পাক গোলায় বিধ্বস্ত পুঞ্চ সেক্টরের কৃষ্ণাঘাটি গ্রামের একটি বাড়ি। ছবি: পিটিআই।
পঞ্জাব সীমান্তে ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতের হাতে তুলে দিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় যখন নিজেদের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করতে চাইছে পাকিস্তান, ঠিক তখনই জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্ত জুড়ে অবাধে গোলাবর্ষণ করল পাক সেনা। সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় গতকাল রাত থেকে লাগাতার পাক গোলাবর্ষণে মারা গেলেন তিন সাধারণ নাগরিক। মৃতদের একজন গৃহবধূ রুবানা কোসার (২৪)। পাক গোলার আঘাতে মৃত তাঁর পাঁচ বছরের ছেলে ফাজান এবং নয় মাসের কন্যাসন্তান শবনমও। এ ছাড়া পাক গোলাবর্ষণে গুরুতর আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েক জন সাধারণ নাগরিক।
পাকিস্তানি সেনা বেছে বেছে ভারতীয় গ্রাম লক্ষ্য করেই আক্রমণ চালাচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে। গুলির পাশাপাশি মর্টার বোমা এবং হাউইতজার ১০৫ মিমি গোলাও ছোঁড়া হচ্ছে গ্রাম লক্ষ্য করে, এমনটাই জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ। পাকিস্তানি গোলাবর্ষণের জবাব দেওয়া হচ্ছে ভারতীয় সেনার তরফেও।
নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে সালোত্রি গ্রামে পাক আক্রমণের তীব্রতা ছিল সব থেকে বেশি। শুক্রবার পুঞ্চের মানকোটে এলাকায় গুলি বিনিময়ের মধ্যে পড়ে গুরুতর জখম হন এক স্থানীয় মহিলা। মানকোটে এবং সালোত্রি ছাড়াও পাক হামলা চলছে কৃষ্ণঘাটি এবং বালাকোটের দিকে লক্ষ্য করে। গত সাত দিন ধরেই অবাধে গোলাবর্ষণ চলছে বলে জানিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ।
পরিস্থিতি সামাল দিতে পুঞ্চ ও রাজৌরিতে নিয়্ন্ত্রণরেখার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে সমস্ত স্কুল বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর প্রশাসন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে বেরতে নিষেধ করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ‘দেশে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে’, ফিরেই প্রথম প্রতিক্রিয়া উইং কমান্ডার অভিনন্দনের
শুক্রবারও রাজৌরিতে হিংসার বলি হয়েছিলেন চার ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষী। গত এক সপ্তাহে পাক সেনার তরফে অন্তত ৬০ বার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনা। বেশির ভাগ ঘটনাই পুঞ্চ, রাজৌরি, বারামুলা এবং জম্মুতে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজৌরিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছেন নর্দার্ন আর্মি কমান্ডার লেফটেনান্ট জেনারেন রণবীর সিংহ। তাঁর সঙ্গে আছেন ভারতীয় সেনার হোয়াইট নাইট কর্পস কমান্ডার লেফটেনান্ট জেনারেন পরমজিৎ সিংহ।
আরও পড়ুন: মুক্তির আগে অভিনন্দনের নতুন কী বয়ান রেকর্ড করাল পাকিস্তান?
গত এক বছর ধরে পাক সেনার তরফে সংঘর্ষবিরতির ঘটনা বেড়েই চলেছে। ২০১৮ সালে ঘটেছে মোট ২৯৩৬টি সংঘর্ষবিরতির ঘটনা, যা গত ১৫ বছরে সর্বোচ্চ। গত এক সপ্তাহ ধরে তার তীব্রতা বেড়েই চলেছে, এমনটাই জানা যাচ্ছে সেনা এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের সূত্রে।