এলাহাবাদে একটি ব্যাঙ্কের সামনে মঙ্গলবার সকালের চিত্র। ছবি: রয়টার্স।
কালো টাকা সাদা করার চেষ্টায় রাশ টানতে আরও এক অভিনব পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় সরকারের। ব্যাঙ্কে গিয়ে নোট বদল করলেই আঙুলে এ বার কালির দাগ। ভোটের সময় যে রকম অমোচনীয় কালির দাগ দেওয়া হয় আঙুলে, ব্যাঙ্কের কাউন্টার থেকেও গ্রাহকের আঙুলে এ বার সে রকম কালির দাগ দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। আজ অর্থাৎ মঙ্গলবার থেকেই দেশের বড় শহরগুলিতে এই ব্যবস্থা চালু হয়ে যাচ্ছে। আগামী কয়েক দিনে চালু হতে চলেছে গোটা দেশেই।
কেন্দ্রীয় অর্থ সচিব শক্তিকান্ত দাস এ দিন সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ব্যাঙ্কের কাউন্টার থেকে পুরনো নোট বদলে দেওয়ার যে ব্যবস্থা করা হয়েছে, তাকে কাজে লাগিয়ে অনেকে কালো টাকা সাদা করার চেষ্টায় নেমে পড়েছেন। একই ব্যক্তিকে বার বার ব্যাঙ্কের কাউন্টারে গিয়ে টাকা বদলাতে দেখা যাচ্ছে। একই ব্যক্তি যাতে বার বার টাকা বদলাতে না পারেন এবং সব নাগরিকই যাতে তাঁদের প্রাপ্য সময় মতো পেতে পারেন, তার জন্য আজ থেকে ব্যাঙ্কে টাকা বদলালেই আঙুলে কালির দাগ দেওয়া শুরু হচ্ছে।
প্রতিদিন মাথাপিছু সর্বোচ্চ ৪৫০০ টাকার পুরনো নোট বদলে দিচ্ছে ব্যাঙ্কগুলি। কালো টাকার কারবারিরা নাকি সেই ব্যবস্থার সুযোগ নিয়ে টাকা বদলানোর লোক নিয়োগ করেছেন। এঁরা রোজ একাধিক ব্যাঙ্কের কাউন্টারে লাইন দিচ্ছেন এবং একাধিক বার টাকা বদলাচ্ছেন। এই ভাবে দ্রুত হিসাব বহির্ভূত পুরনো টাকা নতুন করে নেওয়ার চেষ্টা শুরু হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রক জানতে পেরেছে। তা রুখতেই এক বার টাকা বদলের সঙ্গে সঙ্গে আঙুলে কালির দাগ পড়বে। ফলে কারও পক্ষেই একাধিক বার ব্যাঙ্ক থেকে টাকা বদলানো সম্ভব হবে না, কারণ ভোটের কালির মতো এই কালির দাগও সহজে মোছা যাবে না।
আরও পড়ুন: একশো দিনের কাজে গচ্চা ৩৪৩ কোটি
আরও একটি পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করেছেন অর্থ সচিব। তিনি জানিয়েছেন, জনধন যোজনার আওতায় যে সব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলি খোলা হয়েছে, সেই অ্যাকাউন্টগুলির উপরেও নজরদারি শুরু করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি যোজনার আওতায় খোলা এই সব অ্যাকাউন্টে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা রাখা যায়। এই অ্যাকাউন্ট যাঁদের রয়েছে, তাঁদের ডেবিট কার্ডও দেওয়া হয়েছে, যাতে ওভারড্রাফ্টের সুবিধা রয়েছে। ১ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনাজনিত বিমার সুবিধাও রয়েছে। যাঁদের এই জনধন অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁদের চাপ দিয়ে বা প্রলোভন দেখিয়ে কালো টাকার কারবারিরা ওই সব অ্যাকাউন্টে টাকা জমা করাচ্ছেন এবং পরে তা তুলে নিচ্ছেন বলে খবর। এই কারচুপি রুখতেই জনধন অ্যাকাউন্টগুলির লেনদেনের উপর নজরদারি শুরু হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রক জানিয়েছে। তবে এতে সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই বলেও অর্থ সচিব আশ্বাস দিয়েছেন।