রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী সদস্য রুচিরা কামবোজ়। — ফাইল চিত্র।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) এবং রামমন্দির নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে ভারত পড়শি দেশকে ‘ভাঙা রেকর্ড’-এর সঙ্গে তুলনা করল। শুধু তা-ই নয়, বিশ্বের উন্নতির প্রসঙ্গে ইসলামাবাদের ‘নীরব’ থাকার অভিযোগ তুলে কটাক্ষও করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের স্থায়ী সদস্য রুচিরা কামবোজ়।
শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় পাকিস্তান ‘ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে মোকাবিলা’ শীর্ষক প্রস্তাব আনে। সেই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছিল চিন-সহ ১১৫টি দেশ। প্রস্তাবে ভোটদান থেকে বিরত ছিল ভারত, ব্রাজিল, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি-সহ ৪৪টি দেশ। প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পরে তার পক্ষে ভাষণ দেওয়ার সময় ভারতের ‘সিএএ’ এবং ‘রামমন্দির’কে ‘ইসলামভীতি’ বলে উল্লেখ করেছেন রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানের অস্থায়ী সদস্য মুনির আক্রম।
পাকিস্তানের সেই প্রস্তাব নিয়ে রুচিরা বলেন, ‘‘সাধারণ সভার জনৈক সদস্যের মন্তব্য অনেকটা ভাঙা রেকর্ডের মতো। কিন্তু, বিশ্বের উন্নয়নের প্রসঙ্গে তারা স্থবির হয়ে থাকে। যা খুবই চিন্তার বিষয়।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমার দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ে ওই প্রতিনিধির দৃষ্টিভঙ্গি খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’’
ইসলামাবাদের ‘ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে মোকাবিলা’ শীর্ষক প্রস্তাবে আদতে হিংসা এবং বৈষম্যের কথাই বলা হয়েছে। রুচিরা জানান, হিন্দু, বৌদ্ধ, শিখ-সহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ভয় দেখানোর লক্ষ্যেই এমন প্রস্তাব আনা হয়েছে। অবশ্য তিনি এক বারও তাঁর ভাষণে পাকিস্তান বা অন্য কোনও দেশের নাম করেননি।
সিএএ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আমেরিকাও। তারা জানিয়েছে, এই আইন কী পদ্ধতিতে ভারতে প্রয়োগ করা হবে, তার দিকে ওয়াশিংটনের তরফে নজর রাখা হয়েছে। ওয়াশিংটনের বার্তাকে ‘অযৌক্তিক’ বলেছে ভারত। সিএএ-কে ভারতের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলেও উল্লেখ করেছে নয়াদিল্লি।
উল্লেখ্য, ভারতে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল আইনে পরিণত হয়েছিল চার বছর আগেই। সম্প্রতি লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে গত সোমবার ‘আচমকা’ সিএএ আইন চালু করার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। বিরোধীদের অভিযোগ, লোকসভা ভোটের দামামা বাজতেই সিএএ দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হতে চাইছে বিজেপি।