন আজ এক বিবৃতি জারি করে জানায়, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আইনজীবী জগদীপ ধনখড় হবেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৯ ০১:০৫
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গ-সহ চার রাজ্যে নতুন রাজ্যপাল নিয়োগ করলেন রাষ্ট্রপতি। বদলে দেওয়া হল উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যের রাজ্যপালকেও।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি ভবন আজ এক বিবৃতি জারি করে জানায়, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও আইনজীবী জগদীপ ধনখড় হবেন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল। ভারত সরকার ও নাগাল্যান্ডের জঙ্গি সংগঠনগুলির মধ্যে শান্তি আলোচনার মধ্যস্থ আর এন রবিকে নাগাল্যান্ডের রাজ্যপাল করা হয়েছে। তিনি গোয়ন্দা বিভাগের বিশেষ অধিকর্তা ছিলেন। পরে সহকারী জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাও হন। লালজি টন্ডনকে বিহার থেকে সরিয়ে মধ্যপ্রদেশে পাঠানো হয়েছে। আর উত্তরপ্রদেশের বিধায়ক ফাগু চৌহানকে করা হয়েছে বিহারের রাজ্যপাল। এক সময় লোকসভায় বিজেপির মুখ্য সচেতক ও ছত্তীসগঢ়ের নেতা রমেশ ব্যাসকে রাজ্যপাল করে পাঠানো হল ত্রিপুরায়।

গুজরাতের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী আনন্দীবেন পটেলকে মধ্যপ্রদেশ থেকে সরিয়ে উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল করা হয়েছে।

Advertisement

রাজ্যপাল বদলের পিছনে নরেন্দ্র মোদীর ভূমিকা বেশি দেখছেন বিজেপির নেতারা। দলের অনেকের মতে, আনন্দীবেনকে মধ্যপ্রদেশ থেকে সরিয়ে উত্তরপ্রদেশে নিয়ে আসা ও কমল নাথের রাজ্যে লালজি টন্ডনকে পাঠানোর মধ্যেই তা স্পষ্ট। প্রধানমন্ত্রী হয়ে মোদী গুজরাতে তাঁর ঘনিষ্ঠ আনন্দীবেনকে মুখ্যমন্ত্রী করেন। কিন্তু অমিত শাহের সঙ্গে আনন্দীবেনের সুসম্পর্ক ছিল না। তাঁকে সরিয়ে বিজয় রূপাণীকে সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী করা হয়। কিন্তু এখন কর্নাটকের পর মধ্যপ্রদেশে ক্ষমতা দখলের চেষ্টায় আছে বিজেপি। সেখানে টন্ডনের মতো রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে আসা অভিজ্ঞ ব্যক্তিকেই দরকার। উত্তরপ্রদেশের মতো আপাতত নিরাপদ রাজ্যে তাই আনন্দীবেনকে পাঠিয়ে দেওয়া হল।

ছত্তীসগঢ়ে রমন সিংহের সঙ্গে বিবাদে থাকা রমেশ ব্যাসকে পাঠানো হল ‘নিরাপদ’ রাজ্য ত্রিপুরাতে। যেখানে বামেদের পরাস্ত করে বিজেপি ক্ষমতায় এসেছে। এ বারে রমেশ ব্যাসকে লোকসভার প্রার্থীও করা হয়নি। ফাগু চৌহান পিছিয়ে পড়া শ্রেণি থেকে আসা নেতা। তাঁকে নীতীশ কুমারের বিহারে রাজ্যপাল করে পিছিয়ে পড়া শ্রেণিদের বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে ধনখড়কে রাজ্যপাল করে হরিয়ানার ভোটের আগে জাঠেদেরও বার্তা দেওয়া হল। মনোহর লাল খট্টরকে মুখ্যমন্ত্রী করার পর জাঠ ও অন্যদের মধ্যে বিতর্ক এখনও পুরোপুরি মেটেনি। দলের মতে, আজকের নতুন নিয়োগে পিছিয়ে পড়া শ্রেণির নেতারাই সব থেকে বেশি গুরুত্ব পেয়েছেন।

তবে নাগাল্যান্ডের মধ্যস্থ রবিকে রাজ্যপাল করার পর প্রশ্ন উঠেছে, এ বারে নাগাদের সঙ্গে আলোচনার ভবিষ্যৎ কী দাঁড়াবে? এনএসসিএন আই-এমের মুখপাত্র সি খাভাইঙ্গাম বলেন, ‘‘আশা করছি, যা হয়েছে ভালই হয়েছে। আলোচনা থমকে থাকার বিষয়টি সত্যি। এখন পরের মধ্যস্থ কে হবেন, তা ভারত সরকারের ব্যাপার। আশা করি রবি রাজ্যপাল হিসেবে শান্তি চুক্তির ক্ষেত্রে সাহায্য করবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রী নেফিয়ু রিও বলেন, ‘‘রবি নাগাল্যান্ডের বিষয়টি আগে থেকে জানেন, বোঝেন। তাই তিনি রাজ্যপাল হওয়ায় আমরা খুশি।" নাগা হো হোর সভাপতি চুবা ওঝোকুমের মতে, ফের নতুন মধ্যস্থ নিয়োগ হবে। প্রক্রিয়া শেষ হয়ে সময় লাগবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement