সসম্মানে দেশে ফিরেছেন উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান। দেশবাসী শ্রদ্ধায় মাথা নত করেছেন। তবে তাঁদের একটাই প্রশ্ন, আবার কবে যুদ্ধবিমানের ককপিটে উঠবেন অভিনন্দন?
অভিনন্দন এখন ভাল আছেন বলে জানিয়েছে বায়ুসেনা। গত কাল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের পরেই বিশেষ বিমানে করে তাঁকে পালাম বিমানবন্দরে নিয়ে আসা হয়। ভর্তি করা হয় দিল্লিতে সেনার রিসার্চ অ্যান্ড রেফারেল হাসপাতালে। সব ঠিক থাকলে দু’দিন বাদে তাঁকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হবে।
অভিনন্দনের শরীরে পাক সেনারা ‘বাগ’ বা ‘মাইক্রো চিপ’-এর মাধ্যমে আড়ি পাতার যন্ত্র ঢুকিয়ে দিয়েছে কি না, তার এক ধাপ পরীক্ষা হয়েছে।
সেনা সূত্রের খবর, শারীরিক ভাবে সুস্থ হলেও, অভিনন্দনের পাঁজরের একটি হাড়ে চিড় রয়েছে। কালশিটে রয়েছে গোটা পিঠে। মুখে রয়েছে একাধিক ছড়ে যাওয়ার দাগ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভেঙে পড়া বিমান থেকে ‘ইজেক্ট’ করার সময়ে মেরুদণ্ডে চাপ পড়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই অভিনন্দনের মেরুদণ্ডে ও মাথায় কোনও আঘাত রয়েছে কি না, তা দেখার জন্য আজ এমআরআই স্ক্যান করা হয়।
সূত্রের দাবি, স্ক্যানের রিপোর্ট স্বাভাবিক। চিকিৎসকেরা মনে করছেন, প্যারাশুট থেকে মাটিতে পড়ে যাওয়ার জন্যি পিঠে কালশিটে পড়েছে উইং কমান্ডারের। তবে এতটা উপর থেকে পড়ে যাওয়া, না গ্রামবাসীদের মারধর— ঠিক কী কারণে পাঁজরের হাড়ে চিড় ধরেছে, খতিয়ে দেখছেন চিকিৎসকেরা।
সেনা সূত্রের খবর, অভিনন্দন জানান, তাঁকে পৃথক একটি সেলে আটক করে রাখা হয়েছিল। দেওয়া হয়নি, ফোন, টিভি বা খবরের কাগজ। ভিডিয়োয় পাক সেনার প্রশংসা করার জন্য চাপ দেওয়া হয়েছিল। অনেক কিছুই তিনি বলতে চাননি।
প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে ফের এক দফা ডি-ব্রিফিংয়ের মুখোমুখি হতে হবে অভিনন্দনকে। সেখানে বায়ুসেনার পদস্থ কর্তারা ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন গোয়েন্দারা।
শুরু থেকে গোটা ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিতে হবে তাঁকে। পাক সেনার জিজ্ঞাসাবাদে তিনি কোনও গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন কি না, তার উপরে বিশেষ ভাবে জোর দেবেন গোয়েন্দারা।
প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, সব উত্তর সন্তোষজনক হলে এবং নিজেকে মানসিক ভাবে ‘ফিট’ প্রমাণ করতে হবে অভিনন্দনকে।
এর পর নিজের ইউনিটে ফিরে যুদ্ধবিমান চালানোর অনুমতি পাবেন অভিনন্দন। ফের দুঃসাহসী বীর উড়তে পারবেন আকাশে।