India-China Clash

আজ ফের বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত-চিন সেনা

জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপি-বিজেপি সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী চেরিং দোরজে আজ অনুপ্রবেশ প্রশ্নে সরকারের মনোভাবের সমালোচনা করে বলেন, এখন গালওয়ান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শ্রীনগর ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২০ ০৩:৫৪
Share:

ছবি: রয়টার্স

সীমান্ত সমস্যা মেটাতে আগামিকাল ফের পূর্ব লাদাখের চুসুল-মলডো সীমানা বৈঠকে বসতে চলেছে ভারত-চিন। আগামিকাল সকাল সাড়ে দশটায় ওই বৈঠক হবে ভারতীয় অংশ চুসুলে। বর্তমানে প্যাংগং লেক ও গালওয়ান উপত্যকায় বেশ কয়েক কিলোমিটার ভিতরে ঘাঁটি গেড়ে বসে রয়েছে চিনা সেনা। আগামিকালের বৈঠকের পরেই তারা সরে যাবে এমনটাও নয়। দুপক্ষই সীমান্তে সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে বসে থেকেও যে নিয়মিত বৈঠকে বসে চলেছে সেটি ইতিবাচক লক্ষণ বলেই মনে করছেন কূটনীতিকরা।

Advertisement

জম্মু-কাশ্মীরে পিডিপি-বিজেপি সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী চেরিং দোরজে আজ অনুপ্রবেশ প্রশ্নে সরকারের মনোভাবের সমালোচনা করে বলেন, এখন গালওয়ান। এর পরে চিন এক দিন লাদাখকে তাদের এলাকা বলে দাবি করবে। তখন ভারতের কিছু করার থাকবে না।

চুসুলে হওয়া আগামিকালের বৈঠকে ভারতের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করবেন সেনার ১৪ নম্বর কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ। অন্য দিকে চিনের পক্ষে উপস্থিত থাকবেন দক্ষিণ জিংজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের চিফ মেজর জেনারেল লিউ লিন। গত ২২ তারিখে বৈঠকের পরে ফের আগামিকালের বৈঠক হতে চলেছে। সূত্রের মতে, দৌলত বেগ ওল্ডি সড়কের আশেপাশে যাতে চিনা সেনা কোনও ধরনের অনুপ্রবেশ না করে সেই বিষয়টিও আগামিকালের বৈঠকে নিশ্চিত করতে চাইবেন সেনা কর্তা। একই সঙ্গে প্যাংগং, গালওয়ান উপত্যকা, পেট্রোলিং পয়েন্ট ১৪-এর মতো অধিকৃত এলাকা থেকে চিনা সেনা সরানোর দাবি করা হবে।

Advertisement

কিন্তু হরেন্দ্রর পক্ষে সমস্যা হল দেশের প্রধানমন্ত্রীই মনে করেন ভারতীয় ভূখণ্ডে চিনা সেনার অনুপ্রবেশ ঘটেনি। প্রধানমন্ত্রীর ওই মন্তব্যের কারণে চিনের সেনা কর্তার সঙ্গে দর কষাকষির প্রশ্নে হরেন্দ্র যে দুর্বল অবস্থানে থাকবেন তা নিয়ে নিশ্চিত প্রাক্তন সেনাকর্তা ও কূটনীতিকেরা। বিশেষ করে যেখানে গালওয়ান উপত্যকা তাদের বলে দাবি করে বসে রয়েছে বেজিং। প্রধানমন্ত্রীর সুর নরম করার মনোভাব দেখে আজ প্রাক্তন সেনাপ্রধান তথা বর্তমান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভি কে সিংহ দাবি করেন, ১৫ জুন রাতে গালওয়ানের সংঘর্ষ ভুল বোঝাবুঝির কারণে হয়েছিল। তিনি বলেন, চিনা সেনা পয়েন্ট ১৪ থেকে সেনা সরাতে রাজি হয়ে গিয়েছিল। সেই কাজ কতটা হয়েছিল, তা দেখতে গিয়েছিলেন কর্নেল সন্তোষ বাবু ও তাঁর দল। সেই সময়ে চিন সেনার তাঁবুতে হঠাৎ আগুন লেগে যায়। তা নিয়েই ভুল বোঝাবুঝি হয় উভয় পক্ষে। সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে উভয় শিবির।

আরও পড়ুন: অভিযোগ সত্ত্বেও লক্ষ্য ঐকমত্য

প্রধানমন্ত্রীর মতোই প্রাক্তন সেনাপ্রধান অবশ্য চিনা সেনার অনুপ্রবেশ প্রশ্নে নীরব। প্রাক্তন বিদেশসচিব নিরুপমা মেনন রাও রীতিমতো তথ্যপ্রমাণ তুলে ধরে দেখিয়েছেন কী ভাবে চিন এ যাত্রায় অনুপ্রবেশ করেছে। ১৯৬০-৬১ সালে ভারত ও চিনের মধ্যে সীমান্ত সংক্রান্ত যে দস্তাবেজ রয়েছে তথ্য প্রমাণে তা তুলে ধরেন তিনি। যাতে চিনের সীমান্তের যে অক্ষাংশ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে উপগ্রহের সাহায্যে খোঁজ করলে দেখা যাচ্ছে তার অনেক ভিতরে অনুপ্রবেশ করে এসেছে চিনা সেনা। শুধু তাই নয় ভারতের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশ করে বাঙ্কার, সেনা ছাউনি, রসদ ও অস্ত্র গোলাবারুদ রাখার স্থায়ী কাঠামো তৈরি করেছে চিনা সেনা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় চোখে চোখ রেখে সরে যাওয়া ছাড়া ভারতকে বাড়তি এক পা সুবিধে দিতে নারাজ বেজিং। আর তা বুঝেই দোরজে বলেন, গালওয়ান যদি চলে যায় তাহলে তা ভারতের পক্ষে রণকৌশলগত বড় ধাক্কা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement