বাধাল গ্রামে জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। ছবি: পিটিআই।
জম্মু ও কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার বাধাল গ্রামে ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ল তিন কিশোর। তাদের সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনার পরেই গ্রামে একাধিক গণ্ডিবদ্ধ এলাকা (কনটেনমেন্ট জ়োন)-এর চিহ্নিত করার নির্দেশ দিল সে রাজ্যের প্রশাসন। অসুস্থদের বুধবার সকালে এয়ারলিফট করে জম্মুতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জম্মুতে ভর্তি এক জনকে চণ্ডীগড়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে চিকিৎসার জন্য। জানা গিয়েছে, তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রাজৌরির জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নির্দেশ, যে সমস্ত পরিবারে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সেগুলি কনটেনমেন্ট জ়োন ১-এর আওতায় পড়বে। এই পরিবারের সদস্যরা একেবারে বাড়ি থেকে বেরোবেন না। বাড়িতে কাউকে প্রবেশ করতে গেলে প্রশাসনের অনুমতি লাগবে। জ়োন-২-এ থাকবে সেই পরিবারগুলি যাঁদের বাড়ির লোক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থদের দ্রুত রাজৌরির সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। এ ছাড়া, গ্রামে কোনও রকম ভিড় বা জমায়েত সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ। গন্ডিবদ্ধ এলাকায় যে বাড়িগুলি পড়ছে সেগুলিতে খাবার ও জলের ব্যবস্থা করা প্রশাসনের দায়িত্ব।
জম্মু-কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার সদর শহর থেকে ৫৫ কিলোমিটার দূরে বাধাল গ্রাম। গত দেড় মাসে সেখানে তিন পরিবারের ১৭ জন সদস্য মারা যান। মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে গত শনিবার কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দল পাঠানোর কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তদন্তের জন্য বিশেষ দল তৈরি করা হয় জম্মু ও কাশ্মীর সরকারের তরফেও। জাতীয় স্তরের অনেক পরীক্ষাগারই জানিয়েছিল, ওই অঞ্চলে কোনও রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়নি। ফলে হঠাৎ এই রহস্যমৃত্যু নিয়ে আশঙ্কা ক্রমশ বাড়ছিল। গত কাল গ্রাম ও আশপাশের এলাকা পরিদর্শনের পরে বাওয়ালি নামের একটি ঝর্নার জল বিষিয়ে গিয়েছে বলে জানান তদন্তকারীরা। কীটনাশকের উপস্থিতি মিলেছে ওই জলে, যা গ্রামের অনেকেই পান করতেন। ঝর্নাটি ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। নিষেধ করা হয়েছে সেটির জল ব্যবহার করতে।
জল শক্তি দফতরও ওই ঝর্না থেকে জল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। দফতরের এক অধিকর্তা জানিয়েছেন, গ্রামে জল সরবরাহের অন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে ধারণা, ঝর্নার নিকটবর্তী কৃষিক্ষেত্রে অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহার করা হয়েছে, যা মিশেছে ঝর্নার জলে।