পাশাপাশি: মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো এবং প্রতিরক্ষাসচিব জেমস ম্যাটিসের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নয়াদিল্লিতে।ফাইল চিত্র।
আমেরিকার সঙ্গে গত কালের ‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের পর এনএসজি (নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ)-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হল বলে মনে করছে সাউথ ব্লক। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, গত কালের বৈঠকে মার্কিন সচিবরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব ভারতকে এই অভিজাত পরমাণু ক্লাবের সদস্য করতে তাঁরা নয়াদিল্লির কাঁধে কাঁধ লাগিয়ে কাজ করবেন। মার্কিন বিদেশ সচিব মাইক পম্পেয়ো বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজকে কথা দিয়েছেন, যারা এর বিরোধিতা করছে, প্রয়োজনে সেই সব রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আলাদা ভাবে দৌত্য করা হবে। এনএসজি-র সদস্য হওয়ার পথে ভারতের কাঁটা মূলত চিন। লক্ষ্যণীয় ভাবে তারা আজ ‘টু প্লাস টু’ বৈঠককে স্বাগতই জানিয়েছে। তবে ভারত-আমেরিকা প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি বেজিং।
বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে ‘‘এর আগে তিনটি পরমাণু সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীতে ভারতের প্রবেশের ক্ষেত্রে আগাগোড়া সহায়তা করেছে আমেরিকা। অস্ট্রেলিয়া গ্রুপ, ওয়াসনার অ্যারেঞ্জমেন্ট এবং মিসাইল টেকনোলজি কন্ট্রোল রেজিম-এ ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়কে গত কাল স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন মন্ত্রীরা। সেই সঙ্গে এ-ও বলেছেন যে ভারত যাতে এনসজি-তে ঢুকতে পারে, তার জন্য সম্পূর্ণ সহযোগিতা তাদের কাছ থেকে পাওয়া যাবে।’’
‘টু প্লাস টু’ বৈঠকের পরে দু’দেশের প্রতিরক্ষা ও বিদেশ সচিব ও মন্ত্রীদের বিবৃতিতে চিনের প্রতি স্পষ্ট বার্তা রয়েছে আরও দু’টি বিষয়ে। এক, বেজিংয়ের মহাসড়ক প্রকল্প ওবর সম্পর্কে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পরিকাঠামো নির্মাণের ক্ষেত্রে ‘স্বচ্ছ এবং দায়িত্বজ্ঞানসম্পন্ন’ মনোভাব নিয়ে চলা উচিত, যাতে কোনও দেশের নিরাপত্তা এবং সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ণ না হয়। দুই, ভারত মহাসগর ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ‘অবাধে এবং সবাইকে নিয়ে চলার ডাক দেওয়া দেওয়া হয়েছে বিবৃতিতে। সমুদ্রপথে চিনের একাধিপত্য কায়েমের চেষ্টার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই সরব দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলি। ভারতকে এ বিষয়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য ভিয়েতনাম-সহ সংশ্লিষ্ট দেশগুলি আবেদন করে এসেছে। এ নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে আগেও কথা বলেছে ভারত। কিন্তু নয়াদিল্লিতে এসে মার্কিন শীর্ষকর্তারা সমুদ্র নিরাপত্তা নিয়ে এক মঞ্চে এক সুরে কথা বলায় কিছুটা শক্ত জমি পেল ভারত— এমনটাই দাবি করছেন দেশের কূটনীতিক কর্তারা।