Rajiv Gandhi

ভারতে সব থেকে বড় গণহত্যার মদতদাতা রাজীব গাঁধী, বললেন অকালি নেতা

কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি রাহুল গাঁধীর দিকেও প্রশ্ন ছুঁড়েছেন এই অকালি নেতা।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

অমৃতসর শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৯ ১৩:৩০
Share:

রাজীব গাঁধী। ফাইল চিত্র।

ফের রাজনৈতিক আক্রমণের মুখে ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী। শিরোমণি অকালি দলের জাতীয় মুখপাত্র মনজিন্দ্র সিংহ সিরসা এ বার রাজীবকে দেশের বৃহত্তম গণহত্যার সব থেকে বড় চক্রী বললেন। ইন্দিরা হত্যার পর দেশ জুড়ে শিখ দাঙ্গার ঘটনা মনে করিয়ে দিয়েই রাজীবের উদ্দেশে এই তোপ দাগলেন মনজিন্দ্র। গত শনিবারই উত্তরপ্রদেশের একটি নির্বাচনী জনসভায় বফর্স কাণ্ডের প্রসঙ্গ তুলে রাজীব গাঁধীকে ‘এক নম্বরের দুর্নীতিগ্রস্ত’ বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী

Advertisement

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘এক নম্বরের দুর্নীতিগ্রস্ত’ মন্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করে মনজিন্দ্র বলেন, ‘‘রাজীব গাঁধী হলেন পৃথিবীর একমাত্র প্রধানমন্ত্রী যিনি একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে গণহত্যার চক্রান্ত করেছিলেন।’’ একই সঙ্গে মনজিন্দ্রের অভিযোগ, রাজীব যে শুধুই শিখ গণহত্যায় মদত দিয়েছিলেন তা নয়, যাঁরা প্রত্যক্ষ ভাবে এই গণহত্যায় জড়িত, তাঁদের রক্ষা ও পুরস্কৃত করার দায়িত্বও নিয়েছিলেন।

কংগ্রেসের বর্তমান সভাপতি রাহুল গাঁধীর দিকেও প্রশ্ন ছুঁড়েছেন এই অকালি নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘শিখ গণহত্যায় জড়িত থাকার দায় এখনও কেন স্বীকার করেনি কংগ্রেস? ১৯৮৪-র গণহত্যায় মৃতদের পরিবারের কাছে এখনও কেন ক্ষমা চাননি আপনি?’’

Advertisement

আরও পড়ুন: জাতপাতে বিশ্বাস করি না, ডিম্পলকে বিয়ে করাই তার প্রমাণ: অখিলেশ

অবশ্য এই প্রথম নয়, রাজীবকে আক্রমণ করার ট্রেন্ড শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই। গত শনিবার উত্তরপ্রদেশের জনসভায় তিনি মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘নিজের সভাসদদের কাছে রাজীব গাঁধী ‘মিস্টার ক্লিন’ হতেই পারেন, কিন্তু উনি জীবন শেষ করেছিলেন ‘এক নম্বর দুর্নীতিগ্রস্ত’ হিসেবেই।’’

এই মন্তব্য করার পরই অবশ্য দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কোনও রাজনৈতিক শিষ্টাচার না দেখানোর জন্য সমালোচিত হয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘দেশের জন্য প্রাণ দিয়েছিলেন রাজীব গাঁধী। তাঁর উদ্দেশে এই ভাষা প্রয়োগের নিন্দা করছি।’ উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং সমাজবাদী পার্টি নেতা অখিলেশের বক্তব্য ছিল, ‘রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকতেই পারে। কিন্তু দেশের জন্য যিনি শহিদ হয়েছেন, তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দেওয়া আমাদের কর্তব্য। তাঁর পরিবারকে সহানুভূতি দেখানো উচিত। ভোট হোক বা না হোক এইটুকু মানবিকতা সকলেরই থাকে। কিন্তু ক্ষমতার লোভে মানুষ যে কত নীচে নামতে পারে, প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যই তার প্রমাণ।’ জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি লেখেন, ‘দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকাকালীনই প্রাণ হারান রাজীব গাঁধী। সত্যিকারের দেশপ্রেমী ছিলেন উনি। তাই ধর্মের নামে যাঁরা পিটিয়ে মানুষ মারে, তাঁদের সার্টিফিকেটের দরকার নেই ওঁর। রাজনীতি কোন স্তরে নেমে এসেছে, তা প্রয়াত এক ব্যক্তিকে কালিমালিপ্ত করার এই প্রচেষ্টা থেকেই স্পষ্ট।’

আরও পড়ুন: আমাদের শিষ্টাচারের শেষ সীমাতেও এই আক্রমণের স্থান নেই

রাজনৈতিক শিষ্টাচার না দেখানোয় দেশের রাজনৈতিক মহলে সমালোচিত হলেও রাজীব গাঁধী প্রশ্নে শরিক দল শিরোমণি অকালি দলকে পাশেই পেলেন নরেন্দ্র মোদী। আর একই সঙ্গে উঠে এল ৩৫ বছরের পুরনো শিখ গণহত্যার প্রসঙ্গ। ১৯৮৪ সালে আততায়ীর গুলিতে দেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর মৃত্যুর পর দেশ জুড়ে শুরু হয়েছিল শিখনিধন যজ্ঞ, যার তীব্রতা সব থেকে বেশি ছিল রাজধানী দিল্লিতে। সরকারি হিসেবে শুধু দিল্লিতেই মারা গিয়েছিলেন অন্তত ৩০০০ জন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল অনেক কংগ্রেস নেতার বিরুদ্ধেই।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement