Coronavirus

শ্রমিক-মজুরের জন্য প্যাকেজ কোথায়, প্রশ্ন বিরোধীদের

বিরোধী দল থেকে সর্বভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন— সকলেরই বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে তার প্রতিফলন কোথায়?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২০ ০৫:৩৩
Share:

ফাইল চিত্র। এএফপি।

জাতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী আজ বলেছেন, “যাঁরা দিনমজুর, রোজকার আয়ে যাঁদের সংসার চলে, তাঁরা আমার পরিবার। আমার অন্যতম অগ্রাধিকার তাঁদের কষ্ট লাঘব করা।” কিন্তু বিরোধী দল থেকে সর্বভারতীয় ট্রেড ইউনিয়ন— সকলেরই বক্তব্য, নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যে তার প্রতিফলন কোথায়? ভিন্ রাজ্যে আটকে পড়া ২০ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের সমস্যা মেটানোর উপায় বা অসংগঠিত ক্ষেত্রের কাজ খোয়ানো ও খোয়াতে বসা কর্মীদের জন্য আর্থিক প্যাকেজের কথা কেন বললেন না তিনি? সংস্থাগুলিকে কর্মী ছাঁটাই না-করার আর্জি জানিয়েই কি দায়িত্ব শেষ নরেন্দ্র মোদীর?

Advertisement

লকডাউন শেষ হবে, এই আশায় ঘরের ফেরার ট্রেন ধরতে হাজারে হাজারে পরিযায়ী শ্রমিক যে-ভাবে আজ বান্দ্রার পথে নেমে এসেছিলেন, তার জন্যও কেন্দ্রকেই দুষছে বিরোধীরা। সরকারি সূত্রের অবশ্য দাবি, ২০ এপ্রিলের পরে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানোর বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্র ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যেই তাঁদের সুরাহার পথ খোঁজার দায়িত্ব দিয়েছেন অর্থ, শ্রম-সহ সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রককে। শ্রম মন্ত্রক জানিয়েছে, সারা দেশে ২০টি কন্ট্রোল রুম হবে। ফোন বা ই-মেলে মজুরি সংক্রান্ত অভিযোগ জানানো যাবে সেখানে। পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্যা সম্পর্কে সব রাজ্যের সঙ্গেও যোগাযোগ রেখে চলবে কন্ট্রোল রুমগুলি।

পি চিদম্বরমের টুইট, “আগের দফায় ২১ দিন, এ বারে আরও ১৯— গরিবদের কার্যত নিজের ব্যবস্থা নিজেকেই দেখে নিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।… টাকা আছে, খাবার আছে। কিন্তু সরকার তার কিছুই দিতে নারাজ। আমার প্রিয় দেশ, কাঁদো!”

Advertisement

সিপিএম পলিটবুরোর অভিযোগ, তিন সপ্তাহে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে পরিযায়ী শ্রমিক, ঠিকা কর্মী, দরিদ্র মানুষের। ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার যে ত্রাণ প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছিল, প্রয়োজনের তুলনায় তা নগণ্য। আজও মোদী কোনও সুরাহার সন্ধান না-দেওয়ায় শ্রমিক, গরিবদের দুর্দশা চরমে পৌঁছবে বলে সীতারাম ইয়েচুরির আশঙ্কা। এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কৌরেরও অভিযোগ, আতান্তরে পড়া পরিযায়ী শ্রমিক, ঠিকা কর্মী ও গরিবের জন্য সরকার কী করবে, তা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করেননি মোদী।

আরও পড়ুন: ৪০ দিন কেন লকডাউন, উত্তর মেলেনি

আরও পড়ুন: ‘খেতে পাচ্ছি না, আরও ১৯ দিন কী ভাবে কাটাব’

এই অভিযোগও উঠছে, তিন মাস বিনামূল্যে বাড়তি রেশন দেওয়ার কথা। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ তা ঠিক মতো পাচ্ছেন না। কর্মী সংগঠনগুলির দাবি, মোদী বারবার কর্মী ছাঁটাই না-করার কথা বললেও রোজ ছাঁটাইয়ের ভূরি ভূরি অভিযোগ আসছে। কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারির প্রশ্ন, প্রধানমন্ত্রীর কথা না-মেনে যারা ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটছে, তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে সরকার? এপ্রিলের বেতন মেটানোর মতো টাকা ছোট-মাঝারি রফতানি সংস্থাগুলির হাতে নেই বলে স্পষ্ট জানিয়েছে ওই ধরনের সংস্থাগুলির সংগঠন এফআইইও।

নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়, আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন থেকে শুরু করে অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেঁজ— সকলেই বলছেন, গরিবদের হাতে টাকা দেওয়া জরুরি। সরকার কেন সে পথে হাঁটছে না, বারবারই সেই প্রশ্ন উঠছে আজ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement