ভারতীয় বায়ুসেনা রয়েছে বিশ্বের প্রথম দশটি শক্তিশালী বায়ুসেনা বাহিনীর তালিকায়। বালাকোটে সেই শক্তিই প্রদর্শন করেছে ভারত। মঙ্গলবার ১২টি মিরাজ ২০০০ মুহূর্তে উড়িয়ে দিয়েছে জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে। মিরাজের পাল্টা হিসাবে মার্কিন প্রযুক্তিকে তৈরি এফ ১৬ বিমান নিয়ে নওশেরায় হানা দেয় পাকিস্তান। মিরাজ ২০০০ নাকি এফ-১৬, কার ক্ষমতা কেমন? দেখে নেওয়া যাক।
মাল্টিরোল সিঙ্গল ইঞ্জিন চতুর্থ প্রজন্মের জেট মিরাজ ২০০০ দাসো এভিয়েশনের সাহায্যে তৈরি। অন্যদিকে অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান সিঙ্গল সুপারসনিক এফ-১৬ পাকিস্তানকে বিক্রি করেছে আমেরিকা। যে কোনও আবহাওয়ায় এটি উড়তে এবং আঘাত হানতে সক্ষম।
১৯৭০ দশকের শেষের দিকে লাইটওয়েট ফাইটার হিসেবে মিরাজ তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে বেশ কয়েকটি ‘স্ট্রাইক ভ্যারিয়ান্ট’ তৈরি করা হয়। ১৯৯৪ সাল নাগাদ বিল ক্লিন্টন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পাকিস্তানের সঙ্গে আমেরিকার চুক্তি হয় এফ-১৬ সংক্রান্ত। অনেক বিতর্কও ছিল এ নিয়ে। সেই সময়ের সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান এফ-১৬ ২০১৬ সালে পাকিস্তানকে বিক্রি করছে। এটি তৈরি করে লকহিড মার্টিন।
মূলত অর্থ সাশ্রয়ী হালকা বহুমুখী বিমান হিসাবেই তৈরি করা হয়েছে এফ ১৬ বিমান। আরেক মার্কিন ব্যয়বহুল বিমান এফ ১৫কে সাহায্য করতেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল আমেরিকার তরফে। ‘এয়ার টু এয়ার’-এ এফ ১৬ অত্যধিক সফল। কিন্তু মিরাজ ‘এয়ার টু এয়ার’, ‘এয়ার টু গ্রাউন্ড’ দু’টি ক্ষেত্রেই সফল।
মিরাজ ২০০০-এ উন্নততর সামরিক সরঞ্জামই শুধু নেই, বরং রাতেও বিমান হানা চালানোর ক্ষমতা রাখে। মঙ্গলবার ভোর সাড়ে তিনটে নাগাদ পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান সহজেই প্রবেশ করেছে। এফ ১৬-এর ক্ষেত্রেও ‘নাইট ভিশন’ যথেষ্ট শক্তিশালী। কামান, ক্ষেপণাস্ত্র, বোমা সবরকম অস্ত্রই থাকে এটিতে।
মিরাজ ২০০০ নিজের সুরক্ষাও করতে পারে, আবার আঘাতও হানতে পারে। মিরাজে দু’টি ৩০০ এমএম ডেভা ৫০ রিভলভার কামান থাকে, এফ ১৬-এর ক্ষেত্রে একটি ২০ এমএম এম৬১ ভালকান কামান থাকে বাঁ দিকের ডানায়। এফ ১৬-এর কামানের গুলির হার ৬ হাজার রাউন্ড প্রতি মিনিটে, অপর দিকে মিরেজের কামানে গুলির হার ১৮০০ রাউন্ড প্রতি মিনিটে।
মিরাজে চালকের হেলমেটের মধ্যেই থাকে ডিসপ্লে। এর ফলে সুপার ইমপোজড রাডার ডেটা দেখতে পারেন তিনি। ককপিটে ডিসপ্লে থাকার প্রয়োজন হয় না। অন্যদিকে এফ ১৬-এর ককপিটও বেশ উন্নত। এতে রয়েছে মাল্টিফাংশনাল ডিসপ্লে।
মিরাজে রয়েছে রয়েছে মারাত্মক শক্তিশালী রাডার। যার ফলে লক্ষ্যবস্তুকে নিশানা করতে পারে সহজেই। ডপলার বিমিং প্রযুক্তির মাধ্যমে ভূমিতে থাকা যে কোনও বস্তুর নিখুঁত মানচিত্র এঁকে ফেলতে সক্ষম। পাকিস্তানের এফ ১৬-এর রাডারও শক্তিশালী। এই বিমানে ভার্টিকল স্টেবিলাইজার আছে। ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ সম্ভব যুদ্ধের সময়ও।
মিরাজের থেকে ওজন বহন করার ক্ষমতা এফ-১৬-এর অনেকটাই বেশি। মিরাজ ২০০০ দূরপাল্লার অভিযানে বেশি সফল, এফ ১৬ মধ্যমাত্রার অভিযানে বেশি সফল।
মাটিতে থাকা যে কোনও চলন্ত বস্তুকেও নিশানা করতে সক্ষম দু’টি যুদ্ধবিমানই। অত্যন্ত শক্তিশালী মিরাজ যুদ্ধবিমানের অতি সম্প্রতি আধুনিকীকরণ হয়েছে। যদিও এমনিতে আকাশপথে ২৩৩৬ কিমি প্রতি ঘণ্টায় ওড়ে মিরাজ, এফ ১৬-এর গতি ২৪১৪ কিমি প্রতি ঘণ্টায়।
মিরাজ সফল ভাবে কার্গিলে শত্রুশিবির ও রসদ ক্যাম্পে হানা দেয় এবং কয়েক দিনের মধ্যেই শত্রুদের সরবরাহ ব্যবস্থাটিকে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। অন্যদিকে আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের সময় শত্রু শিবিরকে গুঁড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল এফ ১৬। তবে আকাশপথে যুদ্ধের ক্ষেত্রে এফ ১৬-কেই এগিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। অস্ত্র রাখার ক্ষমতার দিক থেকে এফ-১৬-এর ক্ষমতা খানিকটা বেশি।
মিরাজ সফল ভাবে কার্গিলে শত্রুশিবির ও রসদ ক্যাম্পে হানা দেয় এবং কয়েক দিনের মধ্যেই শত্রুদের সরবরাহ ব্যবস্থাটিকে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। অন্যদিকে আফগানিস্তান ও ইরাক যুদ্ধের সময় শত্রু শিবিরকে গুঁড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল এফ ১৬। তবে আকাশপথে যুদ্ধের ক্ষেত্রে এফ ১৬-কেই এগিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। অস্ত্র রাখার ক্ষমতার দিক থেকে এফ-১৬-এর ক্ষমতা খানিকটা বেশি।
মিরাজের থেকে আরও একটা জায়গায় এফ ১৬কে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা এগিয়ে রাখছেন, কারণ উল্লম্বভাবে আকাশ পথে যাতায়াতের ক্ষেত্রে এফ ১৬-এর গতি অনেকটাই বেশি।