(বাঁ দিকে) চিনা বিদেশমন্ত্রী এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াং ই এবং ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল —ফাইল চিত্র।
গলওয়ান কাণ্ডের পর চিনের প্রতি ভারতের ‘কৌশলগত আস্থায়’ ক্ষয় ধরেছে। চিনা বিদেশমন্ত্রী এবং নিরাপত্তা উপদেষ্টা ওয়াং ই-র সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সে কথা পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। কড়া বার্তা দিয়ে ডোভাল জানান, সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলা খুবই দরকার। একমাত্র তবেই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আগের মতো স্বাভাবিক হবে।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সোমবার থেকে শুরু হয়েছে ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত সদস্য দেশগুলির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের ১৩তম বৈঠক। সেখানেই পার্শ্ববৈঠকে মিলিত হয়েছেন অজিত ডোভাল এবং ওয়াং ই। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে এ দিন একটি বিবৃতি জারি করে ডোভাল এবং ওয়াংয়ের মধ্যে আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরা হয়েছে। সেখানেই জানানো হয়েছে, ওয়াং-কে ডোভাল বলেছেন, “২০২০ সাল থেকে ভারত-চিন সীমান্তের পশ্চিম ফ্রন্টে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি দুই দেশের মধ্যে বিশ্বাসে চিড় ধরিয়েছে। ভারত-চিন সম্পর্ক ধীরে ধীরে তলানিতে এসে ঠেকেছে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে তোলা কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, সেই বিষয়টি তুলে ধরেছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা। ওয়াংকে তিনি জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যা কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, সেগুলি দূর করতে হবে। সীমান্তে শান্তি ফিরলে ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কও স্বাভাবিক হবে। সমগ্র বিশ্বের স্বার্থের নিরিখেই দুই দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক থাকা গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রায় একই অবস্থান নিয়েছেন চিনের কূটনীতিক তথা সদ্য আজ ফের চিনের বিদেশমন্ত্রী হওয়া ওয়াং ই। বৈঠকের পর তিনি জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ফের আগের মতো স্বাভাবিক করে তোলার জন্য দুই দেশকেই উদ্যোগী হতে হবে। চিনের সংবাদমাধ্যমের তরফে জানা গিয়েছে, ভারত-সহ একাধিক দেশের সঙ্গে সহযোগিতা করতে রাজি আছে চিন, এমনটাই জানিয়েছেন ওয়াং ই। প্রসঙ্গত কয়েক দিন আগেই ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন ওয়াং।
ওয়াং এর আগে ২০১৮ থেকে ২০২২ অবধি চিনের বিদেশমন্ত্রী ছিলেন। গত ডিসেম্বরে তাঁর জায়গায় আসেন ছিন কাং। কিন্তু গত এক মাস ধরে তাঁকে সে ভাবে দেখা যাচ্ছিল না। ২৫ জুন বেজিংয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে একটা বৈঠকের পর থেকে তিনি জনসমক্ষে আসেননি।মঙ্গলবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে ছিনকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছে চিন। নতুন বিদেশমন্ত্রী হিসেবে ফের দায়িত্ব নিলেন এই পদের প্রাক্তনী ওয়াং ই।