আর একটু সচেতন হলেই বাঁচানো যেত ১০ লক্ষেরও বেশি শিশুকে! সম্প্রতি ইউনাইটেড নেশন চিল্ড্রেনস্ এমারজেন্সি ফান্ড (ইউনিসেফ) শিশু মৃত্যু নিয়ে বিশ্বজোড়া এক সমীক্ষা চালিয়েছিল। তাতেই ভারত সম্বন্ধে এই মর্মান্তিক তথ্য উঠে এসেছে।
ইউনিসেফ জানাচ্ছে, শুধুমাত্র ২০১৫ সালে জন্মের পর এবং জন্মের আগে সব মিলিয়ে ১০ লক্ষেরও বেশি শিশুমৃত্যু লিপিবদ্ধ হয়েছে ভারতে। বিশ্বের হিসাবে সেই সংখ্যাটা প্রায় ৬০ লক্ষ। ভারত ছাড়াও শিশুমৃত্যুর এই তালিকায় রয়েছে কঙ্গো, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া এবং ইথিওপিয়া-র মতো দেশ।
কী ভাবে ঘটছে শিশুমৃত্যু?
ইউনিসেফ জানাচ্ছে, ভারতে শিশু মৃত্যুর ৩৯ শতাংশই জন্মের সময় নানা জটিলতার কারণে মারা যায়। বাকি শিশুদের বেশির ভাগের মৃত্যু হয় ম্যালেরিয়া, ডায়েরিয়ার মতো সহজে নিয়ন্ত্রণে আনা রোগের প্রকোপে। আর কিছু শিশুর মৃত্যু ঘটে মাতৃগর্ভেই। সমীক্ষা অনুযায়ী, এই শিশুদের সর্বাধিক গড় আয়ু ৫ বছর। ম্যালেরিয়া, ডায়েরিয়া ছাড়াও নিউমনিয়া, মেনিনজাইটিস, টিটেনাস, সেপসিস এবং এইডসের মতো রোগও তাদের মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। একটু সচেতন হয়ে যদি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা যেত তা হলেই এতগুলো শিশুর মৃত্যু এড়ানো যেত বলে ইউনিসেফ-এর মত। কারণ, ভারতে গ্রামেগঞ্জের প্রধান সমস্যাগুলির অন্যতম হল শৌচালয়। ঘর-বাড়ি ঠিকঠাক থাকলেও শৌচালয়ের দিকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই নজর দেওয়া হয় না। খোলাস্থানে শৌচকর্ম করেন অনেকেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব থাকায় এই সমস্ত উন্মুক্ত জায়গায় রোগ-জীবানু আক্রমণ করার সম্ভাবনাও অনেক বেশি হয়। যার প্রভাব শিশুদের উপরই বেশি পড়ে। উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে ম্যালেরিয়া এবং ডায়েরিয়ার মতো অসুখে মৃত্যু হয় শিশুদের।
আবার তেমনই আর একটা বড় কারণ নাবালিকা বিবাহ। যার ফলে অনেক মেয়েই অল্প বয়সে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। দারিদ্রের কারণে অপুষ্টিতে ভোগেন তাঁরা। তার প্রভাব পড়ে গর্ভস্থ শিশুর উপরেও। অপুষ্টিতে মারা যায় তারা। শিশুমৃত্যু ঠেকাতে এ সব বিষয়গুলির উপর সচেতনতা প্রচারের প্রয়োজন বলে জানিয়েছে ইউনিসেফ।