ফাইল ছবি
আফগানিস্তানে বসবাস করলে এক দিকে যেমন প্রাণ সংশয়ের আশঙ্কা, অন্য দিকে তালিবান সরকারকে কূটনৈতিক ভাবে এখনও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। তার জেরেই দূতাবাস বন্ধ করেছিল ভারত। কিন্তু এটাও ঠিক যে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-সহ ১৬টি দেশ সেখানে বন্ধ করে দেওয়া দূতাবাস আবার খুলেছে। রাশিয়া, চিন, পাকিস্তান, ইরানের মতো দেশগুলি তো কখনওই বন্ধ করেনি দূতাবাস। ফলে গত ১০ মাস ধরে আফগানিস্তানের মানচিত্রে কার্যত মুছে গিয়েছে একমাত্র ভারত।
সূত্রের খবর, এই উভয় সঙ্কটের মধ্যে পড়ে সাউথ ব্লক কাবুলে দূতাবাস খোলার চিন্তাভাবনা শুরু করেছে। তবে আগের মতো শীর্ষ কূটনৈতিক কর্তারা যাবেন না সেখানে। পূর্ণাঙ্গ সক্রিয়তাও থাকবে না। বিদেশ মন্ত্রকের এক শীর্ষ কর্তার বক্তব্য, “এ ব্যাপারে কিছু কথাবার্তা এগিয়েছে। আফগানিস্তানের মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং সহায়তা পৌঁছনোর জন্য লিয়াজোঁর কাছে ব্যবহার করা হতে পারে দূতাবাস।”
প্রসঙ্গত গত কাল নয়াদিল্লিতে আয়োজন করা হয়েছিল এসসিও গোষ্ঠীভূক্ত রাষ্ট্রগুলির আঞ্চলিক সন্ত্রাসবিরোধী কমিটির বৈঠক। আলোচনায় অগ্রাধিকার পেয়েছে আফগানিস্তান। কিন্তু দেখা গিয়েছে, ওই বৈঠকে ভারতই একমাত্র দেশ যাদের কোনও উপস্থিতি নেই কাবুলে।
সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ভারত থেকে নিরাপত্তা বিভাগীয় কর্তাদের একটি দল আফগানিস্তান ঘুরে এসেছে, সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখার জন্য। তাদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতে আলোচনা হচ্ছে কাবুলে ভারতীয় দুতাবাসের তালা আংশিক ভাবে হলেও খোলার। ভারতের সঙ্গে আফগানিস্তানবাসীদের ন্যূনতম যোগাযোগ রক্ষা, প্রয়োজনে তাঁদের কাছে ভারতীয় সাহায্য পৌঁছে দেওয়াটাই যার মুখ্য উদ্দেশ্য।
তালিবান কাবুলের দখল নেওয়ার দু’দিন পর অর্থাৎ গত বছরের ২৭ অগস্ট, আফগানিস্তানে দূতাবাস বন্ধ করে ভারত। তার পর থেকেই সরকারের অভ্যন্তরে বিতর্ক চলেছে, সিদ্ধান্তটা ঠিক হল কি না। নিরাপত্তা বিভাগীয় কর্তা এবং বিদেশ মন্ত্রকের একাংশের বক্তব্য, দূতাবাস খোলা রাখা মানে ভারতীয় অফিসারদের প্রাণ বিপন্ন করা। নরেন্দ্র মোদী সরকারের বক্তব্য, আফগানিস্তানের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে সরকার গড়া হোক। সে দেশের মাটিকে যেন অন্য দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের কাজে ব্যবহার না করা হয়। এখনও পর্যন্ত তালিবানের কাছ থেকে এই মর্মে কোনও সাড়া পায়নি সাউথ ব্লক।