বিনিয়োগ টানার লক্ষ্যে সদ্য বিদেশ সফর সেরে এসেছেন। সামনে আবার বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। যেখানে লন্ডনের লক্ষ্মীনিবাস মিত্তল থেকে মুম্বইয়ের মুকেশ অম্বানীরা আমন্ত্রিত। কিন্তু তিনি সব রকম চেষ্টা চালালেও নরেন্দ্র মোদী সরকার শিল্পপতিদের ভয় দেখিয়ে বাংলায় বিনিয়োগ করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, শিল্পপতিদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে।
শুক্রবার কলকাতায় এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রকে নিশানা করে মমতা বলেছেন, ‘‘তুমি সংস্থাগুলোকে বলছো, বাংলায় বিনিয়োগ কোরো না! ওরা (কেন্দ্র) বলছে, বাংলায় যাওয়ার দরকার নেই। আমাদের বহু প্রকল্প আটকে রয়েছে। কেন ছাড়়পত্র পাচ্ছে না?’’ প্রধানমন্ত্রীর আচরণ মহম্মদ বিন তুঘলকের মতো মন্তব্য করে তাঁর আরও অভিযোগ, কেন্দ্র যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর শর্ত মানছে না। এ রাজ্যের জন্য দু’টি বন্দর করতে চেয়ে বারবার আর্জি জানিয়েও সবুজ সঙ্কেত মিলছে না। অথচ মহারাষ্ট্রের মতো রাজ্য সব সহযোগিতা পাচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন মন্তব্য করেছেন, দেশে এখন ‘সুপার ইমার্জেন্সি’ চলছে! তাঁর বক্তব্য, ‘‘কেউ হয়তো আমার সঙ্গে একমত হবেন, কেউ হবেন না। কিন্তু এটা বলব যে, প্রত্যেক শিল্পপতি ভয়ে আছেন। তাঁদের উপরে নজর রাখা হচ্ছে। স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। শিল্পের কোনও বক্তব্য নেই, কৃষকের কথা শোনার কেউ নেই।’’
আরও পড়ুন: অযোধ্যায় মন্দিরই হবে, অন্য কিছু নয়: হুঙ্কার ভাগবতের
ভয়-ভীতির জন্যই যে এ রাজ্যে লগ্নিকারীরা পা রাখতে পারছেন না, এ অভিযোগ আগেও করেছেন মমতা। তবে এ বার তিনি আরও সরাসরি নিশানা করেছেন মোদীকে। বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সরব হলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা কেউ কেউ তাঁকে ফোন করে জানতে চান, কেন এ সব বলছেন! মমতার কথায়, ‘‘এটা তো আমার অধিকার! কেন বলতে পারব না?’’
ঘটনাচক্রে, ওই অনুষ্ঠানের পরেই একটি আলোচনাচক্রে মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি রাজ্যের শিল্পমুখী পরিকল্পনার হয়ে জোরালো সওয়াল করেছেন দুই শিল্প-কর্তা সঞ্জীব গোয়েন্কা ও সঞ্জীব পুরী। গোয়েন্কা বলেন, ‘‘এখানে গত ৭ বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা লগ্নি করতে গিয়ে আমলাতান্ত্রিক সমস্যায় পড়তে হয়নি। কোনও বিধায়ক বা কেউ কাছে কিছু চাননি।’’ তবে, ৩৪ বছরে রাজ্যের ভাবমূর্তির সমস্যায় লগ্নিকারীদের যে আস্থা নষ্ট হয়েছিল, তা থেকে বেরোতে সময় লাগে বলে তিনি জানান। আইটিসি-কর্তা পুরীও জানান, গত কয়েক বছরে তাঁরা রাজ্যে ৪৫০০ কোটি টাকা লগ্নি করেছেন। নতুন তিনটি কারখানা ভালই চলছে। তিনি বলেন, ‘‘সম্ভাবনা রয়েছে বলেই আমরা আরও একটি হোটেল করছি।’’