প্রতীকী ছবি।
আগামী সপ্তাহেই করোনা প্রতিষেধকের ১০০ কোটি ডোজ়ের মাইলফলক স্পর্শ করতে চলেছে ভারত। তার সপ্তাহখানেকের মধ্যেই করোনার প্রতিষেধক তৈরিতে উৎসাহ জোগাতে ভারত সফরে আসছে আমেরিকার ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ফিনান্স কর্পোরেশনের (ডিএফসি) প্রধান ডেভিড মারচিকের নেতৃত্বাধীন একটি দল। ভারত, আমেরিকা, জাপান ও অস্ট্রেলিয়াকে নিয়ে তৈরি চতুর্দেশীয় অক্ষ কোয়াডের তরফেই এই সফরের আয়োজন করা হয়েছে।
১৮ অক্টোবর দক্ষিণ আফ্রিকা সফর শেষের পরে আগামী ২৪ থেকে ২৬ অক্টোবরের মধ্যে ভারতে আসছেন মারচিকের নেতৃত্বাধীন ওই দলটি। মূলত উন্নয়নশীল দেশগুলিতে করোনা প্রতিষেধক তৈরির ক্ষেত্রে উৎসাহ বাড়াতেই মারচিকদের এই সফর। মারচিকের সফরসঙ্গী হচ্ছেন জিম পোলান-সহ ডিএফসি-র আরও কয়েক জন শীর্ষ আধিকারিক। ভারতীয় প্রতিষেধক সংস্থা বায়োলজিক্যাল ই-র হায়দরাবাদের অফিস ঘুরে দেখবেন ওই প্রতিনিধিদল। এর পাশাপাশি প্রতিষেধক তৈরির ক্ষেত্রে এক চুক্তিপত্রেও স্বাক্ষর করবেন তাঁরা।
মূলত নিম্ন ও মধ্য আয়ভুক্ত দেশগুলির বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে বিনিয়োগকারী ডিএফসি-র তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, কোয়াডভুক্ত চার দেশের শীর্ষ নেতাদের সহযোগিতায় এই প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর হোয়াইট হাউসে প্রথম বার মুখোমুখি বসেছিলেন চার দেশের শীর্ষ নেতা। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, অস্ট্রেলিয়ার স্কট মরিসন এবং জাপানের ইয়োশিহিদে সুগা। সেই বৈঠকে চার শীর্ষ নেতার তরফে আনুষ্ঠানিক বিবৃতিতে জানানো হয়, কোভ্যাক্স প্রকল্পে প্রতিষেধক তৈরির ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা হবে। বিশ্বব্যাপী ১২০ কোটি প্রতিষেধকের ডোজ় বিতরণ করার অঙ্গীকারও করেন কোয়াডের শীর্ষ নেতারা। ইতিমধ্যেই ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে ৭ কোটি ৯০ লক্ষ প্রতিষেধক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষেধক তৈরির ক্ষেত্রে ভারত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করলেও বিরোধীরা বারে বারেই নরেন্দ্র মোদীর সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে, টিকাকরণের গতি কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে না পৌঁছনোয়।
তবে কেন্দ্রীয় সরকারের একটি সূত্রের দবি, অক্টোবরে করোনা প্রতিষেধকের মোট ২৮ কোটি ডোজ়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ২২ কোটি ডোজ় কোভিশিল্ড, ৬ কোটি ডোজ় কোভ্যাক্সিন এবং ৬০ লক্ষ ডোজ় জ়াইকোভ ডি (জ়াইডাস ক্যাডিলা)। ওই সূত্রটির দাবি, আগামী বছর থেকে প্রতি মাসে প্রতিষেধকের ৩০ কোটিরও বেশি ডোজ়ের বন্দোবস্ত করা হবে। যার মধ্যে কোভিশিল্ড, কোভ্যাক্সিন, জ়াইকোভ ডি-র পাশাপাশি বায়োলজিক্যাল ই-র প্রতিষেধকও থাকবে।
আগামী নভেম্বরের মধ্যেই বায়োলজিক্যাল ই-র তৃতীয় দফার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের রিপোর্ট পেশ করা হবে। ডিসিজিআই-এর অনুমোদন পেলে বায়োলজিক্যাল ই হবে তৃতীয় ভারতীয় করোনা প্রতিষেধক। তাই আগামী বছরে এই সংস্থার প্রতিষেধককেও হিসেবে রাখা হচ্ছে। প্রতিষেধক নির্মাণের দৌড়ে রয়েছে আর এক ভারতীয় সংস্থা জেনোভা। মনে করা হচ্ছে, আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যেই বাজারে আসবে জেনোভার প্রতিষেধকও।
করোনা প্রতিষেধকের ১০০ কোটি ডোজ়ের মাইলফলককে মাথায় রেখে আজ মুক্তি পেল গায়ক কৈলাস খেরের তৈরি কোভিড নিয়ে বিশেষ গান। আজ সন্ধে পর্যন্ত দেশে মোট ৯৭ কোটি ৬২ লক্ষ ডোজ় প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই অন্তত ৩০ শতাংশ দেশবাসী প্রতিষেধকের দু’টি ডোজ়ই পেয়ে গিয়েছেন।