সব দলের সমর্থনে লোকসভায় পাশ হয়ে গেল গণবিধ্বংসী অস্ত্র ও তার বিতরণ ব্যবস্থা সংশোধনী বিল। ফাইল চিত্র।
সব দলের সমর্থনে আজ লোকসভায় পাশ হয়ে গেল গণবিধ্বংসী অস্ত্র ও তার বিতরণ ব্যবস্থা সংশোধনী বিলটি। গত কাল বিলটি লোকসভায় পেশ করা হয়েছিল। এর ফলে আগামী দিনে গণবিধ্বংসী অস্ত্র তৈরি ও সন্ত্রাসবাদে পুঁজি জোগানোর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তির আর্থিক লেনদেন বন্ধ করা ছাড়াও অভিযুক্তের সম্পত্তি ক্রোক করার অধিকার পাবে কেন্দ্র। আজ বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘এই বিল পাশ হওয়ায় এক দিকে যেমন ভারতের সুরক্ষার দিকটি শক্তিশালী হল, তেমনই আন্তর্জাতিক বিশ্বে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ব্যবহারের বিরুদ্ধে দিল্লির অবস্থানও মজবুত হল।’’
২০০৫ সালে গণবিধ্বংসী অস্ত্র সংক্রান্ত যে বিলটি ইউপিএ সরকার পাশ করেছিল, তাতে ওই ধাঁচের অস্ত্র নির্মাণে আর্থিক মদত জোগানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে সরকারের কাছে সরাসরি কোনও রাস্তা ছিল না। আজ আনা সংশোধনীতে বলা হয়েছে, যারা ওই ধরনের বেআইনি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত থাকবে, সরকারের কাছে তাদের সম্পত্তি আটক, আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দেওয়া ছাড়াও সম্পত্তি ক্রোক করার অধিকার থাকবে। এমনকি অভিযুক্তের যৌথ বা বেনামি সম্পত্তি আটক ও ক্রোক করার অধিকারও থাকবে সরকারের। আজ জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি শাখা ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএ) সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদতদাতাদের উপরেই নজরদারি করে থাকে। ভারতের প্রতিবেশী একটি দেশ (পাকিস্তান) সন্ত্রাস রোখার প্রশ্নে দায়বদ্ধতা দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় এফএটিএ-র ধূসর তালিকায় রয়েছে।’’
বর্তমানে যে ভাবে ড্রোনের ব্যবহার বেড়েছে, তাতে ওই যন্ত্রের মাধ্যমে গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সাংসদ উত্তম রেড্ডি। লোকসভার আলোচনায় যোগ দিয়ে প্রাক্তন ওই বিমানচালকের দাবি, ‘‘সিরিয়া-রাশিয়া গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হত্যালীলা চালানোর প্রশ্নে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে গণবিধ্বংসী অস্ত্রগুলি। এমনকি ড্রোনের মাধ্যমেও গণবিধ্বংসী অস্ত্র ব্যবহার করা সম্ভব। প্রতিবেশী দেশগুলিতে অস্থিরতা ভারতের জন্য বেশ দুশ্চিন্তার।’’ বিজেপি সাংসদ রাজ্যবর্ধন রাঠৌর বলেন, ‘‘গণবিধ্বংসী অস্ত্র জৈব, তেজস্ক্রিয় বা রাসায়নিক হয়ে থাকে। যা বানানো খুব একটা কঠিন নয়। এ ধরনের অস্ত্র তৈরিতে আর্থিক মদত দেওয়া রুখতেই সংশোধনী আনা হয়েছে।’’ কংগ্রেসের সাংসদ অধীর চৌধুরী ধাপে ধাপে বিশ্ব থেকে পারমাণবিক ও গণবিধ্বংসী অস্ত্র নির্মূল করার উপরে জোর দেন। জয়শঙ্কর বলেন, ‘‘বিলের ওই সংশোধনী রাষ্ট্রপুঞ্জের সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষপকেও শক্তিশালী করবে।’’