ফাইল চিত্র।
স্বাধীনতা দিবসেই লাদাখে দু’বার অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাল চিনা সেনা। দু’বারই ধস্তাধস্তি ও পাথর ছোড়াছুড়ির পরে তাদের রুখে দিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। কিন্তু সিকিম সীমান্তের ডোকলামে দুই দেশের সেনার টানাপড়েনের মধ্যেই এই ঘটনায় ভারত-চিন সম্পর্ক আরও তিক্ত হলো বলে মনে করা হচ্ছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রে খবর, গত কাল ভোর ছ’টা নাগাদ লাদাখে প্যাংগং হ্রদের কাছে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিনা সেনা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় এলাকার প্রায় ৫ কিলোমিটার ভিতরে পয়েন্ট ফোর অঞ্চল পর্যন্ত চলে আসে তারা। ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) জওয়ানেরা বাধা দেন। কথা কাটাকাটির পরে দু’পক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ন’টার সময়ে ফের পয়েন্ট ফাইভ এলাকায় অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে চিনারা। মানবশৃঙ্খল গড়ে তাদের আটকান ভারতীয় জওয়ানেরা। এর পরে চিনারা পাথর ছোড়ে। পাল্টা পাথর ছোড়েন ভারতীয় জওয়ানেরাও। তাতে দু’পক্ষেরই কয়েক জন অল্পবিস্তর আহত হন। ঘণ্টাখানেক ধস্তাধস্তির পরে চিনা সেনারা ফিরে যায়। বিষয়টি নিয়ে সরকার বা সেনাবাহিনী সরকারি ভাবে মুখ খুলতে রাজি নয়।
আরও পড়ুন: উস্কানিতে কূটনীতিই পথ দিল্লির
গত কালের ঘটনার কথা স্বীকার করেনি বেজিংও। চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হু চুনইংয়ের কথায়, ‘‘চিনা সেনারা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়েছেন এমন খবর আমার জানা নেই। আমরা সব সময়েই শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করি। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চিনা এলাকায় টহলদারি চালায় আমাদের সেনা। ভারতকে আমার আর্জি, তারাও যেন ওই এলাকায় শান্তি বজায় রাখে।’’ কিন্তু আজ লাদাখের চুশুল সেক্টরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা নিয়ে বৈঠকে বসেন ভারতীয় ও চিনা সেনা অফিসারেরা। সেনা সূত্রে খবর, তাতে প্যাংগং হ্রদের কাছে গত কালের ঘটনা ও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার শান্তি বজায় রাখার উপায় নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। সেনা অফিসারেরা জানিয়েছেন, দু’দেশের সেনার মধ্যে এমন বৈঠক (বর্ডার পার্সোনেল মিটিং) নিয়মিত হয়ে থাকে। তবে এই পরিস্থিতিতে এমন বৈঠকের গুরুত্ব বেড়েছে।
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, প্যাংগং হ্রদের দুই-তৃতীয়াংশ চিনের দখলে রয়েছে। ফলে ওই এলাকায় প্রায়ই চিনা অনুপ্রবেশ ঘটে। তখন ভারতীয় জওয়ানেরা সাধারণত ব্যানার নিয়ে কুচকাওয়াজ করে বোঝান, চিনারা ভারতীয় এলাকায় এসে পড়েছে। সামরিক পরিভাষায় এই কুচকাওয়াজের নাম ‘ব্যানার ড্রিল’। কিন্তু ডোকলাম কাণ্ডের প্রেক্ষিতে এ বারে চিনারা বেশি আগ্রাসী মনোভাব নিয়েছে বলে ধারণা বিশেষজ্ঞদের।