India-China

ঘুরিয়ে তিব্বত তাস, চিনকে বার্তা ভারতের

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা সত্ত্বেও মুখ খুলতে চায়নি বিদেশ মন্ত্রক

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

গুয়াহাটি ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২০ ০৪:৩৪
Share:

সাক্ষাৎ: বুম লা সীমান্তে সেনা কর্তাদের সঙ্গে পেমা খান্ডু। ছবি: টুইটার

লাদাখে অশান্তির মধ্যে চিনকে কিছুটা চাপে ফেলে দিল অরুণাচলের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খান্ডুর মন্তব্য। সীমান্তে ভারতীয় সেনাদের সঙ্গে ছবি পোস্ট করে টুইটে পেমা আজ উল্লেখ করেন, “বুম লা হল ভারত ও তিব্বতের সীমান্ত। সেখানে ভারতীয় সেনার উদ্দীপনা (যোশ) তুঙ্গে রয়েছে। সীমান্ত সুরক্ষিত হাতেই আছে।” কার্যত তিনি মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন, ভারতের সঙ্গে চিন নয়, সীমান্ত রয়েছে তিব্বতের। যাদের সঙ্গে ভারতের বহু শতকের হৃদ্যতা। চিন তিব্বতের দখলদার মাত্র।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা সত্ত্বেও মুখ খুলতে চায়নি বিদেশ মন্ত্রক। তবে, রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া বিজেপি-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর এমনটা বলা সম্ভব নয়। অন্তত বর্তমান পরিস্থিতিতে। সরাসরি না-বলে উত্তর পূর্বের এই রাজ্যকে দিয়ে কেন্দ্রই তিব্বত তাস খেলেছে। চিন-বিরোধী বার্তা দিতে চেয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া তথা বিশ্বের কাছে। মনে করা হচ্ছে, ঠিক এই উদ্দেশ্যেই পেমা গত কাল ভারত-চিন যুদ্ধে প্রাণ দেওয়া, পরমবীর চক্র প্রাপ্ত সুবেদার যোগীন্দ্র সিংহের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানান। তাওয়াং থেকে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় বুম লা সীমান্তে গিয়ে জওয়ানদের সঙ্গে ভলিবলও খেলেন। আজ যার ছবি আপলোড করে তিনি তিব্বত-মন্তব্যটি করেছেন।

আরও পড়ুন: গালওয়ানে পাকা ঘাঁটি গড়েছে চিন, ধরা পড়ল উপগ্রহচিত্রে

Advertisement

আদতে তাওয়াংয়ে নিয়ন্ত্রণ রেখার দু’দিকেই তিব্বতি মন পা জনজাতির বাস। তাই তাঁদের ভাষা ও সংস্কৃতি এক। পেমা খান্ডুর বাবা দোর্জি খান্ডু কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। খান্ডুরা তাওয়াংয়ের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী মন পা, ভূমিপুত্র। তাই তাঁদের সঙ্গে ঐতিহাসিক ভাবেই তিব্বতের যোগ নিবিড়। চিনের তিব্বত দখলের পরে এই তাওয়াং হয়েই পালিয়ে ভারতে ঢোকেন দলাই লামা। দোর্জি খান্ডু ও পেমা দু’জনেই চিনের চোখ রাঙানির তোয়াক্কা না-করে দলাই লামাকে দিনের পর দিন তাওয়াং-বমডিলায় এনে ধর্মসভা করেছেন। তাওয়াংয়ে দলাইয়ের মিনি সচিবালয়ও তৈরি করেছেন। আবার মেচুকা সেক্টরেও ও-পারে তিব্বতি মেম্বা জনজাতির বাস, এ-পারেও তাই। অরুণাচলের মানুষ ও সরকার তাই সচেতন ভাবেই যে কোনও আলোচনায় ভারত-চিন সীমান্ত নয়, অরুণাচল-তিব্বত সীমান্ত বলে উল্লেখ করে। এখানকার মানুষ মনেপ্রাণে চিন-বিরোধী। প্রতি ভোটে তা প্রচারের অস্ত্র করে সব দল। অবশ্য এখানকার জুতো-জামা-ছাতা-তাঁবু-বাতি— সবই ‘মেড ইন চায়না’। পিপিএফএ সংগঠনের দাবি, অরুণাচল হোক বা লাদাখ, ভারতের সঙ্গে চিনের কোনও সীমান্ত নেই।

আরও পড়ুন: দিল্লিকে রুখতেই গালওয়ান-ছক

প্রাচীনকাল থেকে ভারত ও তিব্বতের সৌহার্দ্যপূর্ণ মেলবন্ধনে বাদ সেধেছে আগ্রাসী চিন। তারা সোনম ওয়াংচুকের ডাকে সাড়া দিয়ে সব চিনা দ্রব্য, অ্যাপ, সোশ্যাল মিডিয়া বর্জনের দাবি তুলেছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement