পেটের টানে: বাড়িতে ফিরেই রেশনের লাইনে ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকেরা। মঙ্গলবার হায়দরাবাদে। পিটিআই
বাড়ির পথ ধরা শ্রমিকদের অপমান, হেনস্থা ও মৃত্যুতে ক্ষুব্ধ কর্মী সংগঠনগুলি সরব হল আরও। তাদের দাবি, রোজ নতুন নির্দেশ জারি বা চমকদার ঘোষণা না-করে টিভির পর্দায় প্রধামন্ত্রীর দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি পূরণ করুক কেন্দ্র। কর্মী ও বেতন ছাঁটাই না-করা নিয়ে স্বরাষ্ট্র এবং শ্রম মন্ত্রকের নির্দেশিকা কার্যকর করা হোক কঠোর ভাবে। শ্রমিক সংগঠনগুলির একাংশের অভিযোগ, কথা ও কাজে, নির্দেশিকা ও তার প্রয়োগে বিস্তর ফাঁক বলেই লকডাউনের মধ্যে প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে দিল্লি থেকে কয়েকশো কিলোমিটার দূরে বাড়ির দিকে পা বাড়াতে বাধ্য হয়েছেন ভিন্ রাজ্যের শ্রমিকেরা।
সিটু-র সাধারণ সম্পাদক তপন সেনের বক্তব্য, “প্রধানমন্ত্রী নিজে আর্জি জানিয়েছিলেন, লকডাউনে যেন কাউকে ছাঁটাই না-করা হয়, পুরো বেতন দেওয়া হয়। এ বিষয়ে নির্দেশিকাও জারি করেছে শ্রম ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু সে কথা মানা হচ্ছে কোথায়!” এআইটিইউসি-র সাধারণ সম্পাদক অমরজিৎ কউরেরও অভিযোগ, “প্রতিদিন কাজ ছাঁটাইয়ের কয়েকশো অভিযোগ আসছে। শুধু চটকদার ঘোষণাতেই সরকারের কর্তব্য শেষ!” সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ কর্মী সংগঠন বিএমএসের সাধারণ সম্পাদক ব্রিজেশ উপাধ্যায়ের পাল্টা প্রশ্ন, “সাধারণত বেতন হয় মাসের প্রথম সপ্তাহে। মজুরি ছাঁটাই হচ্ছে— এটা মার্চের শেষেই বোঝা গেল কী করে? লকডাউন দু’দিন না-যেতেই ছাঁটাই হলেন কত জন শ্রমিক?” রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ওই কর্মীদের মনে অহেতুক ভয় ঢোকানো হয়েছে কি না, সেই প্রশ্নও তোলেন ব্রিজেশ।
শ্রমসচিব হীরালাল সামারিয়া গত ২৩ মার্চ সব রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মুখ্যসচিবদের চিঠিতে লিখেছিলেন, আপাতত সব সংস্থাকে কর্মী বা বেতন ছাঁটাইয়ের পথে না-হাঁটার পরামর্শ দিচ্ছে শ্রম মন্ত্রক। সরকার স্পষ্ট করে দিয়েছে যে, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের জারি করা নির্দেশিকা নিছক পরামর্শ নয়। যে আইনের বলে লকডাউন জারি করা হয়েছে, কাজ এবং বেতন ছাঁটাই না-করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তারই ভিত্তিতে।