National news

অটিজমে আক্রান্ত ছেলেকে ভর্তি নেয়নি ৪২ স্কুল, নিজেই স্কুল খুলে আজ ইনি কয়েকশো সন্তানের মা

২৪ বছরের পরিশ্রমে আজ তিনি কয়েকশো সন্তানের মা। আর কয়েকশো মায়ের প্রেরণা। কেন?

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ১০:৩২
Share:
০১ ১৫

নানান অবজ্ঞার মুখোমুখি হতে হয়েছে। বারবার ধাক্কা খেয়েছেন জীবনে। কিন্তু হাল ছাড়েননি দেহরাদূনের শাশ্বতী সিংহ। ২৪ বছরের পরিশ্রমে আজ তিনি কয়েকশো সন্তানের মা। আর কয়েকশো মায়ের প্রেরণা। কেন?

০২ ১৫

শাশ্বতীর প্রথম সন্তানের জন্মের সময় বেশ কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছিল। সন্তানের গুরুতর শ্বাসের সমস্যা হয়। যাতে তার মৃত্যুর আশঙ্কাও ছিল।

Advertisement
০৩ ১৫

এর পরের ১৫ দিন কেটেছিল আইসিইউ-এ। পাঁচ মাস লেগেছিল সুস্থ হতে। তারপর তিনি দিল্লি চলে আসেন। কিন্তু দিল্লির দূষিত বায়ু সহ্য করতে পারেনি তাঁর সন্তান। ফের গুরুতর অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়। দিল্লির জলবায়ুর সঙ্গে মানিয়ে নিতে কয়েক বছর সময় লেগে যায় তার।

০৪ ১৫

এখানেই শেষ নয়, সন্তান যখন চার বছরের, জ্বরে আক্রান্ত হয় সে। হাসপাতালে চিকিৎসা চলাকালীন এক মাসের মধ্যে তার দু’বার এপিলেপ্সি হয়।

০৫ ১৫

ব্রেন এবং শরীরের উপর এই ধকল নিতে পারেনি শাশ্বতীর সন্তান। অটিজমে আক্রান্ত হয়ে পড়ে সে। এত দিনের সাধারণ আচরণ বদলে যেতে শুরু করে স্পেশ্যাল চাইল্ডের মতো। অনেক সময় নিজের নামটাও মনে রাখতে পারত না।

০৬ ১৫

প্রথমে অবশ্য কেউ অটিজমের ব্যাপারটা ধরতে পারেননি। তবে তার আচরণের মধ্যে অস্বাভাবিকত্ব নজরে পড়েছিল শাশ্বতীর। স্কুল থেকেও অভিযোগ আসতে শুরু করেছিল। প্রথম স্কুল ছেড়ে যাওয়ার পর অসুস্থ ছেলেকে নিয়ে সব মিলিয়ে মোট ৪২টা স্কুলে ঘুরেছিলেন তিনি। কিন্তু কেউই তাকে ভর্তি নেয়নি।

০৭ ১৫

শেষে এক স্পেশ্যাল এডুকেটরের পরামর্শে অটিজম পরীক্ষা করান সন্তানের। তাঁর সন্তানের বয়স তখন ৮ বছর। তাতেই ধরা পড়ে যে, সন্তান অটিজমের শিকার। তত দিনে আবার শাশ্বতী দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন।

০৮ ১৫

তিনি জানান, “ছেলে অটিজমের শিকার জানতে পারার পর অনেক দিন শুধু কেঁদেই কেটেছিল। তারপর ঠিক করি হার মানব না। এটাকেই আমার শক্তিতে পরিণত করি।”

০৯ ১৫

শাশ্বতী ছিলেন জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক। সেই চাকরিটা তিনি ছেড়ে দেন। ছেলেকে বাড়িতেই পড়াতে শুরু করেন। পাশাপাশি ঠিক করেন, তাঁর মতো আরও অনেক মায়েরা, যাঁরা এ বিষয়ে জানেন না, তাঁদের সচেতন করে তুলবেন এবং সেই সমস্ত স্পেশ্যাল চাইল্ডদের খুঁজে বার করে নিজে পড়াবেন। তৈরি করে ফেলেন নিজের স্কুল।

১০ ১৫

শুরু হয় শাশ্বতীর পথ চলা। যাঁদের অদ্ভুত আচরণের জন্য স্কুল থেকে বার করে দেওয়া হয়েছে, একটার পর একটা স্কুল ঘুরে সেই সমস্ত পড়ুয়াদের তালিকা তৈরি করেন। স্কুল থেকে ঠিকানা নিয়ে তাদের বাড়ি পৌঁছে যান তিনি।

১১ ১৫

তাদের বাবা-মাকে এ বিষয়ে বুঝিয়ে প্রথমে মাত্র ৮ জনকে তিনি নিজের তৈরি স্কুলে আনতে সক্ষম হন। তখন স্কুলটা শাশ্বতীর দিল্লির ফ্ল্যাটের নীচে ছিল, ছোট একটা জায়গায়। সেটা ১৯৯৫ সাল। পরে এক বছরের মধ্যে পড়ুয়া সংখ্যা ৮ থেকে বেড়ে হয় ১২।

১২ ১৫

অত ছোট জায়গায় স্কুলটা আর চালানো যাচ্ছিল না। সরকারের থেকে সাহায্য পেয়েছিলেন শাশ্বতী। ১৯৯৮ সালে তিলকনগরের কমিউনিটি সেন্টারে স্কুলের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় সরকারের তরফে। তখন স্কুলের পড়ুয়া সংখ্যা ৮০।

১৩ ১৫

পড়ানোর পাশাপশি শুরু করেন বিভিন্ন সেমিনারে যাওয়া। বিদেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে এদের কী ভাবে দেখভাল করতে হয়, এদের ডায়েট কী হওয়া উচিত, এ সব বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করেন।

১৪ ১৫

২০০৫ সালে দিল্লি থেকে স্কুল স্থানান্তরিত হয় দেহরাদূনে। তাঁর সেই ছোট্ট স্কুলটাই এখন দেহরাদূনের নব প্রেরণা ফাউন্ডেশন। শাশ্বতীর একার পক্ষে আর তাদের দেখভাল করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। শাশ্বতী ছাড়াও তাঁর স্কুলে অনেক শিক্ষক যোগ দিয়েছেন।

১৫ ১৫

শাশ্বতীর ছেলে এখন ৩১ বছরের। দ্বিতীয় সন্তান মেয়েও অনেকটাই বড়। মাকে এই কাজে সেও সাহায্য করে। যদিও শাশ্বতী এখন দুই ছেলেমেয়ের মা নন, কয়েকশো সন্তান তাঁর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on:
আরও গ্যালারি
Advertisement