দুই দেশই একত্রে উদ্বেগ প্রকাশ করল। ফাইল চিত্র।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির ধাক্কায় মূল্যবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জ এক বিন্দুতে এনে ফেলল নরেন্দ্র মোদী এবং জো বাইডেনের সরকারকে। ভারত ও আমেরিকা, দুই দেশেই প্রশাসনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে মূল্যবৃদ্ধি। আজ দুই দেশই একত্রে এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করল।
আজ মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ভারত-আমেরিকা ব্যবসা ও লগ্নির সুযোগ নিয়ে আলোচনায় বলেছেন, ভারতে মূল্যবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জের প্রধান উৎস আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি। মূলত অশোধিত তেলের দামের ফলেই দেশে মূল্যবৃদ্ধিতে চাপ পড়ছে। ভারতকে তার প্রয়োজনের ৮৫ শতাংশ তেলই আমদানি করতে হয়। একই সুরে নির্মলার পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকার রাজস্ব সচিব জ্যানেট ইয়েলেন জানিয়েছেন, চড়া মূল্যবৃদ্ধির আঁচ উন্নয়নশীল দেশগুলির সঙ্গে উন্নত দেশগুলিকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে।
এই মূল্যবৃদ্ধির জন্য অনেকটাই দায়ী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। তার ফলে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। যে সব উন্নয়নশীল দেশ বিপুল দেনা ও চড়া সুদের হারের সমস্যায় ভুগছে, এই জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের চড়া দামের ঠেলায় তাদের ঋণের বোঝা বিপজ্জনক জায়গায় চলে যাচ্ছে। ইয়েলেন বলেন, “আমার মনে হয়, আমাদের কিছু বিষয়ে ভবিষ্যতে মোকাবিলা করতে হবে।”
আর দু’দিন পরেই ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পার্শ্ববৈঠকের কথা। তার আগে আজ দু’দেশের পক্ষ থেকেই বাণিজ্য, অর্থনীতির মতো বিষয়গুলি নিয়ে ইতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। ভারত ও আমেরিকার মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব সংক্রান্ত নবম বৈঠকে মুখোমুখি হয়েছেন নির্মলা এবং জ্যানেট। অর্থনীতি এবং বাণিজ্য ক্ষেত্রে আশার সুর শোনা গিয়েছে দুই কর্ত্রীর কথায়।
এ দেশের শিল্পপতিরা এখনও নতুন লগ্নিতে উৎসাহ দেখাচ্ছেন না বলে মোদী সরকার আমেরিকার মতো দেশগুলি থেকে বিদেশি লগ্নি টানতে চাইছে। সীতারামন আজ আমেরিকার লগ্নির আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, শ্রমিকদের খরচ অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে কম। যৌথ প্রকল্পের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। গত কয়েক বছর ধরেই দুই দেশ মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে।
অদূর ভবিষ্যতে এই ক্ষেত্রে পারস্পরিক শর্ত মেনে চুক্তি সইয়ের আশু সম্ভাবনা দেখা না গেলেও আজ ভারত সফররত আমেরিকার রাজস্ব সচিব জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, “ভারত এবং আমেরিকা সহজাত ভাবেই একে অন্যের অংশীদার। তারা বিশ্বের সামনে গণতন্ত্রের নিদর্শন তুলে ধরতে পারে।”