India-Canada Relation

জয়শঙ্করের বার্তা দেখতে দেওয়া হচ্ছে না কানাডায়! ‘বাক্‌স্বাধীনতার নাম করে ভণ্ডামি’, নিন্দায় বিদেশ মন্ত্রক

নভেম্বরের শুরুতে ব্রাম্পটনে এক মন্দিরের সামনে হামলা চলেছিল। ওই মন্দিরের বাইরে ভারতীয় উপদূতাবাসের একটি অস্থায়ী শিবির ছিল। সেখানেও হামলা চলেছিল বলে অভিযোগ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৫০
Share:

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। —ফাইল চিত্র।

বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের অস্ট্রেলিয়া থেকে সম্প্রচারিত হওয়া একটি বার্তা কানাডায় ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তা নিয়ে কানাডার সরকারের সমালোচনায় বিদেশ মন্ত্রক। বাক্‌স্বাধীনতার কথা বলে কানাডায় ভণ্ডামি চলছে বলে সমালোচনায় বিঁধলেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।

Advertisement

সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সফরে গিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। বৃহস্পতিবারই ছিল তাঁর সফরের শেষ দিন। অস্ট্রেলিয়া ছাড়ার আগে ক্যানবেরায় এক সাংবাদিক বৈঠকে কানাডায় ভারত-বিরোধী মনোভাবকে প্রশ্রয় দেওয়া নিয়ে সরব হন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী পেনি ওয়াংও ছিলেন ওই যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে। অভিযোগ, সেই সাংবাদিক বৈঠকের ক্লিপটি কানাডায় ‘ব্লক’ করে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার তা কানাডা সরকারের সমালোচনা করেছেন বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। সেটি কানাডার দর্শকেরা দেখতে পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন রণধীর।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বলেন, “আমরা অবাক হয়ে যাচ্ছি। এ সব করে বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ে কানা়ডার ভণ্ডামি আবারও প্রকাশ পাচ্ছে।” উল্লেখ্য, ক্যানবেরা থেকে সাংবাদিক বৈঠকে মূলত কানাডার সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক শীতল সম্পর্কের কথাই উঠে এসেছিল জয়শংঙ্করের গলায়। তিনি জানিয়েছিলেন, কোনও প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ তুলছে কানাডা। সে দেশে ভারতীয় কূটনীতিকদের গতিবিধির উপর নজর রাখা হচ্ছে বলেও অভিযোগ জয়শঙ্করের। তাঁর মতে, এটি কোনও অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না।

Advertisement

এরই মধ্যে বৃহস্পতিবার নিরাপত্তাজনিত কারণে বেশ কিছু অস্থায়ী শিবির বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টরোন্টোয় ভারতীয় উপদূতাবাস। টরোন্টোয় বিভিন্ন জায়গায় ভারতীয় উপদূতাবাসের তরফে অস্থায়ী শিবির চালু করা হয়েছিল। কানাডায় বসবাসকারী ভারতীয়দের সুবিধা-অসুবিধার জন্যই এই শিবিরগুলি খোলা হয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তাজনিত কারণে বেশ কিছু শিবির বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। টরোন্টোয় ভারতীয় উপদূতাবাসের তরফে সমাজমাধ্যমে এ কথা জানানো হয়েছে। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে যে স্থানীয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা না পাওয়ার কারণেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

কানাডার সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক বর্তমানে বেশ টলমল। খলিস্তানিপন্থী নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জরের হত্যার পর থেকেই কানাডা এবং ভারতের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন ট্রুডো। এই আবহেই সম্প্রতি কানাডার ব্রাম্পটনে একটি মন্দিরের সামনে হামলা চলেছিল। ওই ঘটনাতেও অভিযোগ উঠেছিল খলিস্তানপন্থীদের বিরুদ্ধে। হামলার নিন্দা জানিয়েছিল ভারত। কানাডার প্রশাসনকে বার্তা দেওয়া হয়েছিল অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের জন্য।

ব্রাম্পটনের ওই মন্দিরের বাইরেও ভারতীয় উপদূতাবাসের একটি শিবির খোলা হয়েছিল। অভিযোগ, সেখানেও হামলা চালিয়েছিলেন খলিস্তানপন্থীরা। এই আবহের মধ্যেই টরোন্টো উপদূতাবাস বেশ কিছু জায়গায় অস্থায়ী শিবির আপাতত বন্ধ করে দিল। প্রসঙ্গত, অস্ট্রেলিয়া সফরকালেই বিদেশমন্ত্রী সমাজমাধ্যমে লিখেছিলেন, “কানাডায় হিন্দু মন্দিরে হামলার ঘটনা গভীর উদ্বেগজনক।” তিনি আরও জানিয়েছিলেন, কানাডায় যে ভাবে ভারতীয় কূটনীতিকদের উপরে নজরদারি করা হয়েছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। জয়শঙ্করের মতে, তথ্য ও প্রমাণ ছাড়াই অভিযোগ করার নকশা তৈরি করেছে কানাডা। কানাডায় চরমপন্থী শক্তিকে রাজনৈতিক পরিসর দেওয়া হচ্ছে বলেও মনে করছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement