বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। ছবি: সংগৃহীত।
লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে ঘরোয়া রাজনীতি গরম হয়ে রয়েছে। পাশাপাশি বিদেশনীতির প্রশ্নেও স্বর চড়াতে দেখা যাচ্ছে মোদী সরকারের কর্তাদের। বিশেষ করে আমেরিকার সঙ্গে চাপ এবং পাল্টা চাপের কূটনীতি চলছে গত এক মাস ধরেই। আজ তাতে নতুন মাত্রা যোগ হল আমেরিকার আন্তর্জাতিক ধর্মীয় স্বাধীনতা সংক্রান্ত কমিশন (ইউএস সিআইআরএফ)-এর সাম্প্রতিক রিপোর্টটি ঘিরে। প্রতিবেদনে ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতার ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে।
এই রিপোর্টকে উড়িয়ে দিয়ে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালের বক্তব্য, “এই কমিশন অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট সংস্থা হিসেবে পরিচিত, যার রাজনৈতিক কর্মসূচি রয়েছে। তারা ক্রমাগত ভারত-বিরোধী প্রচারের কাজ চালিয়ে যেতে থাকে। আমাদের এমন কোনও আশা নেই যে এই সংস্থাটি ভারতের বিচিত্র বহুত্ববাদী গণতান্ত্রিক আত্মাকে বুঝতে পারবে। আসলে তারা চাইছে বিশ্বের সব চেয়ে বড় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় নাক গলাতে, যা কখনই সফল হবে না।”
উত্তাপ আরও বাড়িয়ে ভারতীয় সময় রাতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চিনের পাশাপাশি ভারতকেও ‘বিদেশি রাষ্ট্রের মানুষের প্রতি বিমুখ’ হিসেবে মন্তব্য করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজও গুজরাতে তাঁর বক্তৃতায় নিজের সরকারের ‘বিশ্বগুরু’ ভাবমূর্তির কথা তুলে ধরেছেন। বলেছেন, “দু’টো দেশের ঝগড়া হলে সবাই ভারতকেই ডাকে মধ্যস্থতার জন্য। একমাত্র ভারতের পাসপোর্টই যুদ্ধ চলা রাষ্ট্রের মধ্যে থেকে নাগরিকদের নিরাপদে বার করে আনতে সাহায্য করে।”
ঠিক তখনই বাইডেনের এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে লোকসভা ভোট চলাকালীন মোদীর কাছে একটি ধাক্কা। বাইডেনের বক্তব্য, “আমেরিকার অর্থনীতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, কারণ তারা শরণার্থীকে স্বাগত জানায়।” এর পরেই ভারত, জাপান এবং চিনকে একই বন্ধনীতে রেখে তিনি বলেছেন, “তারা অন্য দেশের নাগরিকদের প্রতি বিমুখ। শরণার্থীদের চায় না।”
আমেরিকার পাশাপাশি কানাডা নিয়েও আজ চড়া স্বর তুলেছে বিদেশ মন্ত্রক। খলিস্তানপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের খুনের প্রশ্নে দু’দেশের মধ্যে চাপানউতোর চলছে ছ’মাস ধরে। সম্প্রতি টরন্টোয় সে দেশের প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ফের ভারতের দিকে তর্জনি নিশানা করেছেন। একটি খলিস্তানি অনুষ্ঠানেও তিনি যোগ দিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে আজ বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “বিচ্ছিন্নতাবাদী উগ্রপন্থাকে রাজনৈতিক পরিসর দিচ্ছে কানাডা সরকার।”