বিতর্কে মন্ত্রী

বর্ষবরণের রাতে অবাধ হেনস্থা বেঙ্গালুরুতে

বর্ষবরণের রাত পরিণত হল বিভীষিকার রাতে। বেলাগাম মত্ততা আর যৌন হেনস্থার শিকার হলেন বেঙ্গালুরুর তরুণী ও মহিলারা। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ পুলিশ। অথচ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা নির্লিপ্ত ভাবে বলছেন, ‘‘বছর শেষের রাতে আর বড়দিনে এমন হয়েই থাকে। মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট পুলিশ ছিল।’’

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৬
Share:

বর্ষবরণের রাত পরিণত হল বিভীষিকার রাতে। বেলাগাম মত্ততা আর যৌন হেনস্থার শিকার হলেন বেঙ্গালুরুর তরুণী ও মহিলারা। পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ পুলিশ। অথচ রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বরা নির্লিপ্ত ভাবে বলছেন, ‘‘বছর শেষের রাতে আর বড়দিনে এমন হয়েই থাকে। মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য যথেষ্ট পুলিশ ছিল।’’

Advertisement

ছিল তো বটেই। ৩১ ডিসেম্বরের রাতে গোটা শহর জুড়ে মোতায়েন ছিল প্রায় ১৫০০ পুলিশ। কিন্তু বেঙ্গালুরুর প্রাণকেন্দ্র এমজি রোড ও ব্রিগেড রোডে জনতার ঢলের সামনে বিশেষ কিছুই করতে পারেননি তাঁরা। অথচ পরমেশ্বরা-র বক্তব্য হল, ‘‘পশ্চিমী ভাবধারা নকল করতে গিয়ে এ সব ঘটছে। আমি তো ১০ হাজার পুলিশের বন্দোবস্ত করতে পারি না!’’ জাতীয় মহিলা কমিশন এবং রাজ্য মহিলা কমিশন মন্ত্রীর এ হেন
মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ করেছে। তাঁর পদত্যাগ চেয়েছে।

শহরবাসীও যথেষ্ট ক্ষুব্ধ। কারণ সেদিন প্রত্যক্ষদর্শীদের মোবাইলে একের পর এক ছবি আর ভিডিও উঠেছে। স্পষ্ট দেখা গিয়েছে উচ্ছৃঙ্খল হুল্লোড় আর মেয়েদের সঙ্গে অভব্যতার টুকরো টুকরো মুহূর্ত। এক-আধটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, লাগাতার। যদিও পুলিশের খাতায় তার কোনও অস্তিত্ব নেই। মেয়েরা যদি অভিযোগ নাও করেন, চোখের সামনে সব দেখে পুলিশ নিষ্ক্রিয় কেন? জবাব নেই। এক প্রত্যক্ষদর্শীর বয়ান অনুযায়ী, ‘‘আমি নিজে গিয়ে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশকে খবর দিই। বলি, দু’জন মহিলাকে হেনস্থা করা হচ্ছে। কিছু করুন।’’ পুলিশ এসে দুষ্কৃতীদের ওখান থেকে হটিয়ে দেয়। তবে কিছুক্ষণ পরে তারা আবার সেই একই জায়গায় ফিরে আসে। একই আচরণ করতে থাকে।

Advertisement

রাত ১১টার পর থেকেই সেদিন মোটরবাইক, গাড়ি করে জনতার ভিড় জমছিল রাস্তার মোড়ে মোড়ে। অভিযোগ, সেই ভিড়ের মধ্যেই মহিলাদের উদ্দেশ করে অশালীন মন্তব্য, জোর করে জাপটে ধরার চেষ্টা, আপত্তিকর স্পর্শ, শারীরিক হেনস্থা চলতে থাকে। আতঙ্কিত মহিলারা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে স্টিলেটো খুলে খালি পায়ে দৌড়তে থাকেন। অনেকে ওই
ভিড়ের মধ্যে কান্না-কাটি শুরু করে দেন। পুরুষ-সঙ্গীরাও কী করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। বেঙ্গালুরুর একটি দৈনিকের চিত্রসাংবাদিক একাধিক ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। তিনি বলেন,
মদ্যপ উচ্ছৃঙ্খল পুরুষের সংখ্যা এতটাই বেশি ছিল যে, পুলিশ তেমন বাড়াবাড়ি না হলে এগোচ্ছিল না।

পুলিশ কী বলছে? ডেপুটি কমিশনার (কমান্ড সেন্টার) নাগেন্দ্র কুমারের কথায়, ‘‘শনিবার রাত দশটা থেকে ভোর-রাত পর্যন্ত অন্তত ৪৫০ টা ফোন এসেছে কন্ট্রোল রুমে। তবে তার মধ্যে একটিও যৌন হেনস্থার অভিযোগ নয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement