ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত। —ফাইল চিত্র।
পহেলগাঁওয়ের হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে ‘দূরত্ব’ বৃদ্ধি করতে শুরু করেছে ভারত। এ বার জম্মুর সুচেতগড়ে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হল। ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) জানিয়েছে, সুচেতগড়ের অকট্রয় পোস্ট (ফাঁড়ি) দিয়ে কোনও সাধারণ মানুষ যাতায়াত করতে পারবেন না!
পহেলগাঁও কাণ্ডের পরই বিএসএফ সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করেছে। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানের সঙ্গে নানা রকম ‘সৌজন্যমূলক’ কর্মকাণ্ডও কাটছাঁট করেছে। বৃহস্পতিবারই বিএসএফের তরফে জানানো হয়, পঞ্জাবের অটারী-ওয়াঘা সীমান্তে ‘বিটিং রিট্রিট’ অনুষ্ঠানে বদল আনছে তারা। অনেকের মতে, শান্তি এবং উস্কানি যে এক সঙ্গে চলতে পারে না, ইসলামাবাদকে তারই বার্তা দিল নয়াদিল্লি।
গত মঙ্গলবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের হত্যালীলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জনই পর্যটক এবং এক জন স্থানীয় বাসিন্দা। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী লস্কর-এ-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফোর্স’ (টিআরএফ)। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ওই হামলায় পাকিস্তান থেকে আসা জঙ্গিরা জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা। মঙ্গলবারের ওই হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ পদক্ষেপ করেছে ভারত। স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে সিন্ধু জলচুক্তি। অটারী সীমান্তে ভারতের ‘ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট’ বন্ধও করে দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলার সময় শাহ জানান যে, সংশ্লিষ্ট রাজ্যে কোনও পাকিস্তানের নাগরিক আছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি কেউ থেকে থাকেন, তবে তাঁকে শনাক্ত করতে হবে এবং পাকিস্তানে ফেরত পাঠাতে হবে।
পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে কূটনৈতিক পদক্ষেপ করে নয়াদিল্লি জানিয়ে দিয়েছে, সে দেশের নাগরিকদের ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হচ্ছে। আগে দেওয়া ভিসাও বাতিল করার কথা জানিয়েছে ভারত। ভারত স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, যে পাকিস্তানিরা বর্তমানে ভারতে রয়েছেন, তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে। সেই আবহেই এ বার সুচেতগড়ে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বিএসএফ।