বিশ্ব ক্ষুধাসূচক নিয়ে আপত্তি ভারতের। প্রতীকী ছবি।
গত বারের মতো এ বারও বিশ্ব ক্ষুধাসূচক নিয়ে আপত্তি জানাল ভারত। এ বারের ক্রমতালিকায় ১২১ দেশের মধ্যে ১০৭ তম স্থানে রয়েছে ভারত। কেন্দ্রীয় সরকার শনিবার জানিয়ে দিল, এই রিপোর্ট ‘ক্ষুধা পরিমাপের ভ্রান্ত পদ্ধতি’ অনুসরণ করে তৈরি হয়েছে এবং এতে গুরুতর পদ্ধতিগত ত্রুটি রয়ে গিয়েছে।
বিশ্ব ক্ষুধাসূচক পরিমাপের পদ্ধতি নিয়ে আগেও আপত্তি জানিয়েছিল ভারত। কেন ভারত এই তালিকা মানে না তার যুক্তি দিতে গিয়ে এ বছর প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘ক্ষুধা পরিমাপের চারটির মধ্যে তিনটি সূচক শিশুদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত। তা কি করে সমগ্র জনসংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করতে পারে?’
পাশাপাশি ভারতের তরফে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, ‘চতুর্থ তথা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক, অপুষ্টির অনুপাত (প্রোপোরশন অফ আন্ডারনারিশড বা পিওইউ) গণনা করা হয়েছে জনমত সমীক্ষার ভিত্তিতে। যেখানে মাত্র ৩ হাজার মানুষের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে।’ কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি, ভারতের মতো বিশাল দেশে মাত্র ৩ হাজার মানুষের মত জেনে গোটা দেশের মাপকাঠি স্থির করা সম্ভব নয়।
লিখিত বিবৃতিতে ভারত জানিয়েছে, ‘এই রিপোর্ট শুধু যে বাস্তবের সঙ্গে সম্পর্কহীন তাই নয়, এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে সরকারের বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বণ্টনের কর্মযজ্ঞকে অগ্রাহ্য করার প্রয়াস।’ বিশেষ করে করোনা অতিমারির সময় সরকারের খাদ্য বণ্টনের কাজকে এড়িয়ে যাওয়ার নির্দিষ্ট প্রয়াস হিসেবেই এই রিপোর্টকে দেখছে সরকার।
২০২১-এ ভারত বিশ্বক্ষুধা সূচকে ১০১ তম স্থানে ছিল। এ বছর, আরও ৬ ধাপ পিছিয়ে ১২১টি দেশের মধ্যে ১০৭ তম স্থানে রয়েছে ভারত। উপমহাদেশে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও নেপালের মতো দেশও ভারতের চেয়ে এ বারও ভাল অবস্থানে রয়েছে।
এই তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরই তা নিয়ে মোদী সরকারকে বিঁধেছে বিরোধী কংগ্রেস। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরম টুইট করে তীব্র কটাক্ষ করেছেন মোদী সরকারকে। তিনি লিখেছেন, ‘২০১৪ থেকে গত ৮ বছরে মোদী সরকারের রাজত্বে আমাদের অবস্থা খারাপ থেকে খারাপতর হয়েছে। এই সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দেওয়ার সময় মোদী সরকারের কবে হবে?’
২০২১-এও বিশ্ব ক্ষুধাসূচক (গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স)-এর রিপোর্টের তীব্র সমালোচনা করেছিল ভারত। রিপোর্টিকে জঘন্য এবং বাস্তবের সঙ্গে সম্পর্কহীন বলে অভিহিত করেছিল মোদী সরকার। এ বারও কার্যত একই কথার পুনরাবৃত্তি।