ফাইল চিত্র
পূর্ব লাদাখের গালোয়ান উপত্যকায় রক্তপাতের এক বছর পূর্ণ হল আজ। এখনও সুরাহা হল না প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লাগোয়া এলাকায় ভারত-চিন বিরোধের।
গত বছর এই দিনে চিনের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। তাঁদের অন্যতম কর্নেল সন্তোষ বাবুর মূর্তি আজ উন্মোচন করা হল তাঁর রাজ্য তেলেঙ্গানায়। রাজ্যের মন্ত্রী কে টি রাম রাও এই মূর্তি উন্মোচন করেন। সেনাবাহিনী টুইটারে জওয়ানদের বীরত্ব নিয়ে লিখেছে। সঙ্গে দিয়েছে একটি ভিডিয়োর লিঙ্ক।
কংগ্রেস সভানেত্রী এক বিবৃতিতে নিহত জওয়ানদের স্মরণ করার পাশাপাশি মোদী সরকারকে আক্রমণ করতে ছাড়েননি। বলেছেন, “আমরা ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করেছি সরকার গালোয়ান পরিস্থিতি নিয়ে স্বচ্ছ ভাবে দেশকে জানাবে। এ রকম অভাবনীয় পরিস্থিতি কেন হল, ঠিক কী ঘটেছিল সে ব্যাপারে বলবে। আমাদের বীর জওয়ানদের আত্মত্যাগ যে ব্যর্থ হয়নি সে ব্যাপারে আমাদের আশ্বস্ত করবে। কংগ্রেস উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছে এখনও এ ব্যাপারে কোনও স্বচ্ছতা নেই।”
সনিয়ার বক্তব্য, এক বছর আগে প্রধানমন্ত্রী এ ব্যাপারে শেষ যা বলেছেন তা হল, কোনও অনুপ্রবেশই ঘটেনি। কংগ্রেস বারবার প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতির ব্যাখ্যা চেয়ে এসেছে। ওই অঞ্চলে এপ্রিল ২০২০-র আগের স্থিতাবস্থা কবে ফিরবে, তা নিয়েও অন্ধকারে রাখা হয়েছে। সেনা পিছনো নিয়ে চিনের সঙ্গে এ পর্যন্ত যে আলোচনা হয়েছে, তা আদৌ ভারতের পক্ষে অনুকূল নয়। রাহুল গাঁধীর কথায়, “গালোয়ান কাণ্ড নিয়ে বহু প্রশ্ন রয়েছে যা এখনও উত্তরহীন। মানুষের কাছে সরকারের জবাবদিহি করা প্রয়োজন।”
গত এক বছর ধরে দফায় দফায় সামরিক এবং কূটনৈতিক স্তরে বৈঠকের পরেও ২০২০ সালের আগের স্থিতাবস্থা ফেরেনি। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দু’দেশের সেনার নবম বৈঠকের পর প্যাংগংয়ের তীর থেকে সেনা সরাতে রাজি হয় দু’পক্ষ। কিন্তু সেই অঞ্চলের সেনা সরিয়ে নেওয়ার পরে আপাতত ফিঙ্গার ৮ থেকে ফিঙ্গার ৩ পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকাকে ‘বাফার জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে না-আসা পর্যন্ত কোনও পক্ষই সেখানে টহল দিতে পারবে না। এত দিন ফিঙ্গার ৪ পর্যন্ত ভারতের দখলে ছিল। নয়া চুক্তিতে সেই ফিঙ্গার ৪ এলাকার দখল কার্যত ছেড়ে দিতে হয়েছে ভারতকে। হৃত জমি কবে উদ্ধার হবে, সে ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কিছু জানা যায়নি। প্যাংগং হ্রদ থেকে সেনা পিছনোর পরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বাকি সংঘর্ষবিন্দু থেকেও বেজিং যাতে দ্রুত সেনা হটায়— তা নিয়ে গত তিন মাস ধরে চড়া সুরে মন্তব্য করে আসছে বিদেশ মন্ত্রক। অতিমারিতে কিছুটা কোণঠাসা বেজিংয়ের উপরে যতটা সম্ভব চাপ তৈরি করে দর কষাকষির স্নায়ুযুদ্ধে এগিয়ে থাকতে চাইছে নয়াদিল্লি। কিন্তু তাতে ফল তেমন মেলেনি এখনও।